নিজস্ব প্রতিনিধি – নির্বাচনী প্রচারে বেড়িয়ে জনসাধারণের মন মাতালেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী তথা বাংলা চলচিত্রের তারকা অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেব৷ নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্নে বারাসাত কেন্দ্রের তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সমর্থনে বৃহস্পতিবার গুমায় জোড়া জনসভা করেন দেব৷ প্রচারের মাধ্যমেই কয়েক হাজার গ্রামের মানুষদের মন জয় করলেন অভিনেতা৷ রুপোলি পর্দার নায়ককে কাছ থেকে দেখতে এদিন আগ্রহী হয়ে পড়েন দেবের অসংখ্য ‘ফ্যান গার্ল’৷ কাকলির সমর্থনে এদিন গুমা স্টেশন সংলগ্ন মাঠ এবং মাগুরুখালী গ্রামে নির্বাচনী সভায় আসেন তৃণমূলের স্টার ক্যাম্পেনার দেব৷ এদিন দুপুর দুটোয় স্টেশন সংলগ্ন মাঠের পাশেই অস্থায়ী হেলিপ্যাডে এসে নামেন দেব৷ রূপালী পর্দার এই নায়ককে দেখতে হেলিপ্যাডের সামনে তখন নামে জনসমুদ্র৷ এদিনের উভয় জনসভার ভিড়ের পাশাপাশি দেবের ‘লুক’ টিও ছিল নজরকাড়া৷ জিন্স এবং হলুদ টি-শার্ট পরে দেব মঞ্চে উঠে হাত নাড়াতেই বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন গ্রামের স্কুল, কলেজ পড়ুয়া তরুণী থেকে গৃহবধু সহ মাঝবয়সী মহিলারাও৷ কার্যত ভিড় সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা হয় পুলিশের৷
দেব মঞ্চে উপস্থিত হওয়া মাত্রই কেউ বা অধীর আগ্রহে স্বপ্নের নায়ককে প্রথমবার সামনে থেকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, আবার কেউবা ফুল দিয়ে নিজ ভালোবাসা জ্ঞাপন করতে চাইছিলেন৷ আবার কেউবা চেয়েছিলেন একটি অটোগ্রাফ নিয়ে সেটি সারাজীবনের মতো আগলে রাখতে৷ তবে সকলের মন রেখেছেন অভিনেতা৷ একাধিকবার হাত মিলিয়েছেন ফ্যানদের সঙ্গে৷ মোবাইল ক্যামেরায় নায়ককে বন্দী করতে মঞ্চের সামনে তখন হুড়োহুডি় অবস্থা, সেটিও হাসি মুখেই সামাল দেন দেব৷ ভিড় এবং নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে স্বপ্নের নায়ক দেবকে এদিন গোলাপ ফুল দেন কলেজ পড়ুয়া তরুণী সোমা বিশ্বাস৷ এরপর গৃহবধু অনামিকা দাসও হাতে রজনীগন্ধার মালা নিয়ে একেবারে বেপরোয়া ভাবে উঠে পড়েন মঞ্চে, দেবের গলায় পরিয়েও দিলেন সেই মালা৷ পঞ্চাশোর্ধ শেফালী ঘোষ শুধু একবার দেবের সঙ্গে হাত মেলাতে মঞ্চের সামনে দাডি়য়ে আকুলি বিকুলি করেন৷ যদিও দেবের গলায় রজনীগন্ধার মালাটি ছিল না বেশিক্ষন৷ ফ্যানেদের আবেগ দেখে গলায় থাকা রজনীগন্ধার মালাটাও ছুঁডে় দিয়েছিলেন দর্শকদের মাঝে৷ সবমিলিয়ে ‘দেব-মুখী’ পরিস্থিতি তৈরী হয় কাকলি-গড়ে৷
এদিন দেব বলেন, “আমার কাছে নির্বাচন মানে কোন দল এবং কোন প্রার্থীকে বিশ্বাস করবেন, এমনটা নয়৷ আমি মনে করি কোন দল আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে জেতার পর সেটা রক্ষা করেছে, সেটা বিচার করাই নির্বাচন৷ ” এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করা এবং ভাতা বৃদ্ধি করার কথাও তুলে ধরেন মহিলাদের সামনে৷ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে বলেও এদিন বিজেপিকে নিশানা করেছেন দেব৷ পাশাপাশি কাকলিকে জেতানোরও আর্জি জানান দেব৷ এরপরই কাকলি বলেন, “বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই হবে উন্নয়নের নিরিখে৷ এটি তৃণমূল-বিজেপির লড়াই নয়৷ এই লড়াই ব্যবধান বৃদ্ধির লড়াই৷ যারা ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চায় তাঁদের যোগ্য জবাব দেওয়ার লড়াই৷ যাঁরা সুদীর্ঘ ৩৪ বছর রাজ্যের উন্নয়নের চাকা স্তব্ধ রেখেছিলো তাঁদের নিশ্চিহ্ন করার লড়াই এই চব্বিশের নির্বাচন৷ ” অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “কাকলি ঘোষ দস্তিদার সুদীর্ঘ ১৫ বছর এই কেন্দ্রের দায়িত্ব সামলেছেন৷ তাঁর চেয়ে ভালো এই কেন্দ্র এবং এখানের মানুষকে আর কেউ চেনেন না৷ কাকলির হাতেই বারাসাত লোকসভা কেন্দ্র নিরাপদ৷ “