বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি’র (পিএসি) চেয়ারম্যান হিসেবে মকুল রায়কে মনােনীত করার প্রতিবাদে বিধানসভার আটটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে গণইস্তফা দিলেন বিজেপি বিধায়করা।
সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনে, যেদিন বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং অ্যাসেম্বলি কমিটির চেয়ারম্যানের নাম ঘােষণা করেন স্পিকার, সেদিনই এই ইস্তফার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিরােধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার সেই সিদ্ধান্তকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মান্যতা দিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন বিজেপি বিধায়করা। মঙ্গলবার ৬ টি স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ এবং ২ টি অ্যাসেম্বলি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন বিজেপি বিধায়করা।
তালিকায় ছিলেন বিরােধী দলের মুখ্য সচেতক মনােজ টিপ্পা, বিষ্ণু প্রসাদ শাস্ত্রী , মিহির গােস্বামী, আনন্দময় কৰ্মন, অশােক কীর্তনিয়া, নিখিল দে, দীপক বর্মন সহ মােট আটজন। বিজেপি বিধায়কদের এদিন বিধানসভার অধ্যক্ষ জিজ্ঞেস করেন, কেন পদত্যাগ করছেন? মানুষের কাজ করার জন্য আপনাদের থাকা উচিত।
উত্তরে বিজেপি বিধায়করা জানান, এটা তাদের পরিষদীয় দলের সিদ্ধান্ত। এরপর স্পিকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের নালিশ জানাতে মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা রাজভবনেও যান।
সেখানে কথা বলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে। এই নিয়ে সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ, নিয়ম মেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্পিকার। এক্ষত্রে রাজ্যপালের কিছু করার নেই। ছবি তুলতে যাচ্ছেন ওঁরা।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘােষ বলেন, বিরােধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজে সব পদ আঁকড়ে রাখছেন। অথচ নতুন বিধায়কদের বঞ্চিত করছেন। শুভেন্দুকে সীমাহীন সুবিধেবাদী বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। বিধানসভার রেওয়াজ হচ্ছে বিরােধী দলের কাউকে পিএসি’র চেয়ারম্যান করা হয়।
যাতে সরকারের হিসেব নিকেশ স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার করা হয়ে থাকে। এটাই গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার। তবে বিজেপি বিধায়কদের মতে, তৃণমূল কংগ্রেস কোনও শিষ্টাচারের ধার ধারে না। তাই তৃণমূলে যােগদান করা মুকুল। রায়কে এই পদে বসানাে হয়েছে।
মুকুল রায়কে যেদিন পিএসি’র চেয়ারম্যান করা নিয়ে জল্পনা চলছি, সেদিনই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন মুকুল রায় তাে বিজেপি পার্টিরই সদস্য। ওকে আমরা সাপাের্ট দেব। সেইমতাে বিধানসভায় গােখা জনমুক্তি মাের্চার বিধায়ক পিএসি পদে মুকুল রায়ের নাম প্রস্তাব করেন। সমর্থন করেন তৃণমূল বিধায়ক।
রীতি মেনেই গত শুক্রবার বিধানসভায় পিএসি চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়কে মনােনীত করেন স্পিকার। তৎক্ষণাৎ বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন বিজেপি বিধায়করা। ওইদিনই সাংবাদিক সম্মেলনে বিরােধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, দলত্যাগ বিরােধী আইন আনতে চান তারা।
মঙ্গলবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী জানান, আমাদের মতামত না নিয়ে আটজন বিধায়ককে স্ট্যান্ডিং আর অ্যাসেম্বলি কমিটির চেয়ারম্যানের পদে বসিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির পরিষদীয় দলের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়নি। পিএসি’র চেয়ারম্যান নিয়ে রাজনীতি করায় বিধানসভার কমিটি গুলি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপির বিধায়করা।