নিজস্ব প্রতিনিধি— আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা নারায়ণ সেবা সংস্থা (এনএসএস) তার ‘দিব্য হিরোস-২০২৪’, ট্যালেন্ট এবং ফ্যাশন শোর আয়োজন করেছে রবিবার ধোনো ধান্য অডিটোরিয়াম-২, আলিপুর, কলকাতায়৷ তাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও কেউ কেউ উভয় পা ছাড়াই, কেউ কেউ এক পা বা বাহু, বা ক্রাচ এবং হুইলচেয়ারের উপর নির্ভরশীল প্রতিটি শিল্পীর উৎসাহ এবং আবেগ বেডে় গিয়েছিল৷ তাদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপস্থিত সকলের মন জয় করে নেয়৷ প্রতিভাবান ভিন্ন-অক্ষম শিল্পীদের উৎসাহিত করতে এবং প্রশংসা করতে ৫০০ জনেরও বেশি উপস্থিত ছিলেন৷
কলকাতা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করে, নারায়ণ সেবা সংস্থার সভাপতি প্রশান্ত আগরওয়াল, প্রমোদ কুমার, ধর্মচাঁদ ভান্ডারী, বিকাশ জয়সওয়াল, রামসুরাত জয়সওয়াল এবং বিকাশ জয়সওয়ালকে শপথবাক্য পাঠ করান৷
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও গণেশ বন্দনা পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ট্যালেন্ট শো৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুভম এবং তার দল দেখিয়েছে যে তারা কারও পিছনে নেই৷ এমপি থেকে জগদীশ প্যাটেল এবং গুজরাটের কমলেশ প্যাটেল হুইলচেয়ারে আশ্চর্যজনক একক নৃত্য, স্টান্ট এবং পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন৷ ১০ ফুটের খুঁটি থেকে জগদীশের ভারত মাতার অভিবাদন সবার মধ্যে দেশপ্রেমের বোধ জাগিয়েছিল৷ রাজস্থানের পলক সিং, একটি কৃত্রিম অঙ্গ নিয়ে পারফর্ম করছেন এবং রাজস্থানী লোকনৃত্য পরিবেশন দর্শকদের রাজস্থানের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আভাস দিয়েছে৷ এর পরে, কৃত্রিম অঙ্গ সহ অক্ষম ব্যক্তিরা একটি কৃষ্ণ নৃত্য এবং কুচকাওয়াজ পরিবেশন করেন৷ এই ভিন্ন-অক্ষম শিল্পীদের দ্বারা স্টান্ট, ভক্তিমূলক কাজ এবং দেশাত্মবোধক উপস্থাপনা এমনকি ক্ষমতাবান ব্যক্তিদেরও মহানতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করেছিল৷ এই সমস্ত ভিন্নভাবে-অক্ষম অভিনয়শিল্পীরা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়ে ওঠে৷
এই শিল্পীরাও ব্যক্তিগতভাবে তাদের পোশাক তৈরি করেছেন প্রতিষ্ঠানেই৷ শো চলাকালীন, বিভিন্ন প্রতিবন্ধী শিশুরা র্যাম্পে হাঁটল এবং তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করল৷ বিভিন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মবিশ্বাস, দক্ষতা ও চেতনায় অডিটোরিয়ামের পরিবেশ হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত৷
রাষ্ট্রপতি আগরওয়াল তার ভাষণে বলেছিলেন যে শারীরিক অক্ষমতা সত্ত্বেও, এই ব্যক্তিরা মানসিকভাবে স্থিতিশীল৷ তিনি জোর দিয়েছিলেন যে এই ভিন্নভাবে-অক্ষম শিল্পীরা সমাজ এবং অন্যান্য ভিন্নভাবে-অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্ব হিসাবে কাজ করবে৷
তিনি আরও হাইলাইট করেছেন যে নারায়ণ সেবা সংস্থা বিভিন্নভাবে অক্ষমদের প্রতিভা এবং শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নিবেদিত হয়েছে এবং বছরের পর বছর ধরে এই জাতীয় ৩৫০টিরও বেশি দিব্যাং শিল্পীদের একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করেছে৷ পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুডি়তে গ্র্যান্ড ক্যাম্পের আয়োজন করার পাশাপাশি, তিনি ১০০০ ভিন্নভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নের পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছিলেন৷ এই প্রতিভা প্রদর্শনীতে ত্রিশজন ভিন্ন-অক্ষম শিল্পী অংশগ্রহণ করেন, তিনটি রাউন্ড জুডে় প্রতিটি দশটি পরিবেশনা উপস্থাপন করেন৷ রামাবধ জয়সওয়াল অনুষ্ঠানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