• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

জোট প্রধানমন্ত্রী

তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি৷ নবগঠিত সরকার মোটেই মোদি সরকার নয়, জোট শরিকদের সরকার বলে মন্তব্য করেছে বিরোধীরা৷ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এনডিএ’কে তির্যকভাবে বলা হয়েছে, ‘নরেন্দ্র ডেস্ট্রাকটিভ অ্যালায়েন্স’৷ বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় মোদি হলেন ‘নরেন্দ্র ধ্বংসাত্মক জোট’-এর নেতা৷ একই সঙ্গে ‘নেতৃত্ব দেওয়ার যাবতীয় বৈধতা হারিয়েও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছেন মোদি’ বলেও মন্তব্য করেছে

তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি৷ নবগঠিত সরকার মোটেই মোদি সরকার নয়, জোট শরিকদের সরকার বলে মন্তব্য করেছে বিরোধীরা৷ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এনডিএ’কে তির্যকভাবে বলা হয়েছে, ‘নরেন্দ্র ডেস্ট্রাকটিভ অ্যালায়েন্স’৷ বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় মোদি হলেন ‘নরেন্দ্র ধ্বংসাত্মক জোট’-এর নেতা৷ একই সঙ্গে ‘নেতৃত্ব দেওয়ার যাবতীয় বৈধতা হারিয়েও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছেন মোদি’ বলেও মন্তব্য করেছে কংগ্রেস৷ আর সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ সিং যাদব পরিষ্কার বলেছেন, ‘এই সরকারের ভবিষ্যৎ সুতোর উপরে ঝুলছে৷’ আর আরজেডি মনে করে, এটা মোটেই মোদি সরকার নয়৷ আপ কটাক্ষ করেছে ‘সবচেয়ে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী’ বলে৷

কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মনে করেন, ‘মোদির ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয় হয়েছে৷’ এর সঙ্গেই বিজেপির গতবারের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ আসন হারানোকে কটাক্ষ করে জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘‘৩০৩ থেকে ৩৪০-এ নেমে গিয়ে সমস্ত বৈধতা হারিয়েও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি৷ এ কারণেই মোদিকে ‘নরেন্দ্র ডেস্ট্রাকটিভ অ্যালায়েন্সের’ নেতা বলা যায়৷’’

ধনকুবেরদের প্রতি মোদির ‘দরদি’ মনোভাব নিয়েও তির্যক মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র৷ ‘ধনকুবের কর’ বসানো নিয়ে যে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ চলছে তাতে ভারতের অর্থমন্ত্রী কি সমর্থন জানাবেন? এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের পাশে না ধনকুবেরদের পাশে দাঁড়াবেন, তাও জানতে চেয়েছেন জয়রাম রমেশ৷ কালো টাকা উদ্ধারের মতো প্রগতিশীল উদ্যোগে ভারত সামিল হবে কিনা, তাও জানতে চান তিনি৷ এ প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডেলে রমেশ লিখেছেন, ‘চলতি বছরে এক-তৃতীয়াংশ প্রধানমন্ত্রীর একটা সুযোগ থাকবে যে তিনি ধনকুবেরদের পাশে দাঁড়াবেন না সাধারণ মানুষের! ব্রাজিলে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ধনকুবেরদের ওপর ‘আন্তর্জাতিক নূ্যনতম কর’ বসানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা৷ ওই করকে ইতিমধ্যে সমর্থন করেছেন ব্রাজিল, ফ্রান্স, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জার্মানির অর্থমন্ত্রীরা৷

সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ সিং যাদব তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে নয়া এনডিএ সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘উপর সে কোই তার নেহি, নিচে কোই আদার নেহি, আধার মে জো লটকি হোই হ্যায় ও তো কোই সরকার নেহি’৷ অর্থাৎ এই সরকারের ভবিষ্যৎ সুতোর ওপর ঝুলছে৷ তাই একে মোদি সরকার বলা যাবে না৷ কারণ এই সরকারের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে শরিকদের ওপর৷ বিশেষ করে জনতা দল (ইউ) এবং তেলুগু দেশমের (টিডিপি) সমর্থনের ওপর নির্ভর করছে মোদি কতদিন প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন৷

আরজেডি নেতা মনোজ ঝা বলেছেন, ‘বহুদিন বাদে কেন্দ্রে ফের জোট সরকার৷ মোদি সরকার নয়, গঠিত হল এনডিএ সরকার৷ আশা করছি এজন্যই এবার সমাজে মেরুকরণ কম ঘটানো হবে৷ দুর্বল অংশের মানুষের উন্নতি হবে এবং সরকার এবার ধান্দাবাজ পুঁজির মালিক ও দালালদের হাত থেকে মুক্ত হবে৷ যুব সম্প্রদায়ের কাছে এখন সবচেয়ে বড় বিষয় হল কর্মসংস্থান৷ ফলে সবচেয়ে বড় ইসু্য কর্মসংস্থান নিয়েই শরিকরা চাপ সৃষ্টি করবে নরেন্দ্র মোদির ওপর৷

আপ নেতা অলকা লাম্বা মনে করেন, তৃতীয়বার এসে সবচেয়ে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি৷ দল হিসাবে গরিষ্ঠতা অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি৷ ৪০০ পারের হুঙ্কার দিয়েছিলেন যে নেতা, তাঁর দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল না৷

তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি৷ তবে এককভাবে নয়, শরিকদের সাহায্য নিয়ে৷ ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ছাড়া আর কেউ টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হননি৷ তবে মোদির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলো, দু’টি দফায় সরকার চালানোর পর নেতা হিসেবে এবার গরিষ্ঠতা এনে দিতে পারেননি মোদি৷ এবারে তাঁকে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে হচ্ছে৷ মোদি সরকার থেকে এবারে এনডিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি৷ গুজরাতের ১৩ বচরের মুখ্যমন্ত্রী হোন বা ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালিয়েছেন মোদি৷ কোনও জোট সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা তাঁর নেই৷ এবারে তাঁকে সেই কঠিন কাজটি করতে হবে৷