• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

সোহমের রেস্তোরাঁ কান্ডে রাজ্যের উপর আস্থা রাখলো কলকাতা হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন– শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে উঠে নিউটাউনের রেস্তোরাঁ মালিকের দাখিল মামলা।এদিন নিউটাউনের রেস্তোরাঁয় গণ্ডগোলের ঘটনায় বিধাননগরের গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী ৪ জুলাই তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মামলাকারীর  নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি এই মামলার তথ্য প্রমাণ

মোল্লা জসিমউদ্দিন– শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে উঠে নিউটাউনের রেস্তোরাঁ মালিকের দাখিল মামলা।এদিন নিউটাউনের রেস্তোরাঁয় গণ্ডগোলের ঘটনায় বিধাননগরের গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী ৪ জুলাই তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মামলাকারীর  নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি এই মামলার তথ্য প্রমাণ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।এদিন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে  রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, -‘নিউটাউনের রেস্তোরাঁয় গণ্ডগোলের ঘটনার তদন্তভার বিধাননগরের গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার একজন আধিকারিকের নেতৃত্বে তদন্ত হচ্ছে। দুটি এফআইআর  দায়ের হয়েছে।  একটি রেস্তোরাঁর ম্যানেজার করেছেন এবং অপরটি বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর তরফে করা হয়েছে’।রাজ্যের তরফে আরও জানানো হয়,-‘ এই ঘটনায়  কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি। রাস্তায় জ্যাম হয়ে যাওয়ার কারণে পুলিশ রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে তাঁদের গাড়ি করে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল’।

তখন বিচারপতি বলেন, “সবক্ষেত্রে পুলিশ এভাবে সাহায্য করলে ভালো হয়।” এরপর রাজ্যের তরফে আরও বলা হয়, -‘থানায় যাওয়ার পর রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সব মিটিয়ে নেবেন, কোন এফআইআর  দায়ের করবেন না।ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আঘাতের অভিঘাত কেউই বুঝতে পারেনি। ৭ ই জুনের ঘটনার পর মেডিক্যাল করানো হয়েছে ৯ জুন’। রাজ্যের দাবি, -‘তার মানে মামলাকারীরাও সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি’।তবে মামলাকারীদের তরফ থেকে সওয়াল করা হয়, -‘পুলিশ জোর করে রেস্তোরাঁর কর্তৃপক্ষের ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। এবং কী মর্মে অভিযোগে লিখতে হবে সেটাও পুলিশ বলেছে’।

একই ঘটনায় দুটি এফআইআর দায়ের করা যায় না বলে মামলাকারী সওয়াল করেন। রাজ্যের তরফ থেকে তখন সওয়াল করা হয়, -‘মামলাকারীরা এফআইআর দায়ের করতে দেরি করলেন কেন ? ৭ জুনের ঘটনায় ৮ জুন কেন অভিযোগ দায়ের করা হল ? সেদিনই কেন করা হল না? এরা তো কেউ অসহায় গ্রামবাসী নয়?’ তবে সওয়াল জবাব শেষে তদন্তের ক্ষেত্রে বিধাননগরের গোয়েন্দা বিভাগের ওপরই আস্থা রাখল  কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। উল্লেখ্য,  গত ৭ জুন শুক্রবার নিউটাউনের একটি রেস্তরাঁর ছাদে শুটিং করছিলেন সোহম। সেই রেস্তরাঁর গেটের সামনে গাড়ি রাখা নিয়ে বচসা হয়। অভিযোগ, সোহম এবং তাঁর দেহরক্ষীরা আনিসুলের উপরে চড়াও হন। আনিসুলকে সোহম মারধর করেন বলে অভিযোগ। সেই ছবি সামনে আসে।রেস্তোরাঁ মালিকের অভিযোগ, -‘সোহমকে বাঁচাতে পুলিশ নিষ্ক্রিয় রয়েছে।

অন্যদিকে  তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে সোহম ও তাঁর লোকজন ক্রমাগত হুমকি দিয়ে চলেছেন’।ওই মামলায় শুক্রবার পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট তলবের পাশাপাশি নিউটাউনের সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁর মালিকের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আদালত এও জানিয়েছে, -‘হামলার ঘটনায় উদ্ধার হওয়া সমস্ত তথ্য প্রমাণ যত্ন করে সংরক্ষণ করতে হবে’।রেস্তোরাঁ মালিক অভিযোগ করেছিলেন, ‘কোনও কথা না শুনেই সোহম তাঁকে প্রথমে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেন। মারধরও করা হয়। এমনকী কলার চেপে ধরে রেস্তোরাঁ তুলে দেওয়ার হুঁশিয়াারিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ভাইরাল হয় মারধরের সিসিটিভি ফুটেজও।এরপর মারধরের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সোহম দাবি করেছিলেন, -‘বচসা চলাকালীন হোটেল মালিক তাঁর নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (তৃণমূল সাংসদ) নিয়ে কটূক্তি করেন। এতেই রেগে যান তিনি’।

যদিও পরে তিনি এই বিষয়ে ক্ষমাও চেয়ে নেন। তবে তাতে লাভ হয়নি। চলতি সপ্তাহে অভিনেতা ও বিধায়ক সোহমের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন রেস্তোরাঁ মালিক। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও আনা হয়।হাইকোর্টে মামলা গড়িয়েছে জানতে পারার পরই আগাম জামিন চেয়ে গত বৃহস্পতিবার বারাসত জেলা আদালতে আবেদন করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম। ২,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে আদালত সোহমের ওই আবেদন মঞ্জুরও করে থাকে জেলা আদালত ।উল্লেখ্য,  সোহমের বিরুদ্ধে ৩২৩, ৩৪১,৫০৬ ধারায় মামলা করেছেন নিউটাউন এলাকার রেস্তোরাঁ মালিক। আগামী ৪ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।