২১ দিনের ভোট প্রচার সেরে জেলে ফিরলেন কেজরিওয়াল

দিল্লি, ২ জুন– অবশেষে জেলেই ফিরতে হল কেজরিওয়ালকে। কোনও অজুহাত শুনল না আদালত। লোকসভা ভোটের প্রচারের কারণে গতকাল, ১ জুন সপ্তম দফার নির্বাচন পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি ৪ জুনের নির্বাচনী ফলাফল দেখে জেলে ফেরার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত সেই অনুরোধ একবাক্যে খারিজ করে দিল। ফলে ২১ দিন বাইরে থাকার পর আজ ২ জুন জেলে ফিরলেন আম আদমি পার্টির শীর্ষ নেতা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

যদিও এদিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল জেলে যাওয়ার আগে হনুমান মন্দিরে পুজো দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী সুনীতা, দিল্লির মন্ত্রী অতিশী মারলেনা, কৈলাশ গৌহলত, সৌরভ ভরদ্বাজ। এছাড়া ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ, সন্দীপ পাঠক এবং দলীয় নেতা দুর্গেশ পাঠক-সহ অন্যেরা। হনুমান মন্দিরে পুজোর দেওয়ার পাশাপাশি সদলবলে রাজঘাট এবং আপের সদর দফতর ঘুরে তারপর জেলে ফেরেন তিনি। আজ রবিবার বিকেলে তিহার জেলে আত্মসমর্পণ করেন আপ সুপ্রিমো। তিনি এদিন দলের সদর দফতর থেকে বলেন, ‘‘২১ দিনের মধ্যে আমি এক মিনিটও নষ্ট করিনি।’’

প্রসঙ্গত দিল্লির আবগারি দুর্নীতি কাণ্ডে গত ২১ মার্চ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি এবং তাঁর দল অভিযোগ করে, লোকসভা ভোটে কেজরিওয়াল যাতে প্রচার করতে না পারে সেজন্য কেন্দ্রের মোদী সরকার ষড়যন্ত্র করে তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এরপর তিনি ভোট প্রচারের জন্য আদালতের কাছে জামিনের আর্জি জানান। গত ১০ মে আপপ্রধানকে লোকসভা ভোটের প্রচারে সুযোগ দিতে ১ জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁর জামিনের বিরোধিতা করে ইডি। কিন্তু আদালত সেই নিষেধ খারিজ করে দেয়। এরপর জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরীওয়াল। তাঁর আবেদন ছিল, পিইটি-সিটি স্ক্যান-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক পরীক্ষার জন্য জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হোক। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। ফলে রবিবার তাঁকে জেলে ফিরতে হল।


আজ দুপুর ৩টে নাগাদ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ছাড়েন। সেখান থেকে সোজা রাজঘাটে চলে যান। মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে মালা দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তারপর হনুমান মন্দিরে পুজো দিয়ে আপের সদর দফতরে পৌঁছন। সেখানে তাঁকে দেখার জন্য ভিড় করেন আপের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের উদ্দেশে কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘আমি ২১ দিনের এক মিনিটও নষ্ট করিনি। আমি সমস্ত দলের হয়ে প্রচার করেছি। আমি দেশকে বাঁচানোর জন্য প্রচার সেরেছি। দেশ আগে, তারপর আমার দল।’’

এরপর তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রচার অভিযানের সময় সবচেয়ে ভাল জিনিস যেটা ঘটেছে, সেটা হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বীকার করেছেন, আমার বিরুদ্ধে তাঁর কাছে কোনও প্রমাণ নেই। এটা একনায়কতন্ত্র। যাকে ইচ্ছা জেলে ঢুকিয়ে এই বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, যখন কেজরীওয়ালকে জেলে রাখা যায়, সেখানে যে কোনও ব্যক্তিকে জেলে ঢোকানো সম্ভব।’’