নাইরোবি, ২ জুলাই: আগেই মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বে জলছে কেনিয়া৷ তার ওপর ভস্মে ঘি ঢালল অতিরিক্ত করের বোঝা৷ কেনিয়ার প্রধান খাদ্য রুটির উপরে চাপানো হয়েছে ১৬ শতাংশ কর৷ এরপর থেকেই শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ৷ যার ফলে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠল সরকারবিরোধী আন্দোলনে৷ গত দিন পনেরো ধরে দেশটির পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে৷ উদ্বেগ বাড়ছে কেনিয়ায় থাকা ভারতীয়দের নিয়েও৷ বিভিন্ন শহরের প্রায় প্রতিটা রাস্তায় জ্বলছে আগুন৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে সাধারণ মানুষ৷ এই কদিনে এখনও পর্যন্ত বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৯ জন৷ আহতের সংখ্যা সাড়ে তিনশোর উপরে৷
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে, অতিরিক্ত করের বিরুদ্ধে প্রথমে শান্তিপূর্ণ মিছিলে নেমেছিলেন সকলে৷ প্রতিবাদীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল যুবক-যুবতী৷ কিন্ত্ত গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৫ জুন, কেনিয়ার সংসদে একটি বিল পাশ হয়৷ যা নিয়ে প্রতিবাদ আরও ভয়াবহ রূপ নেয়৷ কেনিয়া ন্যাশনাল কমিশন অন হিউম্যান রাইটস (কেএনসিএইচআর) সোমবার বিবৃতি দিয়ে জানায় এখনও পর্যন্ত বিক্ষোভের জেরে ৩৯ জনের মৃতু্য হয়েছে৷ আহত ৩৬১৷ অন্যদিকে, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ৬২৭ জন৷
২০২২ সালে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট হন উইলিয়াম রুটো৷ তার পর থেকে এটাই দেশের সবচেয়ে সংকটজনক পরিস্থিতি৷ দিকে দিকে হওয়া সরকারবিরোধী মিছিল ও প্রাণহানি নিয়ে রবিবার বক্তব্য রাখে রুটো৷ তিনি বলেন, “বিক্ষোভে ১৯ জনের মৃতু্য হয়েছে৷ কিন্ত্ত আমার হাতে তাঁদের রক্ত লেগে নেয়৷ আমি এই প্রাণহানির উপযুক্ত তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি৷” এদিকে, সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে যেভাবে সরকারি ভবন ও জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রগুলোকে আক্রমণ করছে তার করা নিন্দা জানিয়েছে কেএনসিএইচআর৷
উল্লেখ্য, জুন মাসের মাঝামাঝি করে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে৷ গত ২৫ জুন বিক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠেছিল কেনিয়ার সংসদ৷ সংসদের একাংশে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ প্রতিবাদীদের একটা অংশ প্রবেশ করে সংসদে৷ তারাই আগুন ধরিয়ে দেয়৷ সেদিন প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান থেকে জল ছুডে় প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ৷ কিন্ত্ত তাতেও বিক্ষোভ প্রশমিত না হওয়ায় গুলি চালানো শুরু হয়৷ মৃতু্য হয় পাঁচ জনের৷
এদিকে, এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে কেনিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এক্স হ্যান্ডলে সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে ৷ সেখানে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, কেনিয়ার সমস্ত ভারতীয়কে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার, অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত না করার এবং পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভের কেন্দ্র হয়ে ওঠা এলাকাগুলো এডি়য়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে৷’ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে সেদেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য৷