• facebook
  • twitter
Friday, 18 October, 2024

পরা‘জয়ে’র উদযাপন মোদির, বিভ্রান্তির চরমে গদি-মিডিয়া

সুরঞ্জন আচার্য লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর ৪ তারিখ রাতেই বিজয় উদযাপনের জনসভার আয়োজন করল বিজেপি৷ মূল বক্তা অবশ্যই নরেন্দ্র মোদি৷ মোদির বক্তব্য, সেই নেহরুর পরে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী বা তার দল পরপর তিনবার ক্ষমতার চাবিকাঠি পেল৷ বিজেপির কর্মকুশলতায় ভারতবাসী ঢেলে ভোট দিয়ে জিতিয়েছে তাঁকে৷ এবার তৃতীয়বারের সরকার গড়ার পালা৷ সত্যিই কি ভারতবাসী ঢেলে

সুরঞ্জন আচার্য

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর ৪ তারিখ রাতেই বিজয় উদযাপনের জনসভার আয়োজন করল বিজেপি৷ মূল বক্তা অবশ্যই নরেন্দ্র মোদি৷ মোদির বক্তব্য, সেই নেহরুর পরে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী বা তার দল পরপর তিনবার ক্ষমতার চাবিকাঠি পেল৷ বিজেপির কর্মকুশলতায় ভারতবাসী ঢেলে ভোট দিয়ে জিতিয়েছে তাঁকে৷ এবার তৃতীয়বারের সরকার গড়ার পালা৷ সত্যিই কি ভারতবাসী ঢেলে ভোট দিয়েছে বিজেপিকে? ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি একাই পেয়েছিল ২৮২টি আসন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে ১০টি বেশি৷ ফলে সরকার গঠনের জন্য এনডিএ-র অন্য দলগুলোর মুখাপেক্ষী হবার প্রয়োজন ছিল না৷ আবার ২০১৯-এ সেই সংখ্যা বেড়ে হল ৩০৩৷ নিঃসন্দেহে বিশাল জয়৷ আর এবার বিজেপির ভাগে মাত্র ২৪০, সরকার গড়ার জন্য চাই আরো অন্তত ৩২৷ তাহলে কিভাবে বিজেপির জয় হল?

গত দশ বছরে নরেন্দ্র মোদি কিংবা বিজেপির কেন্দ্রিয় নেতৃত্বের মুখে এনডিএ-র নাম শোনা যায়নি৷ না শোনারই কথা৷ যে দল একার ক্ষমতায় লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্টতা পেয়ে বসে আছে, তারা আবার জোটসঙ্গীদের কথা বলবে কেন? আর বিজেপি তো চিরকালই মুখে অন্তত মিলি-জুলি সরকারের বিরুদ্ধে৷ মিলিজুলি সরকার মানেই দুর্বল, অক্ষম সরকার, বিজেপি তেমনটাই বলে আসে৷ কিন্ত্ত এবার বিজেপিকে সেই মিলিজুলি সরকারই গঠন করতে হবে৷ লোকসভা ভোটের প্রচার শুরুর মুখে বিজেপি নেতৃত্বও বিশ্বাস করেছিলেন, এবারও তারা ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন৷ তাই এনডিএ-র নামকীর্তন শুরুতে শোনা যায়নি৷ শোনা গেল দ্বিতীয় দফার ভোটের পরে৷ কারণ বিজেপি নেতৃত্ব তখনই বুঝে গেছেন হাল এবারে খারাপ৷ তাই এনডিএ-র রামনাম ফের শোনা গেল৷ সেই সঙ্গে নির্লজ্জ সাম্প্রদায়িক প্রচার৷

৪ তারিখ রাতের উদযাপন সভায় নরেন্দ্র মোদি উন্নয়ন, পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন৷ ভাল কথা৷ গত ১০ বছরে সেই আলোচনাগুলো কোন তাকে তুলে রাখা ছিল? পাকিস্তানের মাজা ভেঙে দেওয়া বা চিনকে টাইট দেওয়ার কাহিনী ছাড়া মহাবলী নরেন্দ্র মোদির আর কোন সাফল্য প্রচারের আলোয় এসেছিল? আসার কথাও নয়৷ ১০ বছরে গোটা দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি৷ একদা তার শ্লোগান ছিল, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা৷ বাস্তবে দেখা গেল তার দুই পরম মিত্র আদানি-আম্বানি যাতে গুছিয়ে দেশের যাবতীয় সম্পদ খেয়ে ফেলতে পারে, তার জন্যই তিনি উদগ্রীব৷ আর সাধারণ দেশবাসীর ভাতরুটির থালায় যাতে টান পড়ে, সেই বন্দোবস্তও তিনি করে ফেলেছেন৷ এভাবেই তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন৷

