• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

‘কয়লা মাফিয়ারা বিজেপি ইমিউনিটি পান’ শাহের সঙ্গে কয়লা মাফিয়ার ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে সরব শশী, অরূপ

নিজস্ব প্রতিনিধি— কয়লা মাফিয়াদের সাথে বিজেপির উচ্চস্তরের নেতৃত্বদের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি! এমনই অভিযোগ তুলছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস৷ অন্ডাল এয়ারপোর্টে অমিত শাহকে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন ‘কয়লা মাফিয়া’৷ তাঁর হাত থেকে পদ্মফুলও নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ সেই ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে প্রকাশ করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ‘কয়লা মাফিয়া’ বলেই চিহ্নিত করেছে তৃণমূল৷ শুক্রবার কৃষ্ণগঞ্জ, রামপুরহাট এবং রানিগঞ্জ রাজ্যের তিন

নিজস্ব প্রতিনিধি— কয়লা মাফিয়াদের সাথে বিজেপির উচ্চস্তরের নেতৃত্বদের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি! এমনই অভিযোগ তুলছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস৷ অন্ডাল এয়ারপোর্টে অমিত শাহকে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন ‘কয়লা মাফিয়া’৷ তাঁর হাত থেকে পদ্মফুলও নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ সেই ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে প্রকাশ করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ‘কয়লা মাফিয়া’ বলেই চিহ্নিত করেছে তৃণমূল৷ শুক্রবার কৃষ্ণগঞ্জ, রামপুরহাট এবং রানিগঞ্জ রাজ্যের তিন জায়গায় সভা ছিল শাহের৷ রানিগঞ্জের সভা সেরে অন্ডাল এয়ারপোর্ট থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ তৃণমূলের অভিযোগ, অন্ডাল এয়ারপোর্টে শাহকে যে ১৬ জন বিজেপি নেতা বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন জয়দেব খান, লক্ষ্মণ ঘরুই৷ রানিগঞ্জ বিধানসভার বক্তানগরের বাসিন্দা এই জয়দেব একজন কয়লা মাফিয়া বলেও অভিযোগ তুলেছে শাসকদল৷ ইতিমধ্যেই ভারতীয় জনতা পার্টির লেটারহেডে ওই ১৬ জন বিজেপি নেতার নাম সহ একটি তালিকার চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে৷ তার তলায় সই রয়েছে বিজেপি আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের৷ সেই চিঠিতেই দেখা গিয়েছে ওই তালিকায় চার ও পাঁচ নম্বরে যথাক্রমে নাম রয়েছে লক্ষ্মণ ও জয়দেবের৷

শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এর বিরুদ্ধেই সরব হন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র শশী পাঁজা এবং রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী৷ শশী বলেন, “এঁরাই ২০২১ সালে যখন বিজেপি দুশো পাড়ের কথা বলেছিলো তখন দিলীপ ঘোষের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন৷ এঁরা কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া, কয়লা সংক্রান্ত যেকোনো বেআইনি কার্যের সঙ্গে যুক্ত৷ শুধু তাই নয়, পূর্বেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর সঙ্গে প্রয়াত কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাঁ এর ঘনিষ্ঠতা ছিল৷ সুতরাং বিজেপির সঙ্গে কয়লা মাফিয়াদের পূর্ব পরিচয় রয়েছে৷ মানুষ অপরাধ করলে জেলে যায়, কিন্ত্ত এখন অপরাধীরা বিজেপি ওয়াশিং মেশিনে যান৷” অরূপ বলেন, “কয়লা মাফিয়ারা বিজেপি ইমিউনিটি পান৷ কয়লা সিআইএসএফের নিয়ন্ত্রণাধীন, এবং সিআইএসএফ পরিচালনার দায়িত্ব অমিত শাহের৷ রানীগঞ্জ অঞ্চলের কয়লা খনিগুলি যে সিআইএসএফ নিয়ন্ত্রণ করেন, সেখানের কোন অফিসারের ক্ষমতা হবে পরের দিন সেই ব্যক্তিকে কয়লা পাচার থেকে আটকানোর যিনি খোদ বিজেপির নেতা হিসেবে অমিত শাহকে বিদায় জানিয়ে ফুল দেন৷” এমনকি এই কয়লা মাফিয়াদের সাথে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সাথে মিটিং এর একাধিক ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, দাবি অরূপের৷ তাঁর ভাষায়, “বার্তা খুব স্পষ্ট, কয়লা মাফিয়াদের মাথার ওপর অমিত শাহ তথা বিজেপির সরাসরি হাত রয়েছে৷ এবং বিজেপি নেতৃত্বরাই এ রাজ্যে এসে একটি ন্যারেটিভ তৈরি করেন, কয়লা-বালি-গরু৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মদত না থাকলে এবং ওঁনার সংস্থার কড়াকড়ি থাকলে কয়লা মাফিয়াদের এতো বাড়বাড়ন্ত হত না৷”

