অবশেষে পাক-মার্কিন যৌথ প্রয়াস বাস্তবায়িত হল বাংলাদেশের মাটিতে

বরুণ দাস

একাত্তরে সাবেকি পূর্ব পাকিস্তান যখন স্বাধীন বাঙলাদেশের স্বপ্নে মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিল- তখন তার তীব্র বিরোধিতা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পূর্ব পাকিস্তান যাতে মূল পাক-ভূখন্ড থেকে আলাদা না হয় সেজন্য তারা স্বৈরাচারি বাঙালি-বিদ্বেষী পাক-সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছিল। নিরুপায় ভারত যখন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে বাধ্য হয়, তখন পশ্চিম পাকিস্তানকে প্রয়োজনীয় সামরিক সাহায্যও করেছিল পাক- সুহৃদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

তাদের দেওয়া আধুনিক সামরিক সাজ-সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামি মানুষের ওপর। শেষকালে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের রাশ যখন আলগা হচ্ছিল, তখন মরিয়া হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক নৌবহরও পাঠায়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের অনুরোধে সোভিয়েত রাশিয়াও যখন দ্রুত একই ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসে- তখন খানিকটা থমকে যায় পাক-সুহৃদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এসব কথা আমাদের অনেকেরই কমবেশি জানা।


এখন প্রশ্ন হল, জানা কথার পুনরাবৃত্তি কেন? পুনরাবৃত্তি এজন্য যে, জানা কথাও ভুলে গেছেন স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ। বিশেষ করে যারা আজও পাক-প্রেমে মশগুল। পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি আত্মিক টান অনুভব করেন। হৃদয়ের মাঝে অন্তঃসলিলার মতো নিত্য বয়ে যায় পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সিন্ধু নদের জল। যে জলের সঙ্গে মিশে আছে বিশ্বের সেরা সন্ত্রাসীদের কালোছায়া। আর মাটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে জঙ্গিদের আঁতুরঘর তথা জেহাদি তৈরির উৎকৃষ্ট কারখানা।

উল্লেখ্য, পাক শব্দের অর্থ পবিত্র। পাকিস্তান মানে পবিত্রস্থান। তো এই পবিত্রস্থানের জঙ্গি ও জেহাদিদের কদর স্বভাবতই বেশি। বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি [বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি]-র প্রধান দোসর বা জোটসঙ্গি পাক-পন্থি জামাতে আর হেপাজতে ইসলাম যারা কট্টর মৌলবাদি হিসেবেই পরিচিত। পবিত্র কোরানই যাদের শেষকথা এবং দেশে শরিয়তি শাসনই যাদের একমাত্র লক্ষ্য। এই দু’য়ের বাইরে তারা তাকানোর প্রয়োজন বোধ করেন না।

কোটা-বিরোধী ধ্বংসাত্মক ছাত্র আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এখন জলের মতোই পরিষ্কার। দেশের শীর্ষ আদালতের রায়দানের [মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ৩০ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে] পরও ছাত্র আন্দোলনের ধ্বংসাত্মক গতিধারা বিন্দুমাত্র বদলায়নি। বরং দিনে দিনে তা আরও প্রবল ও মারমুখি আকার নিয়েছে। একদিকে ছাত্র মৃত্যু তো অন্যদিকে পুলিশ মৃত্যু অব্যাহত থেকেছে। একই সঙ্গে ছিল সেদেশের নিরপরাধ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংস ও বর্বরোচিত আক্রমণ।

গোটা দেশজুড়ে তাদের পবিত্র উপাসনালয় তথা মঠ-মন্দির-মন্ডপ ভেঙেচুড়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের মূর্তি ভেঙে অপবিত্র করে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও-বা [রংপুরে] মন্দিরের পুরোহিতকে খুন করে মঠ-মন্দিরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোটা-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে দেশের সংখ্যালঘু-নিধনযজ্ঞের সম্পর্ক কোথায় কিংবা তাদের পবিত্র উপাসনালয় তথা মঠ-মন্দির-মন্ডপ ভেঙেচুড়ে জ্বালিয়ে দেওয়াই-বা কেন- এসব প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলে না।