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচার শুরু হতে না হতেই একটা খটকা লেগেছিল৷ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে, নাকি লোকসভার! একটাও জাতীয় ইসু্যও আসছে না টিভি চ্যানেলের গালিগালাজের আসরে৷ সবটাই বঙ্গীয় দুর্নীতি, বঙ্গীয় সন্ত্রাস৷ কেন? উত্তর পেতে সময় লাগল না৷ গেরুয়া শিবিরের হাতে প্রকাশ্যে বলার মত কোনও তাস নেই৷ হোয়াটস অ্যাপের গোপন বার্তায় যা যা নির্দ্বাধায় বলা যায় কিংবা চায়ের আড্ডায়, সেগুলো প্রকাশ্য তর্জায় যে বলতে নেই, সেটা নিতান্ত গণ্ডমুর্খও বোঝে৷ তাই আপ্রাণ চেষ্টা যাতে রাজ্য বা রাজ্য সরকার সংক্রান্ত বিষয়গুলোই কেবল আলোচনায় উঠে আসে৷ পশ্চিমবঙ্গের প্রায় যাবতীয় টেলি-মিডিয়া এই কাজটা করে গেছে৷ বিনিময়ে তারা নিশ্চিত উপঢৌকণও পেয়েছে৷ কিন্ত্ত স্পষ্টতই তারা প্রতারণা করেছে আপামর দর্শকদের সঙ্গে৷

একটা বিষয় পরিষ্কার৷ আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, গ্যাস-কয়লার দাম, উজালা কানেকশন নিয়ে গরীব মানুষের নাজেহাল দশা, বেকারি, কৃষক আন্দোলন, ইলেক্টরাল বন্ড ইত্যাদি বিষয়গুলোকে মিডিয়া যতই চেপে যাক না কেন, মানুষ হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন ৫৬ ইঞ্চির হাতযশ কী৷ পাশাপাশি, চরম ঔদ্ধত্ব, কথায় কথায় সংবিধানকে নস্যাৎ করে দেওয়া, গা-জোয়ারিভাবে সরকারি কাঠামোকে কুক্ষিগত করে ফেলার প্রসঙ্গগুলো তো আছেই৷ সাধারণভাবে ভারতীয় জনতা এগুলোকে মেনে নিতে পারেননি৷ নিঃসন্দেহে বিজেপিও জানত৷ এই কারণেই বিষয়গুলোকে যেন সামনে না আনা হয়, সেই নির্দেশ ছিল৷ গোটা দেশজুড়েই প্রায় কোনো টেলি-মিডিয়া সরকারের ব্যর্থতাকে প্রশ্ন করেনি৷ উলটে ‘অব কি বার চারশ পার’ শ্লোগানকে ভিত্তি করে অনুসন্ধানের গাঁজাখুরি চালিয়েছে, সত্যিই কি চারশর কোটা পার করতে পারবে!

দেশজুড়ে প্রায় সমস্ত মিডিয়া যখন এই কাজেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন কিছু মানুষ যে প্রভাবিত হবেন, সেটাই স্বাভাবিক৷ বিজেপি চারশ পার করতে পারবে কিনা, গোটা আলোচনা যখন এখানেই সীমাবদ্ধ থাকে, তখন নিশ্চিতভাবেই এমন একটা ধারণা গড়ে তোলা হয় যে চারশ হোক আর নাই হোক, জিতছে বিজেপিই৷ সেই হিসাবে এবারের নির্বাচনে বিজেপি যদি প্রধান প্রতিপক্ষ হয়, গদি মিডিয়াও তার সঙ্গেই থাকবে, গায়ে গা জড়িয়ে৷ অর্থাৎ বিরোধীদের বিজেপি এবং মিডিয়া, দুই প্রতিবন্ধকের বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হয়েছে৷ এমনটা কিন্ত্ত এর আগে দেখা যায়নি৷ সেই সঙ্গে ইলেকশন কমিশন৷ নির্বাচনের কিছুদিন আগেই কেন্দ্রিয় সরকার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের চিরাচরিত পদ্ধতি বদলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ভূমিকা খারিজ করে দিল৷ স্পষ্টতই ইলেকশন কমিশন যাতে তাদের তাঁবেদার হয়েই থাকে, সেটাই ছিল উদ্দেশ্য৷ আর হলও তাই৷ নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রদায়িক প্রচারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ পেয়েও ইলেকশন কমিশনের ঘুম ভাঙল না৷ পশ্চিমবঙ্গে অভিজিৎ গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে হাই কোর্টকে বিরক্তি প্রকাশ করতে হল কমিশনের অকালনিদ্রা নিয়ে৷

