কলকাতা, ৯ মে: অবশেষে প্রকাশ্যে এল রাজভবনের ভিডিও ফুটেজ। গত ২ মে খোদ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। হেয়ার স্ট্রিট থানায় দায়ের হয় এফআইআর। পুলিশের তরফে ঘটনার দিন রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয় রাজভবনের কাছে। সেই অভিযোগ ভুয়ো বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। লোকসভা ভোটের সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই অভিযোগ করা হয়েছে বলে রাজ্যপালের তরফে দাবি করা হয়। এরপরই রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, পুলিশের সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়ার এক্তিয়ার নেই। কারণ, রাজ্যপাল সাংবিধানিক রক্ষাকবচ পান। সেজন্য তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারে না পুলিশ।
‘সচ্ কা সামনে’ নামে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১ ঘন্টা ১৯ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয় তিন ধাপে। প্রথম ফুটেজের সময়কাল বিকেল ৫টা ৩১ মিনিট থেকে ৫টা ৪২ মিনিট। দ্বিতীয় ফুটেজের সময়কাল ৫টা ৩২ মিনিট থেকে সন্ধ্যে ৬টা ৩২ মিনিট। তৃতীয় ফুটেজটির সময়কাল ৬টা ৩২ মিনিট থেকে ৬টা ৪১ মিনিট। রাজভবনের প্রকাশিত ফুটেজে অভিযোগকারী ওই মহিলাকে দুইবার দেখা গেলেও রাজ্যপাল কিংবা রাজভবনের ভিতরের অংশ দেখা যায়নি।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ওই দিন যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার কথা ছিল, সেজন্য রাজভবন চত্বরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। ১ ঘন্টা ১৯ মিনিটের এই ফুটেজে দেখা যায়, ৫.৩২ নাগাদ পুলিশ আউট পোস্টে আসেন ওই মহিলা। তিনি সেখানে প্রায় ৮ মিনিট ছিলেন। এরপর ৫.৪০-এ আউট পোস্ট থেকে বেরিয়ে রাজভবনের ওসি-র রুমে যেতে দেখা যায়। সেখানে কথা বলেন পুলিশ ও মহিলা পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। ওই একই ক্যামেরায় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট নাগাদ কয়েক জন পুলিশের সঙ্গে আউটপোস্ট থেকে বেরিয়ে মহিলাকে পাশের ঘরে যেতে দেখা গিয়েছে। যত ক্ষণ ভিডিয়ো চলেছে, তিনি সেখান থেকে আর বেরোননি। অর্থাৎ, এর পরের ফুটেজ আর দেখানো হয়নি।
প্রসঙ্গত আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনবেন বলে আগাম জানান রাজ্যপাল। কিন্তু সেই সিসিটিভি ফুটেজ সাধারণ মানুষকে দেখানো হলেও পুলিশ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখাবে না বলে জানিয়ে দেয় রাজভবন। সেই মতো সাধারণ মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ফুটেজ দেখতে চেয়ে ফোন আসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে। এমনকি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফোন করা হয়। অনেকে এসে পৌঁছলেও দূরত্বের কারণে সব আবেদনকারী রাজভবনে হাজির হতে পারেননি। এদিন রাজভবন চত্বরে প্রায় ১০০ জনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখার ব্যবস্থা করা হলেও উপস্থিত হন ৭৫ জনের মতো। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি ছিলেন।