আরজিকর কান্ডের জের, মহিলা কর্মজীবীদের জন্য মমতার ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প

নবান্ন। ফাইল চিত্র

আরজি করে এক তরুণি চিকি‍ৎসকের ধর্ষণ-হত্যা নিয়ে উত্তাল বাংলা-সহ গোটা দেশ।দোষীদের দাবিতে পথে নেমেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি আরজি করের বাহানায় রাজ্যে অপশক্তির অরাজকতা তৈরির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। কার্যত মুখোমুখি দুই শিবির। তার মধ্যেই রাজ্যে মহিলা কর্মজীবীদের জন্য বিরাট পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতে কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা ও কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফেরা মহিলা কর্মজীবীদের চালু করা হচ্ছে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প।

কী সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে?

১) রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, বিভিন্ন হস্টেল-সহ বিভিন্ন জায়গায় মহিলা কর্মজীবীদের জন্য আলাদা শৌচালয় ও বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


২) মহিলা কর্মজীবীদের নিরাপত্তার জন্য রাতে কর্মস্থলে রাখা হবে ‘রাত্তিরের সাথী’ নামে বিশেষ মহিলা স্বেচ্ছাসেবক।

৩) প্রতিটি কর্মস্থল সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা ধরে চলবে বিশেষ নজরদারি।

৪) মহিলা কর্মজীবীদের জন্য চালু করা হচ্ছে বিশেষ সঙ্কেতযুক্ত বিশেষ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (মোবাইল অ্যাপ)। প্রতিটি মহিলা কর্মজীবীর ফোনে ওই মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। মোবাইল অ্যাপের সঙ্গে স্থানীয় থানার যোগাযোগ থাকবে। অর্থা‍ৎ কোনও মহিলা কর্মজীবী বিপদে পড়লে ওই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই সরাসরি থানায় বিশেষ বার্তা পাঠাতে পারবেন।

৫) মহিলা কর্মজীবীদের জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু হচ্ছে। আপাতত ১০০ ও ১০২ নম্বরে সাহায্য চেয়ে ফোন করতে পারবেন।

৬) জেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলিতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলিতে ঢোকা প্রত্যেকেরই শ্বাস পরীক্ষা করা হবে। অর্থা‍ৎ কেউ মদ্যপ অবস্থায় রয়েছেন কিনা, তা দেখা হবে।

৭) মহিলা কর্মজীবীদের যৌন নির্যাসতন রুখতে প্রতিটি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ-সহ বিভিন্ন অফিসে বিশাখা কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৮) হাসপাতাল-মেডিকেল কলেজ সহ বিভিন্ন অফিসে মহিলাদের নৈশকালীন ডিউটি বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে মহিলা কর্মজীবীর সঙ্গে তাঁর পরিচিত কিংবা কোনও মহিলা সঙ্গিনীকে ডিউটি দেওয়া হয় তার উপরে বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে।

৯) বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প কার্যকর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ক) প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহিলা হস্টেলে রাত ভর চলবে বিশেষ পুলিশ পেট্রলিং।

খ) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন থেকে চিকি‍ৎসক-সহ প্রতিটি কর্মীকে গলায় ঝোলাতে হবে সচিত্র পরিচয়পত্র।

গ) নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা আধিকারিক নিযুক্ত করা হচ্ছে। তাঁরাই পুরো নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্বে থাকবেন।

ঘ) কোনও মহিলা চিকি‍ৎসক কিংবা কর্মীকে একটানা ১২ ঘন্টার বেশি ডিউটি দেওয়া যাবে না।

ঙ) সম্ভব হলে মহিলাদের নাইট ডিউটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।