• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

জানুয়ারি থেকেই শুরু হতে পারে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ, দেব-পার্থর বৈঠকে মিলল সবুজ সংকেত

নিজস্ব প্রতিনিধি, ১২ জুন– যেমন কথা তেমন কাজ! কেন্দ্র-রাজ্য দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজের সূচনায় সবুজ সংকেত মিলেছে। মিটে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচন। ২৯টি আসন পেয়ে বঙ্গে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এবার শুধু প্রতিশ্রুতি পূরণের পালা। সেই মতো বুধবার দুপুরে সল্টলেকে জনসম্পদ ভবনে সেচ দফতরে বৈঠক করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক

নিজস্ব প্রতিনিধি, ১২ জুন– যেমন কথা তেমন কাজ! কেন্দ্র-রাজ্য দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজের সূচনায় সবুজ সংকেত মিলেছে। মিটে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচন। ২৯টি আসন পেয়ে বঙ্গে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এবার শুধু প্রতিশ্রুতি পূরণের পালা। সেই মতো বুধবার দুপুরে সল্টলেকে জনসম্পদ ভবনে সেচ দফতরে বৈঠক করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক এবং ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব। পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এই দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এদিন প্রায় এক ঘন্টা চলে এই বৈঠক। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর জানুয়ারি মাসের মধ্যেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান-এর কাজ শুরু হবে। বৈঠক শেষে এমনটাই জানিয়েছেন দেব।

কিভাবে সম্পন্ন হবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ? বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই বিষয়টিই স্পষ্ট করেন দেব। তিনি জানান, “যেটুকু বুঝলাম, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করতে হলে আমাদের ঘাটালের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। কিছু খাল কাটতে হবে। আবার কিছু খাল চওড়া করতে হবে। আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা ফিল্ডে থেকে আগে সব কিছু দেখে নেবেন। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, জেসিবি ঢোকার জায়গা নেই। সেই অঞ্চলের মানুষদের বোঝাতে হবে। কিছু জমিও লাগবে আমাদের। মূলত তিনটি ধাপে আমাদের কাজ সম্পন্ন হবে। পাম্পিং স্টেশনের জন্য দুটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজের প্ল্যান করতে ৪ মাস বা তার কিছুটা বেশি সময় লাগবে। তারপর টেন্ডার সম্পর্কিত কিছু কাজ রয়েছে। আশা করা যায়, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারী থেকে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। এটি আমাদের পাঁচ বছরের প্রজেক্ট। তবে পাঁচ বছর টাকে তিন বছরে কমিয়ে আনাও সম্ভব হবে। যদি ঘাটালের মানুষজন সহযোগিতা করেন।” এরপরই ঘাটালের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে দেব বলেন,”ঘাটালবাসীও প্রস্তুত হয়েছেন। তাঁরাও চান ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী হোক। প্রায় একশো বছরের পুরনো এই সমস্যা থেকে তাঁরাও মুক্তি পেতে চান। আর এবার আমাদের সরকারও তৈরি।”

রাজ্যের মন্ত্রী ও বারাকপুরের সদ্য জয়ী সাংসদ পার্থ ভৌমিক এপ্রসঙ্গে বলেন, “আমি আর সেচ দফতরের দায়িত্বে থাকব না। তার আগে আমাদের একটি বৈঠক করা হল। কিভাবে কি করা হবে সে বিষয়েই আলোচনা করা হল। কেন্দ্রে এ বিষয়ে বারবার আবেদনের পরও কোনও ইতিবাচক উত্তর মেলেনি। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাস থেকেই কাজ শুরু হবে।” এদিন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে দেব বলেন,”অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মানুষের সাথে যে ব্যবহার বিজেপি করেছে, তার ফল তাঁরা পেয়েছেন এই নির্বাচনে। সব দলেরই কমবেশি সমর্থক বাংলায় থাকেন। সবাই তৃণমূলের সমর্থক তা নয়। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আগামী পাঁচ বছর একটু উদার হতে এবং বকেয়া অর্থ ফিরিয়ে দিতে। আমি দোষারোপ করায় বিশ্বাসী নই। যেটা বাংলার মানুষের হকের টাকা, সেটি ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যেন একটু দেখেন।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে দেবকে পাশে নিয়েই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ঘাটালবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবেই। যত টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন, রাজ্য সরকার তা করবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অভিষেক এও বলেছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী না হওয়ায় দেব অভিমান করেই রাজনীতি থেকে সরে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁকে বুঝিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারই বাস্তবায়িত করবে এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। এরপরই পুনরায় রাজনীতিতে থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করে ঘাটাল থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন দেব।

বলা বাহুল্য, ঘাটালের মানুষ মাস্টারপ্ল্যানকে সামনে রেখেই ভোট দিয়েছেন। তাই মানুষের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতেই তড়িঘড়ি কাজ শুরু করতে চান দেব। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হয়ে গেলে এখানকার মানুষকে আর বন্যার আতঙ্কে ভুগতে হবে না। সামনেই বর্ষা আসছে। তাতে এবারও ঘাটাল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এখন থেকেই কাজ শুরু করতে চান সাংসদ দেব। সেই উদ্দেশ্যেই সময় ব্যয় না করেই বৈঠক করলেন সেচমন্ত্রীর সঙ্গে।