• facebook
  • twitter
Wednesday, 30 October, 2024

দুর্নীতির খবর বেরোনোর পর প্রাক্তন আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন

বাসুদেব ধর, ঢাকা ০২ জুন– দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসার পর থেকে তাকে নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে৷ দুর্নীতির জন্য তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ তবে বেনজীর আহমেদ এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কারও কাছ থেকে কোনো

বাসুদেব ধর, ঢাকা ০২ জুন– দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসার পর থেকে তাকে নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে৷ দুর্নীতির জন্য তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ তবে বেনজীর আহমেদ এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কারও কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না৷ তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, বেনজীর আহমেদ দেশে নেই৷

বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় ৬২১ বিঘা জমি, ঢাকার গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, ৩৩টি ব্যাঙ্ক হিসাব, ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ৩টি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসা করার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন৷ কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছে আদালত৷

আদালতের ওই আদেশ আসার আগেই বেনজীর আহমেদ স্ত্রী ও তিন কন্যাসহ দেশ ছেড়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওই সূত্র জানিয়েছে৷ তিনি বলেন, বিভিন্ন মহলে আলোচনা আছে বেনজীর আহমেদ এখন সিঙ্গাপুরে আছেন৷ তবে তিনি আসলেই সিঙ্গাপুর আছেন নাকি অন্য কোনো দেশে আছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বেনজীর দেশে আছেন নাকি চলে গেছেন, সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না৷

এদিকে সংবাদ মাধ্যমে গতকাল আরও তথ্য বেরিয়েছে যে, পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে প্রায় ৬০০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে৷ এসব জমির প্রায় সবই হিন্দু সম্প্রদায়ের৷ হিন্দুরা বলছেন, জমি বিক্রি ছাড়া তাদের কোনো উপায় ছিল না৷ ভয় দেখিয়ে, জোর করে এবং নানা কৌশলে তাদের কাছ থেকে জমিগুলো কেনা হয়েছে৷ এই দুই জেলা হিন্দু অধু্যষিত৷

গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে গিয়ে জমি বিক্রি করা হিন্দু পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের জমি কিনতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত রেখেছিলেন বেনজীর আহমেদ৷ বেনজীর আহমেদ এসব জমি কেনার কাজটি করেছেন আইজিপি (২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর) ও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক থাকার সময়ে (২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল)৷

আজ খবর বেরিয়েছে, বেনজীর বঙ্গোপসাগরের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন ও কক্সবাজারের ইনানী সৈকতেও স্ত্রী ও মেয়েদের নামে জমি কিনেছেন৷

সাংবাদিকরা বেনজীর আহমেদের গুলশান-১ নম্বরের বাড়িতে গিয়ে তাদের কাউকে পাননি৷ সেখানে বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী সবুজ মিয়া জানান, দুই সপ্তাহ ধরে বেনজীর আহমেদকে তিনি দেখেননি৷ পুলিশের প্রাক্তন এই শীর্ষ কর্মকর্তা ও তার পরিবারের কেউ বাড়িতে আছেন কি না, সে বিষয়েও তিনি নিশ্চিত নন৷
এ ছাড়া গোপালগঞ্জে বেনজীর আহমেদের পরিবারের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে গেলেও সেখানকার কেউ তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি৷

বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন৷ এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন৷ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র৷ ওই সময় র্যাবের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এই বাহিনীর প্রাক্তন কর্মকর্তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন৷ যার মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল৷ যুক্তরাষ্ট্র যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন বেনজীর আহমেদ৷