নিজস্ব প্রতিনিধি – ‘মন কি বাত’ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কারো কথা শোনেন না, নিজের মনের কথা শুনেই সিদ্ধান্ত নেন তারই প্রমাণ এই ‘মন কি বাত’, এমনটাই বললেন ব্রাত্য৷ শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রাত্য বসু এবং ট্রেড ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ব্রাত্য কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে বলেন, আজ জলপাইগুড়ির সভা থেকে তিনি ঝড়ে বিধ্বস্ত মানুষদের বার্তা দেবেন এটি তৃণমূলের তরফ থেকে আগেই জানিয়ে রাখা হলো৷ সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী রাজ্য কোচবিহারে এসে জনসভা করে গেছেন প্রধানমন্ত্রী কিন্ত্ত জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে কিছুই বলতে শোনা যায়নি উনার বক্তব্যে৷ সে নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিল তৃণমূল, এবার প্রধানমন্ত্রী জলপাইগুড়ির মাটিতে দাঁড়িয়ে কি বলতে পারেন তাই কটাক্ষের সুরে অনুমান করে জানালো সবুজ শিবির৷ ভূপতিনগর প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির কার্যকলাপ নিয়ে কটাক্ষ করে ব্রাত্য বলেন, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং আরো যে অঞ্চল আছে সেখানকার বাজিওয়ালাদের সাবধান থাকতে বলবো, হয়তো সামান্য চকলেট বোম ফাটলেও এনআইএ চলে আসবে৷ নির্বাচনের মুখে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির তৎপরতা নিয়ে ফের নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারে তৃণমূল, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই ডেরেক ও ব্রায়েন চিঠি লিখেছেন নির্বাচন কমিশনকে৷ কমিশন দ্রুত এর সাড়া দেবে এবং ১০ জন সাংসদের বেঞ্চ কমিশন যাবেন এই ঘটনা প্রসঙ্গে, এমনটাই জানান ব্রাত্য৷ পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরেন ব্রাত্য৷
ভূপতিনগর ঘটনায় এনআইএ -র কার্যাবলী নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে ঋতব্রত এবং ব্রাত্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজ সভা থেকে প্রশ্ন তুলেছেন কেন মধ্য রাতে এনআইএ-র অধিকারিকেরা গ্রামে গিয়েছিলেন? কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের নেতা, কর্মীদের টার্গেট করে বিব্রত করার চেষ্টা করছে বিজেপি৷ পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের ভয় দেখানো হচ্ছে৷ কিন্ত্ত আগামী ৪ঠা জুন নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবেন৷ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি বর্তমানে আর কেন্দ্র সরকারের অধীনে নেই, বরং নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের অধীনে থেকে কাজ করছে৷ ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতর, এনআইএ এরপর ‘র’ কেও দেখা যাবে বিজেপির হয়ে কাজ করতে৷ ভূপতিনগর ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, ডিজি এবং ওসির অপসারণ প্রয়োজন৷ এই বিষয়েই বিজেপিকে আক্রমণ করে ব্রাত্য বলেন, তৃণমূল মাত্রই অপসারণ এবং ক্ষমতার অনুসরণ করতে চায় বিজেপি কিন্ত্ত বাস্তবে তা হওয়ার নয়৷
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, লোকসভা নির্বাচনের দেড় বছরের মধ্যেই রাজ্যে সরকারকে ফেলে দিয়ে ডবল ইঞ্জিন সরকার হবে৷ এ প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে নিশানা করে ব্রাত্য বলেন, ২০২১ এর নির্বাচনের সময় থেকেই অনেক হুমকি দিয়েছেন৷ কিন্ত্ত বর্তমানেও তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে৷ বাকিটা আগামী ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে সব জলের মতো স্পষ্ট হয়ে যাবে৷ এছাড়াও শুভেন্দু দাবি করেছেন, সিসিটিভি আওতায় হবে নির্বাচন৷ ঝড় উঠবে ভোট বাক্সে৷ পাল্টা জবাব দিয়েছেন ব্রাত্য৷ তিনি বলেন, ঝড় তো উঠবেই কিন্ত্ত তা হবে সবুজ ঝড়৷ সন্দেশখালির পর ভূপতিনগরেও ঘটলো কেন্দ্রীয় সংস্থার অধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনা৷ এ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, বিজেপি প্রমাণ করতে চাইছে বাংলা গন্ডগোলপূর্ণ রাজ্য৷ বাংলার মানুষদের ভয় দেখানো হচ্ছে, বিব্রত করা হচ্ছে৷ হিংসার উস্কানি দিতে চাইছে বিজেপি এই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে৷ সিপিএম ও আইএসএফ জোটে ভাঙ্গন নিয়েও সরব হন ঋতব্রত৷ সেলিমকে লোকসভা নির্বাচনে না দাঁড়িয়ে কাউন্সিলর নির্বাচনে দাঁড়ানোর পরামর্শ ঋতব্রতর৷ তাঁর মতে, মহম্মদ সেলিম ৬ দিন আগেও বলেছিলেন যে তিনি নওশাদের হয়ে প্রচারে যাবেন আবার এখন অন্য কথা বলছেন৷