নিজস্ব প্রতিনিধি— মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই রিপোর্ট জমা দিল৷ গত ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়েছে সিবিআই৷ সেই রিপোর্টেও ব্যাপক দুর্নীতির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷ ওই বছর টেটে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলেই রিপোর্টে জানিয়েছে সিবিআই৷ সিবিআইয়ের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়োগ তালিকার বাইরের প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, অকৃতকার্যপরীক্ষার্থীদের নিয়োগও হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই৷ এই রিপোর্টের ভিত্তিতে পর্ষদের কাছে উত্তর চেয়েছিল আদালত৷ কিন্ত্ত মঙ্গলবার রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারেনি পর্ষদ, আদালতের তোপের মুখে পডে়ছে তাঁরা৷
তবে এই মুহূর্তে রিপোর্ট দিতে হচ্ছে না পর্ষদকে৷ কারণ প্রায় দু মাস পিছিয়ে গেছে ২০১৪ প্রাথমিক টেট মামলার সিঙ্গল বেঞ্চের শুনানি৷ মামলার পরবর্তী শুনানিতে সিবিআই রিপোর্টের ভিত্তিতে হলফনামা দিতে হবে সব পক্ষকে৷ ২০১৪ সালের টেটে কারচুপির অভিযোগে রাহুল চক্রবর্তী সহ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন৷ সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই খারিজ করে দেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন৷ তাঁর নির্দেশ ছিল, সিবিআই-কে ওএমআর শিটের আসল তথ্য খুঁজতে হবে, নচেৎ ২০১৪ সালের টেট বাতিল করে দেওয়া হবে৷ সিবিআই অবশ্য এই মামলায় আগেই জানিয়েছিল, ৩০৪ জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বলে তদন্তে জানা গিয়েছে৷ আদালত এই ক্ষেত্রে স্পষ্ট বলেছিল, তথ্য খুঁজতে প্রয়োজনে আবারও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে গিয়ে সিবিআই তল্লাশি চালাতে পারে৷ সিবিআই রিপোর্টে যে অনিয়মের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তার ফলে ভবিষ্যতে আরও অনেকের চাকরি চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
রিপোর্টে আরও অনিয়মের উল্লেখ করা হয়েছে৷ এ নিয়ে এদিন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বক্তব্য আদালতে জানানোর কথা ছিল৷ কিন্ত্ত এদিন আরও প্রার্থী মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন জানান৷ আদালত সবাইকে এই মামলায় যুক্ত হওয়ার অনুমতি দিয়েছে৷ মঙ্গলবার প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে৷ ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬, ২০২০, ২০২২ ও ২০২৪ সালে প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছে৷ আদালত এদিনের পর্যবেক্ষণে বিষয়টি উল্লেখ করে জানিয়ে দেয়, এই টেট মামলার ফল যদি নেতিবাচক হয় তাহলে এর উপর ভিত্তি করে হওয়া সব নিয়োগ মামলা অস্তিত্ব হারাবে৷ ফলে গত চার দফায় যে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছে, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হবে বলে আশঙ্কা আইনজীবীদের৷ আগামী ৮ সপ্তাহ পরে মামলার পরবর্তী শুনানি৷ তার আগে সব পক্ষকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ৷