আরজিকর কান্ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগ,ডাক পড়লো শতাধিক

সোশ্যাল মিডিয়ায় আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে প্রায় এক হাজার নাগরিককে চিহ্নিত করেছে কলকাতা পুলিশ। রবিবার লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে এঁদেরকে নোটিস পাঠানোর কাজও শুরু করা হয়েছে লালবাজারের তরফে। আরজি কর-কাণ্ডে ভুল তথ্য সরবরাহের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ শাসক দলের সাংসদকেও রেয়াত করেনি।রবিবারই লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়কে। তার আগে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে নেটাগরিকদের কয়েকজনকেও। এবার আরও হাজার খানেক নাগরিককে চিহ্নিত করার কথা জানা গেল কলকাতা পুলিশ সূত্রে।

সূত্রের খবর, তাঁদের ছড়ানো তথ্যের বিশদ জেনে তাঁদেরকে ডেকে পাঠানোর তোরজোড়ও শুরু হয়েছে লালবাজারে।গত সপ্তাহের শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকেই ঘটনাটি নিয়ে সমাজমাধ্যমে ‘সাক্ষ্য-প্রমাণহীন তথ্য’ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। কখনও নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, তাঁর শরীরে পাওয়া বীর্যের পরিমাণ নিয়ে তথ্য ভাসিয়ে দেওয়া হয় সমাজমাধ্যমে। কখনও বা কারা সম্ভাব্য অভিযুক্ত, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে লিখতে শুরু করেন নাগরিকদের একাংশ।

এমনও লেখা হয় যে, এই ঘটনায় এক জুনিয়র চিকিৎসক জড়িত। তিনি তৃণমূলের এক প্রাক্তন মন্ত্রীর পুত্র। ওই মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পদবির মিল থাকায় এবং ওই প্রাক্তন মন্ত্রীর পুত্র সত্যিই একজন চিকিৎসক হওয়ায় ওই তথ্য ঘিরে বিভ্রান্তিও তৈরি হয়। আতঙ্কিত তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে জানান তাঁর পুত্র আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক নন। তিনি পাঁশকুড়ায় কর্মরত। পুলিশ কমিশনারও এ নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে আসরে নামেন। শেষে ওই জুনিয়র চিকিৎসক জানান, তাঁর সঙ্গে রাজ্যের ওই প্রাক্তন মন্ত্রীর কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি তাঁকে চেনেনই না।কলকাতা পুলিশ সেই সময়েই জানিয়েছিল, আরজি করের ঘটনা নিয়ে প্রমাণহীন বহু তথ্য বা গুজব সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে, যা শুধু বিপজ্জনকই নয়, অনেকের ক্ষেত্রে ক্ষতিকরও হতে পারে।


গুজব ছড়ানো নেট নাগরিকদের সতর্ক করে কলকাতা পুলিশ এ-ও জানিয়েছিল যে, তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করতে পারে। সেই সতর্কবার্তা যে নেহাত কথার কথা নয়, তার প্রমাণ গত কয়েক দিনেই মিলতে শুরু করে। সমাজমাধ্যমের পোস্ট দেখে লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয় প্রায় ৫০ জনকে। জানতে চাওয়া হয়, তাঁরা যে সমস্ত তথ্য পরিবেশন করেছেন, তার সমর্থনে তাঁদের কাছে কী তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। এর পরে অনেককেই সমাজমাধ্যমে লিখতে দেখা যায়, আরজি করের ঘটনা নিয়ে তাঁরা যা পোস্ট করেছিলেন, তা না জেনেই করেছিলেন। আর প্রমাণহীন ওই তথ্য সরবরাহের জন্য তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থী। এই আবহে আরও প্রায় হাজার জনকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানাল লালবাজার।