দিল্লি, ৪ এপ্রিল – কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বৃহস্পতিবার দলের সমস্ত পদ এবং প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিলেন৷ এক্স হ্যান্ডলে গৌরব লিখেছেন, ‘কংগ্রেস দল আজ যে দিশাহীনতার পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না৷’ মল্লিকার্জুন খাড়গেকে লেখা চিঠিতে তাঁর বক্তব্য, ‘আজ আমি ব্যথিত, দুঃখিত৷ অনেক কথা বলার ছিল৷ আমার সংস্কার আমাকে বাধা দিচ্ছে৷ কিন্ত্ত সত্য গোপন করা অনুচিত৷” তাঁর বক্তব্য,”আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম মানুষের কথা বলতে৷ কিন্ত্ত দল এখন যে দিশাহীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এতে আমি স্বচ্ছন্দ নয়৷ ‘ এরপর দিল্লির বিজেপি সদর দফতরে হাজির হন এআইসিসির সদ্য-প্রাক্তন মুখপাত্র গৌরব বল্লভ৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওডে়র উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তিনি ৷
রাহুল গান্ধি -মল্লিকার্জুন খাড়গের দলের বিরুদ্ধে হিন্দুবিরোধী আচরণের অভিযোগ তুলেছেন গৌরব৷ লিখেছেন, ‘‘আমি সনাতন ধর্ম বিরোধী স্লোগান তুলতে পারি না৷ দেশের সম্পদ সৃষ্টিকারীদের কুকথা বলতে পারি না৷ আমি কংগ্রেস পার্টির সমস্ত পদ এবং প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি৷’’
বছর তিনেক আগে বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে নিশানা করার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়৷ গত বছর হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরে মোদির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানিকে নিয়ে এআইসিসির সাংবাদিক বৈঠকে সরব হন তিনি৷ কংগ্রেসের বহু শীর্ষপদে কাজ করেছেন গৌরব বল্লভ৷ দলের টিকিটে ভোটে লড়েছেন৷ সেই গৌরব বল্লভও এবার কংগ্রেস ছাড়লেন৷ তাঁর স্পষ্ট জবাব, ‘সনাতন ধর্ম বিরোধী কোনও স্লোগান তুলতে পারব না৷’ দল ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পরই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি৷
অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন গৌরব বল্লভ৷ কংগ্রেসের হাত ধরেই তাঁর রাজনীতিতে আসা৷ এর আগে কংগ্রেসের টিকিটে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর এবং রাজস্থানের উদয়পুরে ভোটে লড়েও দুবারই হেরে যান৷ এবার গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে নতুন পথ চলা শুরু গৌরব বল্লভের৷ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তিনি বলেন, ‘‘চিঠিতে আমি আমার হৃদয়ের ব্যথা প্রকাশ করেছি৷ যেভাবে অযোধ্যায় ভগবান রামের মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাওয়ার পরেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, আমার পক্ষে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়৷ আমি আজ বিজেপিতে যোগ দিয়েছি এবং আশা করি ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমি আমার ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করতে পারব৷’’
গৌরবের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অনিল শর্মাও৷ গত মাসে পূর্ণিয়ার ‘বাহুবলী’ প্রাক্তন সাংসদ পাপ্পু যাদব কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরেই প্রতিবাদে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি৷