মিডিয়ার আরো বেইজ্জতি হয়েছে একজিট পোল নিয়ে৷ লাইন দিয়ে সবাই প্রায় একসুরেই যে পরিসংখ্যান দিয়ে গেছে, বোঝাই যায় সবটাই স্ক্রিপ্টেড৷ আরো মজা আছে৷ হিমাচলে চারটে আসন৷ কয়েকটি মিডিয়া সেখানেও বিজেপির নামে ৮ থেকে ৯টি আসন বরাদ্দ করে দিল৷ তামিলনাড়ুতে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছিল ৯টি আসনে৷ আর তাদের ভাগে দেওয়া হল ১৫টি আসন৷ পশ্চিমবঙ্গের এমন একটি টেলি-মিডিয়া ভোট শেয়ারের যে অঙ্ক দেখালেন, তাতে মোট শতাংশ হয়ে গেল ১০৬৷ এমন গাঁজাখুরি হিসাব সাম্প্রতিককালে আর দেখা যায়নি৷ অবশ্য মিডিয়ারও কিছু করার ছিল না৷ একবার যখন গিলেছে, তার দাম তো দিতে হবেই৷ গদি-মিডিয়া নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে আগেই৷ এখন তার মিডিয়া শব্দটা ব্যবহারের যোগ্যতাও আর রইল না৷ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হল এটাই৷

তাহলে কি বিজেপি জিতল? না, নৈতিকতার কোনো প্রশ্ন এখানে তোলার কোনো মানে হয় না৷ রাজনৈতিক দাবাখেলায় আর যাই হোক নৈতিকতার কোনো স্থান নেই৷ কিন্ত্ত চক্ষুলজ্জার? স্পষ্টতই পরপর দুবার একক-সংখ্যাগরিষ্ট দল যখন মিলি-জুলি সরকার গড়ার দিকে এগোচ্ছে, তখন দায় স্বীকারের কোনো নু্যনতম প্রয়াস থাকবে না? হারেরও উৎসব হবে? সেখানে প্রধানমন্ত্রী বুক বাজিয়ে বলবেন তিনিই জিতেছেন! আরেকটা লক্ষণ কিন্ত্ত খুব মজাদার৷ ৪ তারিখ বিকেলে যখন বোঝা গেল এনডিএ ৩০০-র নিচে আটকে যাবে, যাবতীয় সর্বভারতীয় টেলি-মিডিয়ায় নরেন্দ্র মোদির পরিবর্তে উঠে এল জে পি নাড্ডার ছবি৷ অর্থাৎ জিতলে হাততালি নরেন্দ্র মোদির, হারলে দায় অন্য কারো৷ নরেন্দ্র মোদির এই আত্মসর্বস্ব মানসিকতা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে খুব একটা দেখা যায়নি৷ ইন্দিরা গান্ধিও পরাজয়ের দায় নিয়েছিলেন৷ নরেন্দ্র মোদি হারকেও জয় বলে প্রতিপণ্ণ করতেই অভ্যস্ত৷

কিন্ত্ত পশ্চিমবঙ্গে এমন ফলাফল কেন? উত্তরটা খুব পরিষ্কার৷ বিজেপি যেসব অস্ত্রকে ভেবেছিল ট্রাম্প কার্ড, সেগুলোই বু্যমেরাং হয়ে গেছে৷ ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা নিয়ে বিজেপি নেতারা সভায় যে হুঙ্কার দিতেন, সেটাই তাদের পায়ের তলার মাটি সরিয়ে দিয়েছে৷ আর অবশ্যই সন্দেশখালি৷ সন্দেশখালির জমি ও ভেড়ি মাফিয়া শাজাহান ও তার দলবলের বিরুদ্ধে যে অরাজনৈতিক আন্দোলনের সূত্রপাত, তাকে দখল করার জন্য এমন এক অভিযোগের জন্ম দেওয়া হল, যার প্রত্যাঘাত সামলানো যায়নি৷ বাস্তবত এই আন্দোলনকে হাইজ্যাক করার জন্য বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন৷ কিন্ত্ত গণধর্ষণের অভিযোগের কোনো সারবত্তা গদি-মিডিয়া ছাড়া আর কেউ পায়নি৷ এমনকি সন্দেশখালির প্রাক্তন বাম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারও মানেননি৷ কিন্ত্ত বিজেপি তার উপরেই নির্ভর করেছিল৷ পরিণাম যা হবার, তাই হয়েছে৷ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়েও কম বিদ্রূপ হয়নি৷ কিন্ত্ত গোটা দেশের অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষের কাছে মাসে পাঁচশ-হাজার টাকার মূল্য যে কী, সেটা এমনকি বামপন্থীরাও বোঝেননি৷ অথচ তারাই নাকি বেকার ভাতা, বিধবা ভাতার জন্মদাতা৷ জনগণকে ভিখারী বলে গাল দিয়ে গায়ের জ্বালা মেটাতে পারেন, বাস্তবতাকে বুঝতে পারবেন না৷

