বিজেপি নেত্রী তৃণমূলে যোগ দিলেন শশী পাঁজা এবং মমতা ঠাকুরের হাত ধরে
নিজস্ব প্রতিনিধি— সন্দেশখালি কান্ড নিয়ে উত্তাল বঙ্গীয় রাজনীতি৷ একের পর এক উঠে আসছে বিজেপি বিরোধী চঞ্চল্যকর তথ্য৷ এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরের হাত ধরে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সিরিয়া পারভীন বিজেপি ছেড়ে যোগদান করলেন তৃণমূলে৷ শশী পাঁজা এবং মমতা ঠাকুরের হাত থেকে নিজ হাতে তুলে নিলেন তৃণমূলের দলীয় পতাকা এবং শক্ত করলেন তৃণমূলের হাত৷ সাংবাদিক বৈঠক করে সিরিয়া পারভীনকে তৃণমূলে আমন্ত্রণ জানানো হয় দলের তরফ ঠেকে৷ তবে ভোটপর্বের মধ্যেই দলত্যাগ? এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন শশী পাঁজা থেকে সিরিয়া পারভীন নিজেও৷
প্রথমেই শশী পাঁজা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সন্দেশখালির অসত্য চিত্রনাট্য নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বারবারই সরব হয়েছে৷ নারী সম্মান বিজেপির আমলে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে৷ আমাদের সাথে যিনি রয়েছেন (সিরিয়া পারভীন) তিনি এই ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারেন৷ তিনি এই ঘটনার সাক্ষী৷ এতদিন হয়তো তাঁর সাহস হয়নি, তারপর হয়েছে কারণ সব সহ্যের বাইরে চলে গেছে৷ তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে বিজেপিতে থাকবেন না৷ এই সব কিছুর পর স্বাভাবিক ভাবেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং আমাদের কাছে এসে বলেন৷ সম্পূর্ণ একটি অসত্য ঘটনা কেবল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে সাজানো হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি৷’ শশী তাঁর পরিচয় দিয়ে বলেন, বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সিরিয়া৷ ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন তিনি৷ এরপর ২০১৮ সালেই বিজেপি তাঁকে এই দায়িত্ব দেয়৷ রাজ্যের সংখ্যালঘু সেলের সঙ্গেও তিনি যুক্ত৷
এরপরই মমতা ঠাকুর বলেন, ‘একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কারণেই মহিলারা মাথা উঁচু করে নিজের বক্তব্য রাখতে পারেন৷ সন্দেশখালি ঘটনা আমাদের কাছে লজ্জার! বিজেপি নারী ক্ষমতায়নের কথা বলে৷ আর তাঁদের ষড়যন্ত্রের ফলেই আজ মহিলাদের সম্মান বিক্রিত৷’ তৃণমূলে যোগ গিয়ে সিরিয়া বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, তাঁরা সত্যের জন্য লড়াই করছিলেন, মা-বোনেদের সম্মানের জন্য লড়াই করছিলেন৷ কিন্ত্ত বসিরহাটের প্রার্থী ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারেন পুরোটাই একটা বানানো গল্প, রচনা৷
তাঁর অভিযোগ, সন্দেশখালিতে আন্দোলন করার জন্য মহিলাদের টাকা দেওয়া হত, মোবাইল পর্যন্ত পাঠিয়ে দেওয়া হত৷ শুধু তাই নয়, কোন দিন কী করা হবে, সব নির্দেশ মোবাইল মারফৎ পাঠিয়ে দেওয়া হত বলে দাবি করেছেন পারভিন৷ তাঁর ভাষায়, ‘তাঁদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য এবং সংবাদমাধ্যমে নাটক তৈরি করার জন্য আগে থেকেই প্ল্যান তৈরি রাখতে বলা হত৷ আমার কাছে প্রমাণ আছে কী ভাবে উপর থেকে টেক্সট পাঠানো হয়েছিল ভুয়ো ধর্ষণের দাবি কার্যকর করার জন্য৷’ সদ্য প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘আমি যখন সন্দেশখালির পথে ওই রাতে রওনা দিলাম, যেতে যেতেই সম্পূর্ণভাবে জেনে গেলাম যে এটা ঘটানো, আমাদের তৈরি করা৷ সেটার প্রমাণ আছে৷ প্রমাণ না নিয়ে কোনও কথা বলছি না৷ ওইদিন যে ঘটনা ঘটবে, যার সঙ্গে ঘটবে, সে নিজেও জানত৷ সঙ্গে আরও একজন মহিলা, সেও জানত৷ সেটাও আমি প্রমাণ দিয়েছি৷ আমি ঘটনাস্থলে যখন পৌঁছলাম, তাঁকে দেখে বিধ্বস্ত মনে হচ্ছিল৷ পরিকল্পিতবাবে তাঁকে তো বিধ্বস্ত করবেই৷ জামা ছিঁড়বে, শাডি় ছিঁড়বে, শাখা পলা ভাঙবে, এটা পরিকল্পিত৷’