এর আগেও বহুবার দেখা গেছে, সাবেকি পূর্ব পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশের যেকোনও আন্দোলনের শেষলক্ষ্য হয়ে ওঠে মালায়উন-নিধন সহ ও তাদের সম্পদ জবর-দখল, মহিলাদের শ্লীলতাহানি-অপহরণ এবং পবিত্র উপাসনালয় তথা মঠ-মন্দির-মন্ডপ ভেঙেচুড়ে জ্বালিয়ে দেওয়া। সেদেশের আন্দোলনের এই পুরনো অভিমুখ আজও বিন্দুমাত্র বদলায়নি। এবারের বৈষম্য-বিরোধী কোটা আন্দোলনের শেষলক্ষ্যও হয়ে ওঠে মালায়উন-নিধন সহ ও তাদের সম্পদ দখল, মহিলাদের শ্লীলতাহানি। এবং তাদের পবিত্র উপাসনালয় তথা মঠ-মন্দির-মন্ডপ ভেঙেচুড়ে জ্বালিয়ে দেওয়া। এস. ওয়াজেদ আলির ‘ভারতবর্ষ’-এর সেই বিখ্যাত উক্তিই প্রথমে আমাদের স্মরণে আসে- ‘সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে।’ বহু ব্যবহারে ক্লিশ হলেও এর পরিপূরক কোনও যথার্থ উক্তিই আমাদের স্মরণে আসছে না। অনেকের হয়তো কমবেশি স্মরণ আছে- পাকিস্তান আমলে মালায়উনের গায়ের চামড়া দিয়ে জুতো বাননোর ফতোয়া দিয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের মাননীয় গভর্ণর মিস্টার মোনয়েম খান।

ইতিমধ্যে পদ্মা-মেঘনা দিয়ে অনেকটা পানি গড়িয়ে গেলেও সাবেকি পূর্ব পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশের সিংহভাগ সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষের [শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত] মনে সেদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ সম্বন্ধে বিদ্বেষভাব কিন্তু কিছুমাত্র কাটেনি। কেন যে এই সম্প্রদায়গত অনাকাঙ্ক্ষিত বৈরিভাব- তা বোঝা কিন্তু সত্যিই শক্ত।

এদেশেও যে ওই বিষাক্ত আবহাওয়া নেই-তা বলা অবশ্য যাবে না। এই উপমহাদেশের সাম্প্রদায়িক আবহাওয়াটাই আসলে বড্ড মনুষ্যত্ব ও মানবতা বিরোধী।

বলাবাহুল্য, একটানা দীর্ঘদিন শাসনক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, সরকারি ক্ষমতার অপ-ব্যবহার সহ স্বৈরাচারি মানসিকতার জন্ম দেবেই। শাসকদলের নেতানেত্রীদের বেপরোয়া আচরণও খুব স্বাভাবিক। এমন কি, দলের আঞ্চলিক কিংবা ভূঁইফোর পাতি নেতাদেরও অকারণে হম্বিতম্বি সহ্য করা সাধারণ মানুষের কাছে রীতিমত অসহ্য হয়ে ওঠে। নাগরিক পরিসরও ক্রমশঃ খর্ব থেকে খর্বতর হতে শুরু করে। নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারও ব্যহত হয়ে ওঠে। ফলে দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি হয়।

এবং বলতে কোনও দ্বিধা নেই, আওয়ামি লিগের হাসিনা সরকারের মধ্যেও এসব বদগুণের প্রচুর প্রাদুর্ভাবই দেখা দিয়েছিল। কিন্তু একচ্ছত্র ক্ষমতায় থাকার দম্ভে তা নজরে আসেনি হাসিনা সরকারের। ফলে দীর্ঘদিনের জমে ওঠা ক্ষোভ ক্রমশঃ বিক্ষোভ-বিদ্রোহের পথে এগুচ্ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা ওয়াজেদ সরকার হয়তো ভেবেই নিয়েছিলেন মহান পিতার উত্তরাধিকারিণী হিসেবে তিনি সবটা নিজের হাতে ঠিক সামলে নেবেন। দেশের মানুষ তাঁকে সেই প্রয়োজনীয় সময় ও সুযোগও দেবেন।

