নিজস্ব প্রতিনিধি— তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের ওপর চড়াও হলো দিল্লির পুলিশ৷ বিক্ষোভরত তৃণমূল সাংসদদের টেনেহিঁচডে় বাসে তোলে দিল্লি পুলিশ৷ এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সোমবারই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ জনের এক প্রতিনিধি দল৷ নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে কমিশনের বাইরে এসে ২৪ ঘণ্টা ধর্নায় বসার ঘোষণা করেন তৃণমূল সাংসদেরা৷ কিন্ত্ত শেষপর্যন্ত তা আর হলো না৷ পুনরাবৃত্তি ঘটলো ২০২৩-এ দিল্লিতে কৃষিভবনে তৃণমূলের ধর্নার ঘটনা৷
কয়েক মিনিট পরেই সেই ধর্না তুলে দিতে আসে দিল্লি পুলিশ৷ প্রথমে পুলিশ তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কমিশনের সামনে থেকে সরে যেতে বলে৷ কিন্ত্ত ২৪ ঘণ্টার আগে তারা ধর্না তুলবে না, এমন দাবিতেই অটল থাকে তৃণমূল প্রতিনিধি দল৷ তারপরই চড়াও হয় পুলিশ৷ শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি৷ একে একে বিক্ষোভরত তৃণমূল সাংসদদের টেনেহিঁচডে় বাসে তোলে দিল্লি পুলিশের অধিকারিকেরা৷ তৃণমূল প্রতিনিধি দলের শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভের ওপর চড়াও হয় পুলিশ, অভিযোগ তৃণমূলের৷ দোলা সেন, সাগরিকা ঘোষ এই মহিলা তৃণমূল সাংসদদের জোর করে টেনে হিঁচডে় বাসে তোলা হয় এমনকি অসভ্য আচরণ করা হয় বলেও অভিযোগ দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে৷ রীতিমতো দিল্লি পুলিশ কর্তৃক হেনস্থার শিকার হন তৃণমূল নেত্রীরা, এমনটাই দাবি করেন তাঁরা৷ আটক করে তৃণমূলের সাংসদ সহ নেতানেত্রীদের দিল্লির মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ৷ কিন্ত্ত পথেই বাস ঘুরে যায় অন্যদিকে৷ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের দাবি, মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে অচেনা জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ওই বাস আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন সাংসদরা৷ চলন্ত বাসেই তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন৷ কিন্ত্ত শেষ পর্যন্ত দিল্লি পুলিশ তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নিয়ে আসে মন্দির মার্গ থানায়৷ কিন্ত্ত কোনো অবস্থাতেই হার মানতে রাজি নন তৃণমূল প্রতিনিধি দল৷ মন্দির মার্গ থানার ভেতরেই নিজেদেই ধর্ণা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁদের দাবিকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে৷
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, গতবছর অক্টোবর মাসে দিল্লির বুকে যে ঘটনা ঘটেছিলো তার চিত্রটাও ছিল এমনই৷ কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদ কৃষি ভবনে মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল৷ সময় দিয়ে দেখা না করায় অভিষেকের নেতৃত্বে ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূলের সাংসদ সহ নেতানেত্রীরা৷ নিজেদের দাবিতে অনড় ছিলেন তাঁরা৷ কিন্ত্ত সেক্ষেত্রেও তৃণমূলের সাংসদদের শান্তিপূর্ণ ধর্ণায় হস্তক্ষেপ করে পুলিশ৷ এভাবেই টেনে হিঁচডে়, জোরপূর্বক তাঁদের ধর্ণা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হলো ২০২৪ এ ৮ই এপ্রিল, সোমবার নির্বাচন কমিশনের বাইরে৷
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ প্রসঙ্গে দোলা সেন বলেন, আমাদের কাছে নথি আছে৷ বিজেপির তিওয়ারি এবং এনআইএর মধ্যে কী ভাব-ভালবাসা হল জানি না৷ তার ফল, ২০২২ সালের ঘটনায় ২০২৪ সালে ভোটের আগে এনআইএ গ্রেফতার করল৷ তা-ও রাত সাডে় তিনটের সময় এসে৷ আর এনআইএ স্থানীয় পুলিশকে জানিয়েছে ভোর সাডে় ৫টায়৷ মেয়েদের হেনস্থাও করল৷ পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘মোদিবাবু যদি মনে করেন, সবই জমিদারি, কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁদের, তা হলে ভুল করছেন৷ আমরা কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷ দাবি করেছি, এখনই চার সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক৷ যাতে বিজেপি ওঁদের খেলার যন্ত্র ভাবতে না পারে৷’ এখানেই শেষ নয়! ঝড়বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে ঘরের দাবিও করেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল৷ এ প্রসঙ্গে দোলা সেন বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আদর্শ আচরণবিধি ভাঙেননি৷ বলেননি, আমি ঘর করব৷ তিনি বলেন, প্রশাসন করবে৷’