সিবিআই-কে ওএমআর শিট সংক্রান্ত হার্ড ডিস্কের তথ্য জমা দিতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২০১৪ প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র বিকৃতি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই-এর জবাবে খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র সংক্রান্ত অরিজিনাল সার্ভার বা হার্ড ডিস্কের তথ্য চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র সংক্রান্ত তথ্য স্ক্যান করে কোথায়, কোন হার্ড ডিস্কে রাখা হয়েছে, সেবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিক সিবিআই। আগামী শুক্রবার সেই তথ্য জমা দেওয়ার দিন।

এবিষয়ে সিবিআই জবাবে জানায়, ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র সংক্রান্ত আসল তথ্য নষ্ট করা হয়েছে। তদন্তের সময় একটি হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। যেখানে ডিজিটাইজ তথ্য রয়েছে। যা সহজেই মুছে ফেলা যায় বা পরিবর্তন করা যায়। এমনকি মেটা ডেটাও মুছে ফেলা হয়েছে। এরপরই সিবিআই-এর আইনজীবীর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। কার্যত তিনি যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জবাবে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করছেন, তা অনায়াসে বোঝা যায়।

বিচারক পাল্টা বলেন, মেটা ডেটা কখনও মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করা যায় না। এর একটা ডিজিটাল ছাপ থেকেই যায়। যা কখনও মোছা যায় না। মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা বলেন, “ওই সব ওএমআর শিট স্ক্যান করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পর্ষদ। স্ক্যান করলে একটি হার্ড ডিস্কে তা অবশ্যই থাকবে। সিবিআই-এর কাছে কি সেই হার্ড ডিস্ক রয়েছে? যদি ওই হার্ড ডিস্ক নষ্ট করে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেই বিষয়টিকেও তদন্তের আওতায় আনতে হবে।” বিচারপতির আরও বলেন, হার্ড ডিস্ক নষ্ট হলেও সার্ভারে অরিজিনাল ডেটা থাকা দরকার। কোর্টে ওই সব তথ্য জানাতে হবে সিবিআই-কে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেই তথ্য দিতে ব্যর্থ হলে বলতে হবে, তদন্ত ভুল পথে এগোচ্ছে। এই সহজ বিষয়টি সবার আগে প্রকাশ্যে আনতে হবে।


প্রসঙ্গত এর আগে ওএমআর শিট সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর সেই তদন্তের রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। মঙ্গলবার সিবিআই-এর আইনজীবীর জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে বিচারক অরিজিনাল সার্ভার বা হার্ড ডিস্কের তথ্য চাইলেন। এরপর আগামী শুক্রবার এই তথ্য সিবিআই আদালতে জমা দেবে বলে জানা গিয়েছে। ওইদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নিয়োগের পরীক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ হাইকোর্টে জানিয়েছিল আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, আসল প্রতিলিপি নষ্ট করা হলেও পরিবর্তে তার ডিজিটাইজ়ড তথ্য রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র মূল্যায়ণের জন্য এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নামে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। তারাই ওএমআর শিট স্ক্যান করে তথ্য সংরক্ষণ করেছে।