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি অনেকটাই প্রাক্তন বামপন্থী ভোট আর মিডিয়ার হাওয়ার উপর দাঁড়িয়েছিল৷ সম্ভবত তাদের নেতারাও সেটা বোঝেননি৷ তাই বিস্তর বাকতাল্লা করেছিলেন৷ যে মুহূর্তে খানিকটা হলেও বামপন্থী ভোট আবার পুরনো জায়গায় ফিরল, বেলুন গেল চুপসে৷ দুটি স্পষ্ট উদাহরণ আছে৷ বাম থেকে রাম হয়ে বাম তত্ত্বের গুছিয়ে প্রয়োগ হয়েছিল বাঁকুড়া আর ব্যারাকপুরে৷ এবার দুই জায়গাতেই সেই তত্ত্বের যারা প্রধান খুঁটি, তাদের পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ পরিণামে দুই জায়গাতেই জেতা আসন বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে৷ আরেকটা কথা এই প্রসঙ্গে মাথায় রাখতে হবে৷ মমতা ব্যানার্জী খুব ভালই জানেন, উল্টোদিকে বিজেপির পালে হাওয়া দিলে তৃণমূলেরই সুবিধা৷ তিনিও সেই কায়দাটাই নিয়েছেন৷ আর ফল তো দেখাই যাচ্ছে, ২০২১-এর পরে আবার ২০২৪৷ কাজেই বিজেপির অস্ত্র দিয়ে তৃণমূলকে উৎখাত করার স্বপ্ন যারা দেখেন, তাদের ভবিষ্যতেও আঙুল কামড়াতে হবে৷

হঁ্যা, চরম নেগেটিভ ভোটিং-এর মধ্যেও একটা শুভ বার্তা অবশ্যই আছে৷ রাহুল গান্ধির ক্রমপরিণতি৷ সেই নোটবন্দীর সময় থেকে যেভাবে লাগাতার তিনি মানুষের কাছে বার্তা দিয়ে আসছেন, গোটা দেশে এমন একজনকেও দেখতে পেলাম না, খানিকটা অখিলেশ যাদব ছাড়া৷ বিজেপির নির্দেশে মিডিয়া তার গায়ে ‘পাপ্পু’ছাপ্পা লাগিয়ে রেখেছে৷ কিন্ত্ত সেই পাপ্পুই এবার কামাল করে দিয়েছে৷ গোটা পার্টি বিধ্বস্ত, কবে কখন ঘরে এজেন্সি হামলা হবে এই ভয়ে নেতারা কাঁপছে, সংগঠন গোল্লায়, এমন একটা পরিস্থিতিতে প্রায় একার হাতে লড়েছেন রাহুল৷ আর মিডিয়ার নীরবতা স্বত্তেও ইসু্যগুলোকে দেশের একটা বড় অংশে পৌঁছে দিয়েছেন৷ এরপরেও বলতে হবে রাহুলের লিডারশিপ এলিমেন্ট নেই! না থাকলে, আর দরকার নেই৷ এতেই চলবে৷

একজনের জয়ে আমি খুব খুশি, মহুয়া মৈত্র৷ পার্লামেন্টে যে ধারালো ভাষায় আক্রমণ করতেন, অসাধারণ৷ নিজের বক্তব্য পেশের উপযুক্ত সুযোগ না দিয়েই তার সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছিল৷ মহুয়া মৈত্রের জয় এই প্রসঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ অধীররঞ্জন চৌধুরী পরাজিত হলেন৷ লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং পিএসির চেয়ারম্যান হিসাবে তবে পার্লামেন্টে তার বড় ভূমিকা ছিল৷ তবে তৃণমূল-বিজেপি তো বটেই, সম্ভবত কংগ্রেসের কেন্দ্রিয় নেতৃত্বও তার জয় চায়নি৷ সেই হিসাবে অধীররঞ্জন চৌধুরী আসলে ট্র্যাজিক নায়ক৷ সবশেষে বলতে হবে ফৈজাবাদের ফলের কথা৷ রামমন্দির গড়ে তোলা হয়েছে এই ফৈজাবাদ আসনের অযোধ্যাতেই৷ রামন্দির নাকি দেশে হিন্দু স্বাভিমান প্রতিষ্ঠার সবথেকে বড় প্রমাণ৷ সেখানেই পরাজিত হল বিজেপি৷ আর এভাবেই প্রমাণ হয়ে গেল, ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে মানুষের পেটের জ্বালাকে চাপা দেওয়া যায় না৷