হামলাকারীরা এসেছিল সংগঠিতভাবে! আর জি কর হামলার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল কলকাতা পুলিশ

আর জি কর হামলার মূলচক্রীরা এসেছিল একসঙ্গেই! কেউ এসেছিল বাসে, আবার কেউ হাসপাতালের সামনে হাজির হয়েছিল পায়ে হেঁটে। গত ১৪ আগষ্ট রাতে আর জি কর হাসপাতালে হামলার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল কলকাতা পুলিশ।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের সামনে যে বিশৃংখল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার পরিকল্পনা ছিল আগে থেকেই। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হামলাকারীরা এসেছিল একসঙ্গে জোট বেঁধে। পাশাপাশি, নিজেদের এলাকায় মহিলাদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচি শেষ করার পরে পায়ে হেঁটেই এসেছিলেন অনেকে। জানা গিয়েছে, সেই রাতে যারা হামলা চালিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই এসেছিলেন বাগুইহাটি, কাশিপুর, পাতিপুকুর অর্থাৎ উত্তর কলকাতা সংলগ্ন এলাকা থেকেই। কলকাতা পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। অন্যদিকে, তার মধ্যে কয়েকজন হাজির হয়েছিলেন মদ্যপ এবং নেশাগ্রস্থ অবস্থায়। প্রসঙ্গত, হামলাকারীরা অনেকেই এসেছিলেন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। যদিও সেই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ কলকাতা পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, মামলা রুজু হয়েছে টালা , উল্টোভাঙা এবং শ্যামপুকুর থানায়। একই সঙ্গে সেই রাতে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় টালা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। শুধু তাই নয়, জানা গিয়েছে, আরজি কর হামলার অভিযোগ জানিয়ে সোমবার রাতে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে একশোজন চিকিৎসকের ইমেল আসে। সেই সমস্ত ইমেইল প্রেরকের নাম আলাদা হলেও অভিযোগ একই। যার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই টালা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে সেই রাতে হামলায় হাসপাতালের কোনও রোগী কিংবা রোগীর আত্মীয় আহত হয়েছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা।


প্রসঙ্গত, ৯ আগষ্ট রাতে ধর্ষণ করে খুন করা হয় আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসককে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই গত ১৪ আগষ্ট ‘রাত দখল’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা।

তবে শান্তিপূর্ণ মিছিলের মধ্যেই ঘটে ভাঙচুর। হামলাকারীদের আঘাতে আহত হন পুলিশ আধিকারিকরাও। ভেঙে ফেলা হয় হাসপাতালের একাধিক কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসও। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে টাওয়ার ডাম্পিং প্রযুক্তি ব্যবহার ইতিমধ্যেই ২৬৩ জনকে নোটিশ পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ। যার মধ্যে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৫৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় লালবাজারে। যাদের মধ্যে থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৭ জনকে। সূত্রের খবর, এখনও পুলিশের নজরে রয়েছেন কমপক্ষে আরও দশজন। তাদের খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে আশাবাদী কলকাতা পুলিশ ।অন্যদিকে আরজি কে হামলার ঘটনার তদন্তের স্বার্থে সোমবার রাতে গোয়েন্দা বিভাগের গুণ্ডা দমন শাখা এবং টালা, শ্যামপুকুর ও উল্টোভাঙ্গা থানার অফিসারদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছে লালবাজার। যার নেতৃত্বে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মুরলীধর শর্মা।