তিনি নিশ্চিত বুঝতে পারেননি স্বাধীনতার ঐতিহ্যবাহী আওয়ামি লিগের জনপ্রিয়তাও এরফলে দারুণভাবে ধাক্কা খাচ্ছিল। তাই জন-বিতৃষ্ণাকে আঁচ করতে না-পারার চড়া মাসুল গুনতে হল তাঁকে তো বটেই, গোটা দলকেও। তিনি তো নিরাপদে দেশ ছেড়েছেন সহোদরা সহ কিন্তু দলের নেতা-মন্ত্রীদের তো সঙিন অবস্হা। তীব্র জনরোষে অনেকের প্রাণ গেছে। কারও পরিবার, বাড়িঘর ও সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। যারা সম্ভাব্য পরিণতি আঁচ করে পালাতে সমর্থ হয়েছেন, তারাই একমাত্র বেঁচেছেন।

তাহলে গোটা চিত্রনাট্যটাই কী ছাত্র আন্দোলন তথা তীব্র জনরোষের প্রতিফলন ? কিংবা গণ-অভ্যুত্থানের ফসল? মোটেই না। ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে তীব্র জনরোষকে কাজে লাগিয়েছে বিরোধি দল বিএনপি, মৌলবাদি জামায়েত এবং জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক হেপাজতে ইসলাম। তাদের নেপথ্য মদতদাতা হিসেবে প্রয়োজনীয় মদত ও রসদ জুগিয়েছে পাকিস্তান আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আওয়ামি লিগ সরকারকে কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছিল না পাকিস্তান আর তার স্ট্র্যাটেজিক দোসর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

যারা বরাবরই বিএনপি-ঘেঁষা। যেহেতু বিএনপি বরাবরই ভারত-বিদ্বেষী। আওয়ামি লিগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কুচক্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাঙলাদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে অসুবিধে বোধ করে। কারণ হাসিনা সরকার ভূ- রাজনৈতিক কারণেই আমেরিকার চেয়ে ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। আর সত্যি কথা বলতে কী, ভারতও আন্তরিকভাবে চায় আওয়ামি লিগ সরকারই সেদেশের শাসন ক্ষমতায় থাকুক। তাহলে দীর্ঘ সীমান্ত ও জঙ্গি সমস্যা নিয়ে কিছুটা অন্ততঃ নিশ্চিন্ত থাকা যায়।

কোটা-বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোলনের ফসল হল- রবীন্দ্রমূর্তি ভাঙা, জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া, ঐতিহাসিক মুজিব সংগ্রহশালা জ্বালিয়ে দেওয়া, সরকারি ভবনের সম্পদ লুঠ, মাননীয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত অন্তর্বাস হাতে নিয়ে অশ্লীল উল্লাস এবং সর্বোপরি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মঠ-মন্দির- উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেওয়া এবং অসহায় নিরপরাধ মানুষদের হত্যা ও বাড়ির যুবতি মহিলাদের শ্লীলতাহানি-অপহরণ সহ বাড়িঘর ভাঙচুড় ও সম্পদ লুঠ।

সাজাপ্রাপ্ত খুনি জঙ্গিদের জেল ভেঙে বের করে আনাটাও কোটা-বৈষম্য বিরোধি ছাত্রআন্দোলনের নজিরবিহীন ফসল। বাঙলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের এমন নজরকাড়া নজির বিশ্বের আর কোথাও আছে কিনা জানা নেই। মার্কিন লবির অন্যতম এজেন্ট তথা বাঙলাদেশে মাইক্রো ফিনান্সের জনক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসকে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধ ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। সেদেশের শ্রমআইন লঙ্ঘন করার অপরাধে হাসিনা সরকার যাঁকে কারাদন্ড দিয়েছিলেন।

হাসিনা সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি সাফল্যের তালিকাও কম নয়। তাঁর সরকারের আমলেই বিদেশি ঋণ ছাড়াই পদ্মাসেতুর মতো বিশাল মাপের নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয়েছে। বিরোধিদের তীব্র সমালোচনার মধ্যেই তিনি একাজে সফল হয়েছেন। এরফলে দেশের রাজধানি ঢাকার সঙ্গে সড়ক সংযোগের সময় যেমন অনেকটা কমেছে, অন্যদিকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেরও অনেকটা সুবিধে হয়েছে। হাসিনা সরকার দেশের অর্থনীতিকেও অনেকটা চাঙা করেছেন। যা কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায়না।

