সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় বর্তমান কমলনাথ নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে আস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। বিকেল ৫’টার মধ্যে আস্থা ভোট গ্রহণ করতে হবে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধ্যক্ষকে বিশেষ অধিবেশন ডাকা ও আস্থা ভোটের যাবতীয় প্রক্রিয়া ভিডিও রেকর্ডিং করার জন্য এক নোটিশ জারি করেছে।
এছাড়া বেঞ্চের অন্য বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটকের পুলিশ প্রধানকে ১৬ বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধ্যক বিধানসভায় আস্থা ভোটের সময় উপস্থিত হতে চাইলে তাদের যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের একটি মাত্র বিষয় থাকবে তা হল আস্থা ভোট গ্রহণ। এব্যাপারে কোনও বাধার যাতে সৃষ্টি না হয় তা সুনিশ্চিত করতে অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিধানসভার সচিবকেও সভার আইন শৃঙ্খলার যাতে কোনওরূপ লঙঘন না হয় তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ জানিয়েছে বিধানসভার অধিবেশন বন্ধ থাকর সময়ে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে রাজ্যপাল সেই সরকারকে আস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল সরাসরি অধ্যক্ষকে বিধানসভার অধিবেশন ডেকে আস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারেন বলে আদালত জানিয়েছে।
উল্লেখ্য গত সপ্তাহে শাসক কংগ্রেস দলের বাইশ জন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করায় কমলনাথ নেতৃত্বাধীন সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষে রাজ্যপালের অধ্যক্ষকে বিধানসভা অধিবেশন ডেকে আস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশের বিরোধিতা করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ এন পি প্রজাপতি এপর্যন্ত ছয়’জন বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কের পদত্যাগপত্র পেয়েছেন এবং বাকিদের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা ভোপালে ফিরতে অস্বীকার করেন। নিরাপত্তার অভাবের কারণ দেখিয়ে।
বিদ্রোহী বিধায়করা সাংবাদিকদের জানান, কংগ্রেস দল জোর করে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা করছে। আদালত অধ্যক্ষকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য আদালতের পক্ষেই ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
অধ্যক্ষ দুই সপ্তাহের সময় চান সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য। কিন্তু বিচারপতি চন্দ্রচূড় তাঁর নির্দেশে জানান, এক সপ্তাহই হর্স ট্রেডিংয়ের জন্য যথেষ্ট সময়। হর্স ট্রেডিংয়ের মতো অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতেই দ্রুত আস্থা ভোট গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করে বেঞ্চ।
বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা সকলেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার অনুগামী বলে পরিচিত। জ্যোতিরাদিত্য গত সপ্তাহেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষে অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপি কংগ্রেস বিধায়কদের জোর করে ভিন রাজ্যে আটকে রেখেছে। ছয়’জন পদত্যাগী কংগ্রেস বিধায়কের পর শাসক কংগ্রেস দলের বিধানসভায় সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৮।
এই সংখ্যা বেঙ্গালুরুতে অবস্থানরত ১৬ বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে গণনা করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপির বিধানসভায় সদস্য সংখ্যা ১০৭। বিদ্রোহীরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তাদের সংখ্যা হয়েছে ২২২। আর ম্যাজিক সংখ্যা হল ১১২।