মোল্লা জসিমউদ্দিন : চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আদালতের রোষের মুখে পড়লো রাজ্য সরকার৷ একটি মামলার অবকাশকালীন বেঞ্চের শুনানির সময় আদালতের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে৷ প্রায় ১২ বছর আগের একটি মামলায় দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য সম্মতি না দেওয়ায় রাজ্যের তুমুল সমালোচনা করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়৷ প্রায় ১২ বছর আগে লকআপের ভিতরে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে৷ কিন্ত্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপে জন্য সম্মতি দেয়নি রাজ্য সরকার৷ এরফলে ওই দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করা যায়নি৷ সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের তীব্র ভৎর্সনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার৷ এমন অবস্থায় দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য অবিলম্বে অনুমতি দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিল হাইকোর্ট৷ শুধু তাই নয় সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে আদালত৷ অবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় আগামী তিনদিনের মধ্যে (শুক্রবারের মধ্য) রাজ্য সরকারকে অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১২ সালে৷ হুগলির চুঁচুড়া থানার লকআপে অভিযুক্তকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল৷ অভিযোগ ছিল, ওই দুই পুলিশ অফিসার মারধর করেছিলেন এক অভিযুক্তকে৷ তবে অভিযোগের পরও ওই দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি রাজ্য সরকার৷ প্রথমে নিম্ন আদালত পরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়৷ এদিন হাইকোর্টের নির্দেশের ফলে দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করতে হবে৷ তবে এতদিন ধরে মামলাটি ফেলে রাখার জন্য রাজ্য সরকারের তুমুল সমালোচনা করেন বিচারপতি৷ জানা যাচ্ছে, যে পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের মধ্যে একজন বর্তমানে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে এবং অন্যজন বর্ধমানে কর্মরত রয়েছেন৷ এর আগে যখন দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তখন প্রথমে মামলা হয় নিম্ন আদালতে৷ তবে সেসময় হুগলি জেলা পুলিশ দুজনকেই ক্লিনচিট দিয়েছিলেন৷ এরফলে রাজ্য ওই দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আর আইনি পদক্ষেপে সম্মতি দেয়নি৷ কিন্ত্ত, এবার হাইকোর্ট আইনি পদক্ষেপের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিল৷ এই মামলায় আগামী তিনদিনের মধ্যে পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপে সম্মতি দেওয়ার নির্দেশ হয়েছে৷ উল্লেখ্য, ২০১২ সালে হুগলির চুঁচুড়ায় থানার লকআপের ভিতরে একটি উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছিল৷ সেই দুই পুলিশ আধিকারিকের (বর্তমানে একজন মুর্শিদাবাদের ডোমকলে কর্মরত, অপরজন বর্ধমানে কর্মরত) বিরুদ্ধে অভিযুক্তকে মারধরের অভিযোগ ওঠে৷ এরপর ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে৷ গত মঙ্গলবার ছিল সেই মামলার শুনানি৷ সেই শুনানি চলাকালীন স্কুল নিয়োগ দুর্নীতি মামলারও প্রসঙ্গ টানেন বিচারপতি৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য সরকার সিবিআই এবং ইডিকে সম্মতি না দেওয়ার উল্লেখ করা হয়৷ এরপরই বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় আগামী তিনদিনের মধ্যে ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সম্মতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ এখন দেখার আগামী শুক্রবারের মধ্যে রাজ্য সরকার কি অবস্থান নেয় এই মামলায়৷