বিড়ম্বনায় পড়া দিলীপ ঘোষের কনভয় মহিলাকে ধাক্কা মেরে এলাকা ছাড়ল

এবারের লোকসভা ভোটে পরাজিত হয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তারপরই তিনি দলের বিরুদ্ধে কখনও আকারে-ইঙ্গিতে বা প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তবে, এবার দিলীপ ঘোষ তাঁর পুরনো ইমেজ ধরে রাখতে এবং নতুন করে জনসংযোগ গড়ে তুলতে ও নিজের অনুগামীদের কাছে পৌঁছাতে বীরভূম জেলা সফরে এসেই জোর ধাক্কা খেলেন। শনিবার ১৭ আগস্ট তিনি জেলা সফরে এসে দুবরাজপুর বিধানসভার সতীপীঠ বক্রেশ্বরে পুজো দেন। পুজো সেরে তিনি বক্রেশ্বরে একটি বেসরকারি আবাসনে দলীয় কর্মীদের একাংশকে নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেন। ওই বৈঠকে দলীয় কর্মীদের একাংশ উপস্থিত থাকলেও দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এবং জেলায় দলের একমাত্র বিধায়ক দুবরাজপুরের অনুপ সাহা অনুপস্থিত থাকলেন।

এমনিতেই সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে জেলার বোলপুর ও বীরভূম-দু’টি লোকসভা আসনেই শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। সেই প্রেক্ষিতে জেলায় দিলীপ ঘোষের আসা নিয়ে যতোটা না চর্চ্চা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি চর্চ্চা চলছে জেলায় দলের একমাত্র বিধায়ক অনুপ সাহা এবং তাঁর নির্বাচনক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষের কর্মী সভায় তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে। সেই সাথে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাও ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যেমন অনুপস্থিত থেকেছেন তেমনি তিনি দিলীপ ঘোষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতও করেননি। বলা হচ্ছে যে, দলীয় বিধায়ক অনুপ সাহা এবং ধ্রুব সাহা দলের রাজ্যে নেতাদের দিলীপ বিরোধী গোষ্ঠীর হওয়ার কারণেই এই দু’জনই তাঁর মুখোমুখি হননি।

এমনিই একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রবিবার ১৮ আগস্ট সকালে দিলীপ ঘোষ আমোদপুরের দিকে গাড়িতে যাওয়ার সময় তাঁর কনভয়ের একটি গাড়ি সিউড়ির কড়িধ্যা হাটতলার কাছে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক মহিলাকে ধাক্কা মারলে ওই মহিলা গুরুতরভাবে আহত হন। তাঁর হাতে, পায়ে ও কোমরে চোট লাগলে তিনি রাস্তার পাশে পড়ে যান। এলাকার বহু মানুষ এসে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে দিলীপ ঘোষের গাড়ি ও কনভয় থামাবার চেষ্টা করেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, দিলীপ ঘোষ বা তাঁর সঙ্গে থাকা কনভয়ের কোনও গাড়ি করে আহত ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। কিন্তু কোনও গাড়ি-ই সেখানে না থেমে ভীড় ঠেলে চলে যায়। এরপরই এলাকার মানুষ আহত ওই মহিলাকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ সিউড়ি-বক্রেশ্বর রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। দেখা দেয় তীব্র যানজট। পরে সিউড়ি থানার বিশাল পুলিশবাহিনি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।