দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি, এক কোটি ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে : মমতা

খায়রুল আনাম:  এক রাতের ব্যবধানে ভোট প্রচারে আবারও বীরভূমে এলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পঞ্চপীঠের জেলা বীরভূমের বরেণ্য কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাভপুরে মা ফুল্লরার মন্দির সংলগ্ন মেলা মাঠে রবিবার ৫ মে নির্বাচনী জনসভায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমতো সুর চড়িয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করে গিয়েছিলেন৷ বীরভূমের বোলপুর ও বীরভূম এই দু’টি লোকসভার ভোট গ্রহণ করা হবে সোমবার ১৩ মে৷ তাই প্রচারের অন্তিম লগ্নে সোমবার ৬ মে পুনরায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে জনসভায় এসে জেলার অন্যতম পীঠস্থান নন্দিকেশ্বরীর সাঁইথিয়ায় এসে রীতিমতো কেন্দ্রের মোদি সরকার আর বিজেপিকে বিঁধে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করলেন৷ বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তিনবারের সাংসদ শতাব্দী রায় চতুর্থবারের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন৷
এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও এই মুহূর্তে বহু চর্চিত বিষয় সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের বিষয়ে সোচ্চার হয়ে নারীর সম্ভ্রম নষ্ট করার জন্য সরাসরি নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপিকে দায়ি করে বলেন, মিথ্যা চক্রান্ত একদিন না একদিন ফাঁস হয়৷ সন্দেশখালির ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে৷ ভাইরাল হওয়া ভিডিও-র প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, কী ভাবে চক্রান্ত করে মোদির বিজেপি এই কাজ করেছে তা ফাঁস হয়ে প্রকাশ্যে চলে এসেছে৷ তিনি নরেন্দ্র মোদির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেন, এই কাজ আপনারা করেছেন৷ সকলেই দেখেছেন, কী ভাবে সন্দেশখালিতে পরিকল্পনা করে এই কাজ করা হয়েছে৷ ওরা জানে না, মেয়েদের কাছে আত্মসম্মান, গরিমা অনেক বড় কথা৷ কেবলমাত্র নির্বাচনে জিততে ব্লু প্রিন্ট তৈরী করে এসব করেছেন৷ বেশি চক্রান্ত করো না, একদিন ফাঁস হবে৷ বেশি বাড় বাড়লে ঝড়ে পড়ে যাবেন বলেও তিনি নরেন্দ্র মোদিকে সাবধান বাণী শোনান৷ সেই সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদিকে নিশানা করে বলেন, সারা দেশটাকে আপনার সরকার লুঠ করেছে৷ সেইসাথে তিনি জানিয়ে দেন যে, মোদি সরকার আবার ক্ষমতায় এলে দেশে আর কোনদিন ভোট হবে না৷ এরা তো জনগণের টাকা লুঠ করতে এসেছে৷ আমি বললে দোষ হবে৷ আমি যে কথা বলতে পারি, সে কথাই বলি৷ যে কথা রাখতে পারবো না, সে কথা মুখ দিয়ে বলবো না৷ আমার কাছে টাকা আছে কী না, তা দেখে কথা বলতে হয়৷ দিল্লির সরকার রাজ্যের বহু টাকা বন্ধ করে দিয়েছে৷ মোদি সরকার বছরে দু’কোটি ছেলেময়ের চাকরি দেবো বলেও না দেওয়ায় দিন দিন দেশে বেকারত্ব বাড়ছে৷ আমাদের রাজ্যের ছাব্বিশ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি কোর্টের মাধ্যমে খেয়ে নিয়েছে৷ সেইসাথে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিশা দেখিয়ে বলেন, এজেলার দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি চালু হয়ে গেলে সেখানে সরাসরি এক কোটি কর্মসংস্থান হবে৷ কোনও ঘরে আর বেকার থাকবে না৷ সেইসাথে তিনি জানিয়ে দেন যে, এটা আমাদের গর্ব৷ এরপরই তিনি কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্বেও ন’কোটি মানুষকে রাজ্য সরকার বিনা পয়সায় চাল দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, এ জন্য বছরে বত্রিশ কোটি টাকা লাগে৷ এইসব টাকা-ই রাজ্য সরকার দেয় বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