পাশাপাশি এদিন সন্দেশখালি ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছেন শশী, অরূপ৷ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ভুল বুঝিয়েছে বিজেপি, এটি একদিকে যেমন লজ্জাজনক তেমনি অবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনা, মন্তব্য শশীর৷ এ প্রসঙ্গে শশী আরও বলেন, মমতা বন্দোপাধ্যায়কে জানানো হবে যে সন্দেশখালির মহিলারা রাষ্ট্রপতিকে সত্যটা জানাতে চান৷ দলনেত্রী অর্থাৎ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সাথে কথা বলে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে পারে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল৷ সন্দেশখালির আসল চিত্র রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরতেই তৃণমূলের এই পরিকল্পনা৷ পাশাপাশি এদিন অমিত শাহের বিরুদ্ধেও তোপ দেগে শশী বলেন, “সন্দেশখালির মহিলারাদের মান, ইজ্জত বিজেপি নির্দিষ্ট দামের বিনিময়ে বেচে দিয়েছে৷ অমিত শাহ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বদের এই কাজ করার জন্য শাসন করবেন না? রাজ্যে এসেও তিনি এ বিষয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করলেন না, ক্ষমা চাইলেন না৷” বসিরহাট লোকসভায় তৃণমূল দু-আড়াই লক্ষের ব্যবধানে জয়যুক্ত হবে, দাবি অরূপের৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গঙ্গাধর কয়াল নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে, স্টিং ভিডিওতে তিনিই আছেন৷ পরক্ষণে তাঁকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গল্প শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেকারণেই এখন তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে বিষয়টি থেকে চোখ ফেরাতে চাইছেন৷ আসলে এই ইডি, সিবিআই হলো বিজেপির অপরাধীদের রক্ষাকবচ৷ বাংলায় নারী উন্নয়ন জোরদার হয়েছে তাই বিজেপি চক্রান্ত করেই এই নারী উন্নয়নে আঘাত হানতে চেয়েছিলো৷ এই আক্রমণের তীরেই শশী এবং অরূপ বিঁধেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে৷ তাঁদের ভাষায়, রাজভবনে কেন এনএসজির রোবট নামানো হলো না? কটাক্ষের সুরে অরূপ বলেন, “এনএসজির রোবট নামানো হলে রাজ্যপালের ইমিউনিটি বিপদে পড়ে যেত৷” তাঁর আরও সংযোজন, “একজন নির্যাতিতার পরিচয় জনসমক্ষে এনে তিঁনি চূড়ান্ত অপরাধ করেছেন৷ রাজ্যপালের উচিৎ পদত্যাগ করা৷ সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকা মানেই তিঁনি আইনের উর্দ্ধে নন৷ এনডি তিওয়ারির মামলা দেশ ভুলে যায়নি৷ এই প্রত্যেক অপরাধী জেলে যাবে৷” রাজ্যপাল কেন গোটা দিনের ফুটেজ এবং করিডর ও চেম্বারের ফুটেজ দিলেন না, সেই প্রসঙ্গও উত্থাপন করে বোসকে আক্রমণ অরূপের৷ পাশাপাশি মনিপুর, হাথরাস, উন্নাও এর ঘটনা, বিজেপি নেতৃত্ব প্রজওয়াল রেভান্না, ব্রিজভূষণ প্রমুখের প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন অরূপ৷