অভিযোগ কংগ্রেসের, গার্ডেনরিচের পুনরাবৃত্তি চায় না বর্ধমান

আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ২৩ মার্চ– কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকার পর এবার বর্ধমান পৌরসভা এলাকায় নিয়ম বর্হিভূত ভাবে বহুতল গডে় উঠা নিয়ে ক্ষোভ ছডি়য়ে পড়লো৷ প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের মদতে কয়েক বছর ধরে গডে় উঠা ওই সব বহুতল চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে৷ এমনটাই দাবি সাধারনের৷ এতদিন না হলেও কলকাতার ঘটনার পর জীবন হানির অভিজ্ঞতা নিয়ে সরব সব পক্ষই৷ তবে প্রধান শাসক বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সরব না হলেও কংগ্রেস নেতা নেত্রীরা একজোট হয়ে এই ঘটনায় ব্যাপক আন্দোলন শুরু করলো৷ এদিন প্রদেশ কংগ্রেস এর সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বিক্ষোভে সামিল হলেন নেতা নেত্রীরা৷

বর্ধমান শহর ও লাগোয়া এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাট করে বহুতল গডে় তোলার ব্যাবসা অনেক দিনের৷ প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে এ শহরে বেআইনি বহুতল ও নির্মাণ ঘিরে একাধিক অভিযোগ উঠেছে৷ সবই ধামাচাপা পডে় গেছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর বেআইনি নির্মান এর সংখ্যা বেডে়ছে৷ কিন্ত্ত এই অভিযোগের পাশাপাশি শাসকদলের এক শ্রেনীর নেতা নেত্রীরা বরাবরই এই ঘটনায় সরব হয়েছেন৷ এখনও কয়েকটি নির্মাণ নিয়ে নাম না করে সরব দলের নেতা নেত্রীরা৷ এসবের মধ্যে অবশ্য বেআইনি নির্মাণ বা নিয়ম বর্হিভূত কাজ বন্ধ নেই৷ এনিয়ে শহরের লোকজনও সরব৷ তবে প্রভাবশালী দের প্রভাবে বন্ধ থাকা কাজকর্ম আবার শুরু হয়ে যায়৷ বহুতল এর গোপন ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য জমির চরিত্র বদল, পুকুর ভরাটের ভুরি ভুরি অভিযোগ বর্ধমানে৷ সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি নির্মাণ ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের বাসিন্দারা৷ বিশেষ করে গার্ডেনরিচ কান্ডের পর ওই সব নির্মাণ যে ভবিষ্যতে বড়ো ধরনের বিপদ ডেকে আনতে চলেছে সে নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে সরব কংগ্রেস৷ এর আগে বেআইনি পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে সরব হয় সিপিএম তথা বাম নেতৃত্ব৷

গার্ডেনরিচ কান্ডের পর শহরের প্রাণকেন্দ্রে কয়েকটি বহুতল নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে৷ আর এ নিয়ে ভিতরে ভিতরে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস-এর নেতা নেত্রীরাও সরব৷ জেলখানা মোড় এলাকায় একটি বহুতল ও মার্কেট কি ভাবে গডে় উঠেছে সে প্রশ্ন সামনে এসেছে৷ আবার সদ্য গডে় উঠতে চলা অনিতা সিনেমা হল কিভাবে বহুতলের অনুমোদন পেল সে প্রশ্নও আছে৷ কারন গলিতে ঢোকার মুখ এতটাই সরু যে সেখানে কোন বড়ো গাডি় যাবে না৷ দমকলের গাডি় বা বড়ো দুর্ঘটনায় কি ভাবে সামাল দেওয়া যাবে৷ বিসি রোডে বহু পুরনো একটি মার্কেট ভেঙে আটতলা বহুতল নির্মাণের কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে৷ কোন এক প্রভাবশালীর জন্য এই বহুতলের অনুমোদন মিলেছে বলে দাবি বিরোধীদের৷


এছাড়াও রাধানগরপাড়া, খোসবাগান, বহিলাপাড়া, ইছলাবাদ, বড়বাজার, নীলপুরের একাধিক ঘিঞ্জি এলাকায় একের পর এক বহুতল গডে় তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ বেশিরভাগ ভাগ ক্ষেত্রে নূ্যনতম জায়গা ছাড় না দিয়ে বহুতল বা ফ্লাট নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ ভুরি ভুরি৷ সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগ এ গুলোর মধ্যে কয়েকটির ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ৷ এমনকি সূত্রের খবর পৌরসভার অডিটের সময় এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে৷ শহরে গডে় উঠা বহুতলের উচ্চতা নিয়ে পৌরসভার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি, এ অভিযোগও আছে৷ এবারের পৌরসভা নির্বাচনের আগে বোর্ড চালায় প্রশাসক৷ আর তখনই উঠে আসে নির্বাচিত সদস্যদের আমলে কি ভাবে অনিয়ম ঘটেছে৷ তবে পার্কিং না থাকা, জায়গার ছাড় না দেওয়া, নিয়ম না মেনে ফ্লোর গডে় তোলা নিয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার সতর্ক থাকবেন বলে জানিয়েছেন৷ যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ওয়ার্ডে পুকুর ভরাটের ঘটনায় চেয়ারম্যান সরেজমিন গিয়ে বন্ধ করেছেন৷ অন্যদিকে এক প্রভাবশালী নেতার জন্যই একাধিক বেআইনী কাজ হয়েছে বলে দাবি শাসকদলের বেশিরভাগ নেতার৷ একই সঙ্গে কংগ্রেস নেতারা পুকুর ভরাটের ও বেআইনি বহুতল গডে় তোলার বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করা হলো৷ প্রদেশ কংগ্রেস এর সাধারণ সম্পাদক তথা এআইসিসির সদস্য অভিজিৎ ভট্টাচার্য, যুব নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন আমরা এর শেষ দেখতে চাই৷ এদিনই তারা দিনের পর দিন গডে় উঠা বেআইনি বহুতল নিয়ে মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়৷ বেআইনিভাবে গডে় উঠা বহুতলের তালিকা প্রকাশ করেছে তারা৷ আগামী দিনে আন্দোলন জারি থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা৷