ছোট অস্ত্রোপচারের পর ‘স্থিতিশীল’ অভিষেক, তাঁর রাজনীতিতে ‘কামব্যাক’র অপেক্ষায় প্রত্যেকে

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ১৬ জুন: রাজনীতি থেকে ‘ছোট বিরতি’ নিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ জানিয়েছিলেন ‘চিকিৎসা’। এরপরই তাঁর বিরতি নিয়ে জল্পনার দানা বাধঁতে থাকে বঙ্গীয় রাজনীতিতে। সেই জল্পনায় ইতি টেনে রবিবার সকালেই বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতাল, অ্যাপোলো তে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখানে রবিবার বেলাতেই তাঁর পেটে ছোট অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয়, অস্ত্রোপচারটি হয়েছে সফল ভাবেই। সব দিক থেকে শারীরিক ভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, একজন প্লাস্টিক সার্জনের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এদিন দুপুর নাগাদ একটি মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করে ওই বেসরকারি হাসপাতাল। সেখানে জানানো হয়, অভিষেক এখন স্থিতিশীল। পাশাপাশি তাঁর দ্রুত আরোগ্যও কামনা করা হয়েছে হাসপাতালের তরফে। অভিষেক সুস্থ থাকায় রবিবার বিকেল নাগাদ পরিকল্পনা মাফিক তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বুধবার অভিষেক সমাজমাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, গত বছর এই সময় নবজোয়ার যাত্রা করেছিলেন তিনি। আর এবার চিকিৎসার জন্য সংগঠন থেকে ছোট বিরতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকার যথাযথ নিজ দায়িত্ব পালন করবে বলেও নিজের বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেছিলেন যুবরাজ। এরপরই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরী হয়। তাঁর বিরতির কারণ কি শুধুই চিকিৎসা নাকি কিছুক্ষেত্রে দলীয় নেতৃত্বদের প্রতি হতাশা? এ প্রসঙ্গে অভিষেক-ঘনিষ্ঠরাও নানা মত দিয়েছিলেন। বিরতি নেওয়ার কারণ একাধিক হলেও, তিনি যে বাস্তবেই অসুস্থ ছিলেন তা স্পষ্ট ছিল। এর আগেও অভিষেকের চোখে কয়েক বার অস্ত্রোপচার হয়েছিল। ২০১৬ সালের অক্টোবরে মুর্শিদাবাদে এক দলীয় কর্মিসভা থেকে ফেরার সময় পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন অভিষেক। সিঙ্গুরের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি দুধের গাড়িতে আচমকা ধাক্কা মেরে উল্টে যায় তৃণমূল সাংসদের গাড়ি। সেই দুর্ঘটনাতে অভিষেকের বাঁ চোখের নীচে অরবিটাল বোন বা চোখের এক বিশেষ হাড় ভেঙে যায়। এরপর তিনি দীর্ঘ দিন চোখের সমস্যায় ভুগেছিলেন। চিকিৎসার কারণে তাঁকে একাধিক বার দুবাইও যেতে হয়েছিল। এরপর ২০২০ সালে চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য অভিষেকের আমেরিকা যাওয়ার কথা থাকলেও কোভিড আবহে তা দু’বছর পিছিয়ে যায়। কিন্তু এই অস্ত্রোপচার আর বেশি দিন ফেলে রাখা সমীচীন হবে না বলেই চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন অভিষেককে। তাই ২০২২-এর অক্টোবরেই আমেরিকায় যান তিনি। ১২ অক্টোবর পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিষেকের বাঁ চোখে অস্ত্রোপচার করেন জন্স হপকিন্স হাসপাতালের দুই অভিজ্ঞ শল্য চিকিৎসক। তারপর সেই চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর লোকসভা নির্বাচন মিটতেই তিনি অন্য শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হলেন হাসপাতালে। যদিও জটিল সমস্যা না থাকায় ছোট অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় সেদিনই। উল্লেখ্য, এদিন হাসপাতালে অভিষেক কে দেখতে এসেছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস।