ডেবরায় হেফাজতে থাকা বিজেপি কর্মীর মৃত্যু ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ তলব হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে উঠে জেল হেফাজতে থাকা এক ব্যক্তির রহস্য মৃত্যু সংক্রান্ত মামলা। জেল হেফাজতে থাকাকালীন বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ধৃত ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় থেকে আদালত হয়ে জেলে পাঠানোর সময় এবং হাসপাতালে ভর্তির আগে পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দেওযার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ডেবরা থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর ও প্রেসিডেন্সি জেলের সিসিটিভি ফুটেজও সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিম্ন আদালতের বিচারকের থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের থেকেও রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, এসএসকেএম হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে একটি টিম গঠন করে মৃতের দেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে। গোটা ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সময়ে পরিবারের সদস্যদেরও থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার পুরুষোত্তম এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় বেরাকে গত ৪ জুন গ্রেফতার করা হয়েছিল। তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক সংঘর্ষের এক অভিযোগে পাকড়াও করা হয়েছিল তাঁকে। এরপর ৫ জুন তাঁকে নিম্ন আদালতে পেশ করা হলে, বিচারক তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাজ্যের তরফে এদিন হাইকোর্টে দাবি করা হয়, ‘জেলে পৌঁছনোর পর, জেলের গেট পার করার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয় বেরা। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে চিকিৎসার পর ফের তাঁকে পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর জেলে’। রাজ্যের দাবি, ‘সংশোধনাগারের চিকিৎসকরা সঞ্জয় বেরার শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে মেদিনীপুর হাসপাতালে ফেরত পাঠান। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেলে। গত ১১ জুন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালের বহির্বিভাগে। ১১-১৪ জুন সঞ্জয়কে প্রেসিডেন্সি জেলেই রাখা হয়েছিল। এরপর ১৪ জুন আবার অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে ফের নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে এবং ১৮ জুন হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের’।

এদিকে মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফে অভিযোগ, ‘সঞ্জয় বেরাকে জেল হেফাজতে পিটিয়ে মারা হয়েছে’। যদিও রাজ্যের তরফে দাবি করা হচ্ছে, ‘হাসপাতাল থেকে যে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই ব্যক্তি নেশায় আসক্ত ছিলেন। তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন’। আগামী ২৬ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।