অভিষেকের ভূয়সী প্রশংসা, বিজেপিতে মোহভঙ্গ দিলীপের?

বরাবরই তিনি ঠোঁটকাটা। কাউকে কখনও রেয়াত করেন না। তাঁর আলপটকা মন্তব্যের জন্য এর আগে বহু বিতর্ক হলেও তাতে কিছুই এসে যায় না রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তবে এবার এবার তিনি যে কথা বললেন, তাতে রাজ্য বিজেপির তাবড় নেতাদের মুখের কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গেল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা। বঙ্গ রাজনীতির সাম্প্রতিক ইতিহাসে যা বিরলতম ঘটনা বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

শুক্রবার রাতে একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাহুল গান্ধীর থেকে ভালো নেতা মনে করি। রাহুল গান্ধী ৩০-৪০টা হেরেছেন। একপ্রকার রিজেক্ট হয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর কথাবার্তার থেকে অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত বলে মনে হয় আমার।’

দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পরেই রীতিমত শোরগোল পরে গেছে রাজ্য রাজনীতিতে। অনেকে মনে করছেন, বিজেপিতে মোহভঙ্গ ঘটছে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদের, তাই কি তিনি তৃণমূলের পথে পা বাড়াতে চাইছেন ? কারণ সামনেই ২৬-এর বিধানসভা ভোট। লোকসভা ভোট এবং আরেকদিকে আর জি কর আবহে বাংলায় ৬ বিধানসভায় তৃণমূলের জয়জয়কার দেখে অনেকের দাবি হয়ত ২০২৬-এ আবার ক্ষমতায় ফিরতে পারে তৃণমূল। এইমত পরিস্থিতিতে আগের থেকেই নিজের জায়গা শক্ত করতে চাইছেন দিলীপ?


একসময় তাঁর নেতৃত্বে বাংলায় বিজেপি সেরা ফল করেছিল। তখন তিনি ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে। তবে দল তাঁকে সভাপতি পদ থেকে অনেক আগেই সরিয়ে দিয়েছে। এমনকি ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে তাঁর কেন্দ্র মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে তাঁকে প্রার্থী করা হয় বর্ধমান-দূর্গাপুর আসনে। কিন্তু সেখানে পরাজিত হন দিলীপ। তারপর থেকে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে একাধিক মন্তব্য করেছেন তিনি। আসন পরিবর্তন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। অনেকেই মনে করেন দলে কোণঠাসা দিলীপ। এই সময় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা কিন্তু অন্য বার্তা দিচ্ছে।

যদিও উপনির্বাচনে ছয়ে ছয় তৃণমূলের জয় নিয়ে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘উপনির্বাচনকে কেউ সিরিয়াসলি নেই না। রাজ্যের কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে সিরিয়াসলি নেবে না। আগামী ২৬’শে যখন নির্বাচন হবে তখন রেজাল্ট আবার অন্যরকম হবে।’ একই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘উপনির্বাচন স্থানীয় শক্তির জোরে লড়তে হয়। তৃণমূল নেতারা পুলিস দিয়ে গুন্ডা দিয়ে নিজেদের মতন ভোট করে, আর সেটাই হয়েছে।’