হকার ইস্যুতে উত্তাল কলকাতা পুরসভার অধিবেশন

নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর থেকেই রাজ্যজুড়ে চলছে সরকারি জমি দখল মুক্তিকরণ। রাজ্যের সমস্ত পৌরসভা ধরে ধরে চলছে হকার উচ্ছেদ। চলছে বুলডোজার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। আর এবার হকার ইস্যুতে উত্তপ্ত হল কলকাতা পুরসভার অধিবেশন।

শুক্রবার পুরো অধিবেশনে রাজ্যের হকার উচ্ছেদ কর্মসূচি নিয়ে প্রস্তাব পেশ করেন কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। তাঁর কথায়, রাজ্যজুড়ে হকার উচ্ছেদ অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ। এর ফলে বহু পরিবার রোজগার হারাচ্ছেন। অভাব অনটনে দিন কাটছে তাঁদের। তাই অবিলম্বে এই হকার উচ্ছেদ কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য প্রস্তাব রাখেন সজল ঘোষ। পাশাপাশি, তিনি তুলে ধরেন ধর্মীয় রং দেখে উচ্ছেদের কথাও। তাঁর কথায়, “শহরের অন্যত্র হকার উচ্ছেদ হলেও রাজা বাজারের মতো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হকারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে না”।

অন্যদিকে বাম আমলে হওয়া ‘অপারেশন সানশাইন’ নিয়ে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তারপরেই কার্যত উত্তাল হয়ে ওঠে পুরসভার অধিবেশন কক্ষ। সজল ঘোষের মন্তব্যকে কটাক্ষ করতে শুরু করেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। উত্তেজনা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বুঝে, সকলকে শান্ত হয়ে বসার জন্য অনুরোধও করেন অধ্যক্ষা মালা রায়।


তারপরেই নিজের বক্তব্য রাখতে ওঠেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সজল ঘোষের মন্তব্যকে সমূলে নস্যাৎ করে মেয়র বলেন, “রাজ্যের কোথাও হকার উচ্ছেদ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সেই রকম কোনও নির্দেশ দেননি। তিনি শুধু বলেছিলেন, যেখানে সরকারি জায়গা দখল করে হকার বসছে, সেইগুলি তুলে দিতে। ওই সভায় আমিও ছিলাম”। ববি হাকিম আরও বলেন, “আমাদের এখানে ধর্ম দেখে কিছু হয় না। আমরা হিন্দু মুসলিম সকলেই একসঙ্গে মিলে মিশে থাকি”। শুধু তাই নয়, রাজ্যের বর্তমান সরকার যে বাম আমলে হওয়া অপারেশন সানশাইনের বিপক্ষে, সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেন মেয়র।