মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় পেশ হল ধর্ষণ বিরোধী ‘অপরাজিতা’ বিল। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক পেশ করলেন ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। গত সোমবারই এই বিলের খসড়া প্রত্যেক বিধায়ককে দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো এদিন বিল পেশের আগে বেশ কিছু সংশোধনী-সহ প্রস্তাব জমা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।তার ভিত্তিতে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ‘তাঁর জমা দেওয়া সংশোধনীগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।’
আলোচনার শুরুতেই এ নিয়ে বক্তব্য রাখেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীরও বিলটি নিয়ে বক্তব্য রাখার কথা। ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)-এ নয়া গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন, ধর্ষণের ফলে নির্যাতিতা যদি কোমায় চলে যান, সেক্ষেত্রে ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে। এই বিধান মনে করিয়ে দিচ্ছে মুম্বইয়ের অরুণা শানবাগের ঘটনা। যে নার্স নিজের হাসপাতালেই ধর্ষিতা হয়ে প্রায় ৪০ বছর কোমায় আচ্ছন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড হয়নি। রাজ্য সরকারের এই বিল আইনে পরিণত হলে অরুণাদের মতো অনেকে ন্যায়বিচার পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া ধর্ষণ করে খুনের ক্ষেত্রে আগের আইন অনুযায়ী ফাঁসির সাজা বহাল থাকছে। গণধর্ষণের ক্ষেত্রেও ন্যূনতম শাস্তি আজীবন কারাবাস ও জরিমানা।
মঙ্গলবার বিল নিয়ে বিধানসভায় আলোচনায় পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘অপরাধ সংক্রান্ত আইন যৌথ তালিকায় থাকার সুবিধা নিয়েই নয়া বিল আনছে রাজ্য’। এর পর ‘অপরাজিতা’ বিলটিকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল । শুভেন্দু এনিয়ে সাতটি সংশোধনী বিলের সঙ্গে জমা দিয়েছেন।
এনিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘বিল সিলেক্ট কমিটি না পাঠিয়ে আমরা চাই এক্ষুনি শাস্তি। আইনে পরিণত করতে বলব।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘পাকিস্তানের ডাক্তাররাও বিবৃতি দিচ্ছে, এটা লজ্জার।’ বিরোধী দলনেতাকে বলুন বিলে রাজ্যপালকে সই করতে। তার পরেই দেখবেন রুলস হয়ে গিয়েছে। তারপরের দায়িত্ব আমার। মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে দ্বিতীয় দিনে অপরাজিতা বিল ২০২৪ পেশ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে জবাব মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন বিশেষ অধিবেশনে বিল পেশের আগে বক্তব্য রাখতে এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় বিরোধীদেরও।