নিজস্ব প্রতিনিধি— ভূপতিনগর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফের ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি৷ সুদূর বেঙ্গালুরু ঘটনার জল গড়িয়েছে বাংলাতেও৷ বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত মুসাভির হুসেন শাজিব এবং আবদুল মাঠিন আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলার কাঁথি থেকে৷ এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি, পাল্টা জবাব দিয়েছে ঘাসফুলও৷ নির্বাচনের মুখে ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাকযুদ্ধ৷ কেন কাঁথিতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা? তদন্ত হোক, এই দাবিতেই সরব হচ্ছে তৃণমূল থেকে বিজেপি৷
বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গকে দুষ্কৃতীদের ‘স্বর্গরাজ্য’ বলে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির৷ একই মর্মে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও একই সুর চড়িয়েছেন৷ সেই আবহে রাজ্য পুলিশ টু্যইট করে যোগ্য জবাব দেয় বিজেপিকে৷ রাজ্য পুলিশের দাবি, ওই অভিযান এনআইএ -র একার ছিল না৷ রাজ্য পুলিশও তাতে সহযোগিতা করেছে৷ এনআইএ এবং রাজ্য পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন দুই অভিযুক্ত৷ সে কথা কেন্দ্রীয় সংস্থাই সরকারিভাবে জানিয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এক্স বার্তায় লেখে, ‘‘মিথ্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে! পশ্চিমবঙ্গ কখনওই সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য ছিল না৷
বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে সদা তৎপর রাজ্য পুলিশ৷’’ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রাতে আমাদের কাছে খবর আসে৷ খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই সব পরিকল্পনা করে ফেলি৷ দু’ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় দুই অভিযুক্তকে৷ আবারও বলছি, রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যৌথভাবে এই অভিযান চালিয়েছে৷ তদন্ত সংক্রান্ত বাকি তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই দিতে পারবে৷’’
এই ঘটনায় বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিয়েছে রাজ্যের শাসক দলও৷ শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনায় সরব হন বিজেপির বিরুদ্ধে৷ চন্দ্রিমার দাবি, মুখ্যমন্ত্রীও নিজের সভা থেকে প্রশ্ন তুলেছেন কেন এবং কিভাবে কাঁথিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন দুই অভিযুক্ত সেই নিয়ে তদন্ত হোক৷ এনএইএ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রশংসা করায় বিজেপির হিংসে হচ্ছে, তাই একাধিক প্রসঙ্গের উত্থাপন করে বিষয়টিকে এখন ঘোরাতে চাইছে বিজেপি৷ পাশাপাশি এই ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘তাহলে গুজরাটের মুন্দ্রা পোর্টে কেন এতো ড্রাগস ধরা পড়ে? শেষবার যখন তিন হাজার কেজি হিরোইন ধরা পড়লো সে নিয়ে প্রশ্ন উঠলো না কেন?’’
রাজ্য তৃণমূলের কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এনআইএ তো নিজেই স্বীকার করেছে যে, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই অভিযান চালিয়েছে তারা৷ এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘এনআইএকেও মানতে হল রাজ্য পুলিশের সক্রিয় সহযোগিতার কথা৷ বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে জডি়ত বলে যে গ্রেফতার তারা করেছে, তাতে তাদের প্রেস রিলিজেও রাজ্য পুলিশের সহযোগিতার উল্লেখ রয়েছে৷ আর কোথা থেকে ধরেছে? কাঁথি৷ সবাই জানে সেখানে কোন পরিবার দুষ্কৃতীদের আনে, আশ্রয় দেয়৷ এ সবে তাদের ভূমিকার তদন্ত হোক৷ বাংলার পুলিশ দেশবিরোধী অশুভ শক্তিকে দমন করতে অবিচল এবং অন্য এজেন্সিকে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত, আবার প্রমাণিত৷’’