বাংলাদেশে বিচারহীন অবস্থায় যাঁরা বন্দী জীবন কাটাচ্ছিলেন, এবার একে একে মুক্তি পেতে শুরু করেছেন সবাই। প্রথমে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মুক্তি পান।
সেই তালিকায় এবার নাম জুড়ল আরও দু’জনের। এবারে মুক্তি পেলেন এক সেনা আধিকারিক এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা অধিকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম (আরমান)।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার পর তাঁদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গত ৮ বছর ধরে তাঁরা জেলবন্দি অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তা-ই নয়, রাজনৈতিক হিংসার কারণে বিনা বিচারে তাঁদের জেলে আটকে রাখার অভিযোগও ওঠে।
আওয়ামি লীগের নেত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাবাবুদ্দিন সোমবারই জানিয়েছিলেন যে, যারা রাজনীতি হিংসার কারণে বিনা বিচারে জেলে আটকে রয়েছেন, তাঁদের সকলকে মুক্তি দেওয়া হবে। মঙ্গলবার মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশের বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। কারাদণ্ডের নির্দেশের পর গুলশনের বাড়িতে গৃহবন্দি ছিলেন তিনি। অসুস্থতার কারণে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। এদিন বাড়ি ফিরেছেন বাংলাদেশের বিএনপি নেত্রী।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে তাঁরা নিজের বাড়িতে ফিরেছেন। এমনকী, প্রাক্তন সেনা কর্তা ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীর জেলমুক্তির খবর নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও।
উল্লেখ্য, সেনা কর্তা এবং আইনজীবীর পরিবারের লোকেরা আগেই অভিযোগ করেছিলেন যে, ২০১৬ সালের ৯ অগস্ট মিরপুর ডিওএইচএস থেকে আহমদ বিন কাসেম অর্থাৎ (আরমান)’কে এবং তার কিছুদিন পর ২৩ আগস্ট সেনা কর্তা আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে গুম করা হয়। তাঁদের পরিবারের অভিযোগ, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের বছরের পর বছর জেলে আটকে রাখা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন নেতা প্রয়াত গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী। আর আহমাদ বিন কাসেম জামায়াতের প্রাক্তন নেতা প্রয়াত মীর কাসেম আলীর ছেলে। একাত্তরের আন্দোলনে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, অশান্তির আগুন জ্বলছে বাংলাদেশে। হিংসার-সংঘাতের আবহে সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশের এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, শাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপরই রাতে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সেনা কর্তা এবং সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। এবার এই দু’জন রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হল।