এনআইএ নিয়ে বিস্ফোরক মমতা

নিজস্ব প্রতিনিধি— দলের পাশাপাশি এবার এনআইএর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূল নেত্রীও৷ গত শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপির সঙ্গে এনআইএর যোগসাজসের অভিযোগ তোলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ আর পুরুলিয়ার সভা থেকে একেবারে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ও বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অলআউট আক্রমণে গেলেন তৃণমূল নেত্রী৷ রবিবার পুরুলিয়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুরুলিয়ার মানুষের প্রধান সমস্যা এখনও পানীয় জল৷ আগামী এক দেড় বছরের মধ্যে কিছু করতে৷ জাইকা প্রজেক্টটার দেরি করেছে৷ ওটা জাপানের একটা সংস্থা৷ আন্তর্জাতিক সংস্থা বলে বাতিলও করে দিতে পারছি না৷ এবার আমরা করছি ঘর ঘর মে পানি৷ এটা মোদিজির গ্যারান্টি নয়, বাংলা সরকারের গ্যারান্টি৷ ইতিমধ্যেই জল অনেক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি৷ বাকীটাও পৌঁছে দেব৷ টাকা দেব আমরা, রক্ষণাবেক্ষণ করব আমরা আর তোমরা প্রচার করবে? আর মানুষ যখন প্রতিবাদ করবে তখন ওরা এনআইএকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে৷ মধ্যরাতে মহিলারা বাডি়তে ঘুমাচ্ছে, পুলিশকে না জানিয়ে চলে গেল এনআইএ৷

সিভিল ড্রেস পরে অনেক বদমাস লোক সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে অনেক বদমায়শিও করেছে৷ মায়েরা কীভাবে বুঝবে বাইরে থেকে কেই যদি হামলা করতে আসে? মা বোনেরা প্রতিবাদ করল৷ তাদের বিরুদ্ধে ডাইরি করে দিয়েছে৷ বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, বলছে তৃণমূলের সব বুথ এজেন্টদের অ্যারেস্ট করো৷ আবার রাম নবমী আসছে, একটা চকলেট বোমা পড়লেও দেখবেন ওই এনআইএকে ঢুকিয়ে দেবে৷ কী অধিকার আছে এনআইএর? এখানে হোটেলে হোটেলে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছে কোন পার্টির কে কে থাকছে৷ তাতে তোমার কী? এটা কি তোমার কাজ? পার্টির লোকরা কি তোমার মাথায় থাকবে? ভোটের সময়ে তো আমরা সরকারের জায়গায় থাকি না৷ যে কপ্টারটা নিয়ে ঘুরি সেটাও পার্টির টাকায় ভাড়া করি৷ একদিকে এনআইএ আর একদিকে সিবিআই৷ বিজেপি ভাই ভাই৷ বিজেপির টাকা তোলার বক্স৷ আমাদের আছে লক্ষ্মীর ভান্ডার৷ ওদের আছে ইডির ভান্ডার৷ আমাদের আছে কৃষি ভান্ডার ওদের আছে ইডির ভান্ডার৷

ভয় দেখাচ্ছে৷ বলছে বিজেপি করো তাহলেই ছেডে় দেব৷ দশের সব নেতাদের গ্রেফতার করছে৷ একটা স্বৈরাচারী সরকার, অত্যাচারী, অনাচারের সরকার৷ মোদীবাবু গ্যারান্টি দিয়ে বেড়াচ্ছে৷ আপনার গ্যারান্টি মানে তো নোটবন্দি, আপনার গ্যরান্টি মানে তো সিবিআই৷ আপনার গ্যারান্টি মানে তো ইনকাম ট্যাক্স৷ এরা আবার বলছে দুর্নীতির কথা৷ ১৩৬ টা কমিটি পাঠিয়েছে দুর্নীতি ধরার জন্য৷ তদন্ত করে কী করলেন? ইউপিতেও তো দুর্নীতি হয়েছে৷ ৮৫ লাখ টাকা দুর্নীতি৷ কী করেছেন সেখানে? পুরুলিয়ায় শিল্পস্থাপন, পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে মমতা বলেন, রঘুনাথপুর – পুরুলিয়া, পানাগড়-রঘনাথপুর শিল্প করিডোর তৈরি হচ্ছে৷ এখানে ৭৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করে শিল্প গডে় উঠছে৷ এখানকার ছেলে মেয়েদের আর কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না৷ এক সময়ে অযোধ্যা পাহাডে় বেড়াতে এলে থাকার কোনও জায়গা ছিল না৷ এখন দেখুন কত হোটেল, রিসর্ট গডে় উঠেছে৷ একসময়ে এখানে এলাকায় রক্ত ঝরত৷ পর্যটকরা আসত না৷ এখানে অনেক অবাঙালি থাকেন৷ মনে রাখবেন বাঙালি অবাঙালি সবাই একসঙ্গে থাকেন৷ পুরুলিয়া জেলার জন্য অনেক করেছি৷


রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে আরামবাগ বিষ্ণপুর লাইন করে দিয়েছিলাম৷ এখানে মেডিক্যাল কলেজে, পুরুললিয়া সুপার স্পেশালিটা হালপাতালে গডে় উঠছে৷ বহু মানুষ আসলছেন৷ বহু হোম স্টে তৈরি হয়েছে৷ আদিবাসীদের সম্পদ যেন কেডে় না নেওয়া হয় তার ব্যবস্থা করেছি৷ এখানে যাদের মাটির বাডি়র রয়েছে তাদের বলতে চাই, মোদীবাবু গত ৩ বছর ধরে ঘর তৈরির টাকা দেয়নি৷ একশো দিনের টাকা দেয়নি৷ রাস্তার টাকা দেয়নি, একশো দিনের টাকা আমাদের সরকার দিয়েছে৷ ৫৯ লাখ জবকার্ড হোল্ডার দের টাকা আমরা দিয়েছি৷ ৫০ দিনের কাজ তো দেবই দরকারে ৬০ দিনের কাজ দেবই৷ ঝডে় জলপাইগুজিডেক ৫ হাজার মানুষের ঘরে ভেঙ্গে গিয়েছে৷ আমরা বাংলার বাডি় করে দিতে চাই৷ ভূপতিনগরে এনআইএ-এর উপরে হামলার ঘটনায় মুখ খুলে পাল্টা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কেন পুলিশকে না জানিয়ে মাঝরাতে এনআইএ অভিযানে গেল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ একই সঙ্গে এই ঘটনার নেপথ্য বিজেপি রয়েছে বলেও সরাসরি অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