কী ঘটেছিল অভিশপ্ত রাতে, জানতে সরেজমিনে সিবিআই

আরজিকর ধর্ষণ এবং খুন কাণ্ডে হাইকোর্টের নির্দেশ মতো বুধবার সকাল থেকে ময়দানে নামল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এদিন সকালে দিল্লি থেকে দিল্লি থেকে আসে সিবিআইয়ের বিশেষ দল। সূত্রের খবর, সেই দলের মধ্যে রয়েছেন এ রাজ্যেরও এক আধিকারিকসহ রয়েছেন পঁচিশ জন। একই সঙ্গে রয়েছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞরাও।

বুধবার সকালে দিল্লি থেকে এসে প্রথমেই আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের এমারজেন্সি বিভাগের সেমিনার হলে যান তারা। সেমিনার হল খতিয়ে দেখা হয়। সংগ্রহ করা হয় নমুনাও। সূত্রের খবর, সেই সময় ঘটনাস্থলে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের। তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হয় বলেই খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তের যাবতীয় নথি তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের হাতে। যার মধ্যে রয়েছে মৃত এবং ধৃতের মোবাইল, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় ধৃতের হেডফোন, মৃতার ময়নাতদন্তের রিপোর্টসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে রাতেই টালা থানা থেকে সিবিআই আধিকারিকরা চার্জশিট সংগ্রহ করেন। তারপর বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় পুরোদস্তুর তদন্ত। পাশপাশি, পুলিশ হেফাজত থেকে সকালেই ধৃত সঞ্জয় রায়কে নেওয়া হয় সিবিআই হেফাজতে। তারপর ধৃত সঞ্জয়ের শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে। তবে সেখানে সঞ্জয়কে দেখেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকতেন চিকিৎসকরা। ফলে সঞ্জয়কে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে সেনার নির্দিষ্ট নিয়ম থাকার কারণে ধৃতের শারীরিক পরীক্ষা করাতে ব্যার্থ হন সিবিআই আধিকারিকরা। পরে শিয়ালদহ বি আর সিংহ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয় তাঁর। সূত্রের খবর, সমস্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় এবং ধৃতের শারীরিক পরীক্ষা করানোর পর শুরু হয় জেরা। পাশাপাশি, মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। মৃত চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন তারা।


প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার গভীর রাতে ধর্ষণ করে খুন করা হয় আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া চিকিৎসককে। ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। তবে পুলিশি তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। ফলে আরজিকর কাণ্ডের তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। ঠিক কী কারণে খুন, খুনের সময় ধৃতের সঙ্গে আর কেউ ছিল কিনা, তা এবার খুঁজে দেখবে পঁচিশ জনের তদন্তকারী দল।