লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের চেয়ে একটা আসনও বেশি পেলে, ছাব্বিশের আগেই রাজ্যে ভোট: সুকান্ত

মধুছন্দা চক্রবর্তী: চব্বিশের লোকসভা ভোট এখনও তৃতীয় দফা পেরোয়নি, তার মধ্যেই ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বাভাস দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার৷ সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের নির্বাচন পূর্ববর্তী ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়ে দিলেন, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি একটা আসনও বেশি পেলেই ছাব্বিশের আগেই বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসবে৷ এবং সেই নির্বাচনে তৃণমূল সরকারের পতন ঘটবেই৷ এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে যে দু’ দফার নির্বাচন হয়েছে, সেখানে উত্তরবঙ্গের ছ’টা আসনের মধ্যে সবগুলিতেই বিজেপি জিতবে৷ দার্জিলিং -এর প্রার্থী রাজু বিস্তা বিপুল আসনে জয়লাভ করবেই, এই বিষয়েও যথেষ্ট প্রত্যয়ী সুকান্তবাবু৷ চলতি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টার্গেট ৩০ টি আসন৷ সেই আসনের যত কাছাকাছি তাঁরা পেঁৗছতে পারবেন, এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ততই আসন্ন হয়ে পড়বে৷

উল্লেখ্য, বিরোধী দলেনতা শুভেন্দু অধিকারীও একই ধরনের মন্তব্য করছেন নির্বাচনী প্রচারে৷ তাহলে লোকসভা ভোটে বিজেপির আসন সংখ্যা তৃণমূলের চেয়ে বেশি হলে কি দল ভাঙিয়ে তাঁরা সরকার ফেলে দেওয়ার দিকে এগোবেন? উত্তরে সুকান্তবাবু জানান, দলভাঙানো বিজেপির নীতি নয়৷ বাংলায় তৃণমূল সরকারের পতনের জন্য দুর্নীতি ইসু্য এমনকী অন্তর্দ্বন্দ্বও ফ্যাক্টর হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিলেন সুকান্ত মজুমদার৷ বললেন, হরিয়ানায় ৩০০০ অযোগ্য জুনিয়র বেসিক টিচার নিয়োগে দুর্নীতির দায়ে ২০১৩ সালে সেখানকার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ চৌতালা এবং তাঁর ছেলে অজয় সিং চৌতালার দশ বছরের জেল হেপাজত হওয়ার মতো ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে ঘটলেও তিনি আশ্চর্য হবেন না৷ তাছাড়া তৃণমূলের মতো ‘পরিবারবাদী’ দলের ক্ষেত্রে, উত্তরপ্রদেশের যাদব পরিবারের মতো কাকা-ভাইপোর অন্তর্দ্বন্দ্বতেও সরকার পড়ে যেতে পারে, এমনটাই ধারণা সুকান্ত মজুমদারের৷

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, বর্তমান তৃণমূল সরকার আমূল দুর্নীতিগ্রস্ত৷ চিট ফান্ড থেকে একশো দিনের কাজ, মিড ডে মিলের চাল, বাংলার আবাস যোজনা — সর্বত্র সরকারের দুর্নীতির জাল বিস্তৃত৷ নিয়োগ দুর্নীতি ঢাকতে অযোগ্য শিক্ষকদের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সুপার নিউমেরিক’ পোস্ট তৈরি করা হয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যাদের ‘ব্যতিক্রমী শিক্ষক’ বলে তকমা দিয়েছেন৷ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ভোট মিটলেই সুপার নিউমেরিক পদ দিয়ে তদন্ত হবে৷ ইতিমধ্যেই ওএমআর সিট নষ্ট করা অপরাধ বলে গণ করা হয়েছে শীর্ষ আদালতের ‘অবজারভেশন’-এ৷


সোমবার নির্বাচনপূর্ব সাংবাদিক সম্মেলনে সন্দেশখালি নিয়ে একটি স্টিং ভিডিওর প্রসঙ্গ বারবার ওঠে৷ যে ভিডিওতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের স্বীকারোক্তি শোনা যায়, বাংলার মানুষকে বদনাম করতে সন্দেশখালির গণধর্ষণের ঘটনা ‘সাজানো’৷ যদিও এই ভিডিওতে তাঁর মুখ দেখানো হলেও কন্ঠস্বর তাঁর নয় বলে জানিয়েছেন গঙ্গাধর কয়াল৷ সুকান্ত মজুমদার এদিন জানান, এখন এআই দিয়ে অনেক কিছু করা যায়৷

সোমবার প্রেস ক্লাবের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠান এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানিয়ে দেন, আগামী দিনে রিফিউজিদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে সিএএ চালু হবেই বলে জানিয়ে দেন সুকান্তবাবু৷ তবে এই ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশে নতুন করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব কোনওভাবেই নেওয়া হবে না৷