এছাড়া তীব্র সমালোচনার মধ্যেও বাঙলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্হায় নতুন উদ্বাবনি প্রথা লাগু করেছেন। যা এতোদিন সেদেশের অনেকের কাছেই অভাবনীয় ছিল। সবটা হয়তো এখনও সফলতার মুখ দেখেনি কিন্তু চিরাচরিত প্রথা ভেঙে বেরনোর এই সাহসী প্রচেষ্টাকে আমাদের সাধুবাদ জানাতেই হয়। বাঙলাদেশের মাটিতে জঙ্গিদের ভারত-বিরোধি অবাধ কর্মকান্ডে অনেকটাই রাশ টেনে ধরেছিলেন হাসিনা সরকার। ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যে্যর প্রথমসারির জঙ্গিনেতাদের ভারতে প্রত্যার্পণ করেছেন।

সুতরাং হাসিনা সরকারের অবর্তমানে ভারত কিছুটা কোণঠাসা অবস্হায়। আসলে ভারত-বিরোধি বিতর্কিত বিএনপি, [3]
মৌলবাদি জামায়েত এবং জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক হেপাজতে ইসলাম সেদেশের শাসন ক্ষমতায় এলে বেশ বেগ দেবে ভারতকে একথা বলাইবাহুল্য। তাদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাই শতকরা একশোভাগ। সর্বোপরি নিরাপত্তাহীনতা বোধ করবেন সেদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও। কারণ সাম্প্রতিক বিপর্যয় সামলে এখনই হাসিনাহীন আওয়ামি লিগের আর উঠে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই।

বাঙলাদেশের মাটি ও মানুষ সম্বন্ধে যাদের কিছুমাত্র ধারণা নেই- যারা রুঢ় বাস্তবকে অগ্রাহ্য করে আবেগে ভাসতে ভালোবাসেন, যারা ওই দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের অকারণ অত্যাচার-নিপীড়ন নিয়ে নির্লিপ্ত- উদাসীন- তারাই একমাত্র কোটা-বিরোধি ছাত্র আন্দোলনকে স্বতঃস্ফূর্ত গণ-অভ্যুত্থান বলে নিজেদের প্রগতিশীল প্রতিপন্ন করতে উন্মুখ। তারা ছাত্র-মৃত্যু নিয়ে সঙ্গতভাবে শোকজ্ঞাপন করলেও পুলিশ ও আওয়ামি লিগের অসংখ্য সমর্থকদের মৃত্যু নিয়ে ‘স্পিকটি নট।’

কিংবা সংখ্যালঘু-হত্যা নিয়েও আশ্চর্যজনক ভাবে চুপ। এই সচেতন-দ্বিচারিতা কোনওভাবেই কাম্য নয়। অন্যদিকে গ্রহণ করেছিলেন, ‘ছাত্রছাত্রিরা তাদের মুক্তি দিয়েছে’ বলে যারা হাসিনা সরকারের আমলে ‘দাসত্ব-অন্ধত্ব’ সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিচ্ছেন- তারা কী বিতর্কিত বিএনপি, মৌলবাদি জামায়েত এবং জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক হেপাজতে ইসলাম সেদেশের শাসন ক্ষমতায় এলে কট্টর শরিয়তী-শাসনের সাবেকি আলোয় মুক্তি পাবেন? স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা-মুক্ত বাঙলাদেশ গড়তে পারবেন?

আওয়ামি লিগের অবর্তমানে সরকারে আসবে বিতর্কিত বিএনপি ও তার জঙ্গি জোটসঙ্গি। পূর্বেকার অভিজ্ঞতা কী বলে? যখন বিতর্কিত বিএনপি ও মৌলবাদি সাম্প্রদায়িক জামায়েত ইসলাম [কট্টর জঙ্গি হেপাজতে ইসলাম তখন বিএনপি-সরকারের বাইরে ছিল] সেদেশের শাসন ক্ষমতায় ছিল? স্মৃতি প্রতারণা না করলে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’র স্বাদ পাওয়া আবেগি মানুষেরা একবার মুক্তমনে ভেবে দেখুন তো। কোরান-পুরান কী আমাদেরকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছে? সুতরাং হুজুগে ভেসে যাওয়া কী ঠিক?