• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

গরম পড়তেই রক্তের আকাল বর্ধমানে, সংকট মেটাতে আবেদন

আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ৩ এপ্রিল– গরমের আবহাওয়া পড়তেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানে দেখা দিয়েছে রক্ত সংকট৷ মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই মুমুর্ষু রোগীর জন্য রক্ত যোগাড় করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷ এমনটাই জানা গেছে রোগীর আত্মীয় পরিজনদের কাছে৷ শুধুমাত্র রাজ্যের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালই নয়, পূর্ব বর্ধমান জেলা

আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ৩ এপ্রিল– গরমের আবহাওয়া পড়তেই রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানে দেখা দিয়েছে রক্ত সংকট৷ মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই মুমুর্ষু রোগীর জন্য রক্ত যোগাড় করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷ এমনটাই জানা গেছে রোগীর আত্মীয় পরিজনদের কাছে৷ শুধুমাত্র রাজ্যের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালই নয়, পূর্ব বর্ধমান জেলা জুডে় দেখা দিয়েছে রক্তের আকাল৷ এই অবস্থায় দু-একটি করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্তদান শিবির শিবির শুরু করেছে৷ কিন্ত্ত চাহিদার তুলনায় তা কম৷ এই অবস্থায় সব শ্রেণীর মানুষের কাছে স্বেচ্ছায় রক্তদান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর উদ্যোক্তারা৷ সবচেয়ে অগ্রনী ভূমিকা নিয়েছেন বর্ধমানের বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা জেলায় রক্তদান শিবিরের অন্যতম উদ্যোক্তা মহম্মদ আসরাফউদ্দিন৷ রক্তের যে আকাল তা বোঝা গেছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত একটি শিশুকে নিয়ে৷ জেলার আউশগ্রাম ব্লকের ওই শিশুর জন্যও এগিয়ে এসেছে একটি সংস্থা৷ কোন রকমে রক্ত দিয়ে প্রাণ রক্ষা হয়েছে ওই শিশুর৷

শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালের জন্য নয়, এবার বেশ কয়েকটি কারণে রক্তের আকাল পডে়ছে৷ অন্যতম কারণ হলো লোকসভা ভোট৷ আর চলছে রমজান মাস৷ ফলে রক্তদাতাদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম৷ ভোটের জন্য নির্বাচন বিধি থাকায় রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে রক্তদান শিবির বন্ধ৷ রমজান চলাকালীন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রক্তদানে এগিয়ে আসতে পারছেন না৷ বর্ধমান হাসপাতালে চলছে রক্ত শূন্যতা৷ রাজ্যের বৃহত্তম এই হাসপাতালে প্রায় ৭ টি জেলার রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসেন৷ আসেন ভিন রাজ্যের রোগীরাও৷ ফলে চাহিদা অনুযায়ী যোগান যে একেবারে তলানিতে সে তথ্য মিলেছে হাসপাতাল সূত্রে৷ এমনকি মাল্টি স্পেশালিস্ট হাসপাতাল ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত নেই, প্রয়োজনের তুলনায়৷ সারা জেলাতে একই অবস্থা৷ এরই মধ্যে আউশগ্রাম ব্লকের ভাদা গ্রামের একটি সাডে় তিন বছর বয়সের শিশুকে নিয়ে সমস্যায় পডে়ন বাবা মা৷ বর্ধমান হাসপাতালে ওই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়৷ পরে অবশ্য খবর পেয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইচ্ছেডানার এক সদস্য মানবিকভাবেই পরিবারের পাশে দাঁড়ান৷ শান্ত শা নামে এক যুবক রমজানের রোজা ভেঙ্গে শিশুকে রক্ত দিয়ে সংকট মুক্ত করেন৷ ওই সংগঠনের সম্পাদক অনুপম রায় জানান, সদস্যরা এখন নিয়ম করেই রক্তদান করছেন৷ এই মুহূর্তে রক্ত সংকট মোকাবেলায় মনোবল জুগিয়ে চলছে জেলার বৃহত্তম রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তা বর্ধমান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি৷ সারা বছরই ধারাবাহিকভাবে তাদের শিবির চলে৷ এমনকি কোভিডের সময়েও রক্ত সংগ্রহ করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে৷ যার নজির আর কোন জেলাতে দেখা যায় নি৷ ওই সংগঠনের সম্পাদক মহম্মদ আসরাফউদ্দিন নিজে একজন রেগুলার ব্লাড ডোনার৷ তার উদ্যোগে কখনো কখনো হাজার দু’হাজার মানুষ শিবিরে রক্ত দিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন৷ এবার রমজান শেষ হলেই তারা স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন৷ সম্পাদক বলেন রক্ত সংগ্রহ নিয়ে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না৷ এর জন্য আমাদের সদস্যরা সব সময়ই মানবিক৷ সচেতনভাবে তাদের পাশে পাওয়া যাবে৷ ছোট বড়ো শিবির ছাড়াও আগামী ৯ জুন শহর বর্ধমানের টাউনহলে বড়ো শিবির হবে বলে জানানো হয়েছে৷ এখন থেকেই তাদের রক্তদাতাদের কাছে শিবিরে আসার জন্য বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে৷ শিবিরে একদিনে হাজারের বেশি দাতা রক্ত দেবেন বলে প্রস্তুতি চলছে৷ যাতে প্রতি বারের মতো গ্রামীণ এলাকার বিশেষ করে মহিলা রক্তদাতারা এগিয়ে আসতে পারেন৷ চলতি মাস ছাড়াও মে, জুন, জুলাই মাসে রক্ত সংগ্রহ করার টার্গেট বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে৷