রাজভবনে আটকে গণপিটুনি বিরোধী বিল, বিদ্বজ্জনদের সঙ্গে বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুধবার রাতে খবর ছড়িয়েছিল বিদ্বজ্জনদের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অনেকে মনে করছিলেন, রাজ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বাড়তে থাকা গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে এবং অন্যান্য কিছু বিতর্কিত বিষয়ে বিদ্বজ্জনদের মতামত নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে বৈঠক শুরুর আগেই তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বিবৃতিতে জানিয়ে দেন, এই বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী ডাকেননি৷ তিনি বিদ্বজ্জনদের কোনও মতামতও নেবেন না৷ কিন্তু এদিন বৈঠক শেষে জানা যায়, গণপিটুনি বিরোধী বিল রাজভবনে আটকে থাকা নিয়ে বৈঠকে বিদ্বজ্জনদের সামনে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

বৈঠক শুরুর আগে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, একটি গণসংগঠনের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হয়েছিল৷ মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সময় দিয়েছেন৷ উনি দেখা করবেন৷ এইটুকুই৷ মুখ্যমন্ত্রী কাউকে আমন্ত্রণ জানাননি৷  আলিপুরের ‘সৌজন্য’ প্রেক্ষাগৃহে বৃহস্পতিবার বিদ্বজ্জনদের নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই বৈঠকেই গণপিটুনি বিরোধী বিল রাজভবনে আটকে থাকা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী৷  পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় গণপিটুনি বিরোধী বিল পাশ হয়েছিল, কিন্ত্ত গত পাঁচ বছর ধরে তা রাজভবনে আটকে আছে৷ ওই বিলেই গণপিটুনির ঘটনায় কড়া শাস্তির কথা বলা হয়েছিল৷ সেই বিল রাজ্যপালের সম্মতির জন্য পাঠানো হলে তাতে রাজ্যপাল সাক্ষর করেননি৷

উল্লেখ্য, তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুরা মিলে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’ বলে একটি সংগঠন তৈরি করেছিলেন৷ সেই সংগঠন লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপি-বিরোধী প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল৷ রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন গণমঞ্চের বিশিষ্ট সদস্যরা৷ সেই আবেদন মেনে বৃহস্পতিবার তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বৈঠকে উপস্থিত বিদ্বজ্জনরা জানিয়েছেন, এটা একেবারেই সৌজন্য সাক্ষাত ছিল, কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি৷ বৈঠকে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অভীক মজুমদার, সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী, কুমার বোস সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন৷ গণপিটুনি বিরোধী বিল প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্য নিয়ে মুখ খোলেননি বিদ্বজ্জনদের কেউই৷


এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভীক মজুমদার বলেন, ‘একেবারেই ঘরোয়া সাংস্কৃতিক আড্ডা হয়েছে৷ সাংস্কৃতিক বিষয়ে কথা, খাওয়াদাওয়া হয়েছে৷ একেবারেই সৌজন্য সাক্ষাত৷ রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি৷ ’