নিজস্ব প্রতিনিধি— আগামী ১৩মে দেশের ৯৬টি লোকসভা কেন্দ্রে চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচন৷ তার মধ্যে রয়েছে এ রাজ্যের আসানসোল, বহরমপুর, বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বীরভূম, বোলপুর, কৃষ্ণনগর এবং রাণাঘাট কেন্দ্র৷ রাজ্যের মোট ৮টি লোকসভা কেন্দ্রে মোট ৭৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন৷ তবে তাঁদের মধ্যে বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর ফৌজদারি মামলার অভিযোগ সবথেকে বেশি৷ এমনটাই বলছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশান ওয়াচ এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস৷
শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশান ওয়াচ৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশান ওয়াচের রাজ্য সংযোজক উজ্জয়িনী হালিম, রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন কর্তা অমিয় কুমার সামন্ত এবং মুম্বাই হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়৷ চতুর্থ দফায় রাজ্যের ৮টি লোকসভা কেন্দ্রে পাশাপাশি দেশের মোট ৯৬টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ওঠা ফৌজদারি মামলা, আর্থিক প্রেক্ষাপট, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিশ্লেষণ করেন তাঁরা৷
রাজ্যের চতুর্থ দফার নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব ইতিমধ্যেই মিটে গিয়েছে৷ প্রার্থীরা জমা দিয়েছেন তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিসহ নিজেদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি অভিযোগের সংখ্যাও৷ তাতেই ওঠে এসেছে কোন প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণ কত, কার বিরুদ্ধেই বা আদালতে কতগুলি মামলা হয়েছে৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশান ওয়াচ প্রদত্ত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চতুর্থ দফার নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী সংখ্যা ৮৷ তাঁদের মধ্যে ৪ জনের বিরুদ্ধে রুয়েছে ফৌজদারি মামলা৷ অন্যদিকে বাকি ৪ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলার অভিযোগ৷ পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের ৮জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলার অভিযোগ৷ ২ জনের নামে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলার মতো অভিযোগ৷ সাধারণত গুরুতর ফৌজদারি মামলা বলতে খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ, ধর্ষণের মতো অপরাধকে বোঝায়৷ অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষীদের জামিন অযোগ্য ধারায় মামলার পাশাপাশি সশ্রম কারাদন্ডও হতে পারে৷
তবে প্রার্থীদের মধ্যে গুরুতর ফৌজদারি মামলার সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ৷ তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৬১টি গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে৷তাছাড়া ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশান ওয়াচ আরও জানাচ্ছে, মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রার্থীরা নিজেদের যে পরিমাণ সম্পত্তির হিসেব দিয়েছেন তার মধ্যে এগিয়ে রয়েছে কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অর্থাৎ রাজমাতা অমৃতা রায়৷ স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তাঁর মোট সম্পত্তি ৫৫৪ কোটি টাকারও বেশি৷ বিত্তবান প্রার্থী তালিকায় তাঁর পরেই রয়েছেন আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা এবং বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠান৷ তাঁদের স্বঘোষিত স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট সম্পত্তি পরিমাণ যথাক্রমে ২১০ কোটি এবং ৪৫ কোটি টাকারও বেশি৷ তবে ঠিক উল্টো দিকে সবথেকে কম সম্পদ রয়েছে তিন জনের৷ তাঁরা হলেন জগন্নাথ সরকার (রাণাঘাট), বিশ্বম্ভর কালিতা (বহরমপুর) এবং সমীরণ দাস (বহরমপুর)৷ তাঁরা সকলেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন৷ অন্যদিকে গোটা দেশে চতুর্থ দফার প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্পদশালী ড. চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি৷ অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে টেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি)র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তিনি৷