বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সাংসদ খুন নিউটাউনে

কলকাতা, ২২ মে: চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল শহরের বুকে। নিউটাউনে খুন হলেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার। নিউটাউনের একটি অভিজাত আবাসন থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর দেহ। তিনি বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। আনোয়ারুল সাহেব বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ ও আওয়ামি লিগের কালীগঞ্জ উপজেলার সভাপতি। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে মোট তিনবার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই হত্যার ঘটনার কথা জানিয়েছেন। এই খুনের ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ ইতিমধ্যেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। কেন এবং কিভাবে এই খুনের ঘটনা ঘটল? ঘটনায় কে কে জড়িত ছিল, তাঁর যৌথ তদন্ত শুরু করেছে দুই বাংলার পুলিশ।

জানা গিয়েছে, গত ১২ মে তিনি চিকিৎসার জন্য দর্শনা সীমান্ত পার হয়ে কলকাতায় আসেন। কলকাতায় স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে এসেছিলেন আজিম আনার। এখানে এসে প্রথমে বরানগরে সিঁথি মোড় এলাকায় গোপাল বিশ্বাস নামে তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। সেখানে একদিন থাকার পর গত ১৩ মে দুপুর দেড়টা নাগাদ তিনি গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু গত ১৬ মে থেকে তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওইদিন ঢাকায় তাঁর ব্যক্তিগত সহায়ক আব্দুর রউফকে তিনি শেষ ফোন করেছিলেন। কিন্তু রউফ সেসময় ব্যস্ত থাকায় ফোন ধরতে পারেননি। পরে তিনি রিং ব্যাক করলে আনোয়ালরুল সাহেবের ফোনের সুইচ অফ দেখতে পান। এরপর বাংলাদেশ থেকে সাংসদের মেয়ে বারবার ফোন করেও ফোনে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি সেদেশের প্রশাসনকে খবর দেন। গত রবিবার সাংসদ কন্যা মমতারিন ফেরদৌস ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দফতরে গিয়ে বাবার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানান। এমনকি গত ১৭ মে কলকাতায় তাঁর বন্ধু, বরানগরের গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতেও ফোন করেন। গোপাল বিশ্বাস ১৮ মে বরানগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ প্রশাসনের সঙ্গেও। এদিকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগও।

গোপাল বাবু জানিয়েছেন, আওয়ামি লিগের নেতার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সর্ম্পক ও পারিবারিক বন্ধুত্ব রয়েছে। গত ১২ মে সন্ধ্যায় তাঁর বরানগরের বাড়িতে আসেন ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৩ মে দুপুরে ডাক্তার দেখানোর জন্য তিনি বেরিয়ে যান। ডাক্তার দেখিয়ে সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফেরেননি। এরপর গত ১৫ মে, বুধবার তাঁর ফোন থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ আসে। সেই মেসেজে লেখা হয়, দিল্লিতে তিনি এখন ভিআইপিদের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁকে ফোন করতে হবে না। দরকার হলে তিনি নিজেই ফোন করে নেবেন। তা সত্ত্বেও, ১৬ মে আনোয়ারুলের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকি তাঁর ব্যক্তিগত সচিবকে ফোন করেও কোনও উত্তর পাননি। এরপর ১৭ তারিখ আওয়ামি লিগ নেতার কন্যা তাঁদের বাংলাদেশের বাড়ি থেকে গোপালবাবুর কাছে ফোন করে জানান, তাঁরাও আনোয়ারুলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারছে না। এরপরই ১৮ মে বরানগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।


আজ, বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আনোয়ারুলকে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। কী কারণে এই খুন? সেই বিষয়ে এখনই কিছু জানা যায়নি।