• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

অভিষেক-অখিলেশের সৌজন্য বিনিময়, ‘ইন্ডিয়া’-র শক্তিশালী রূপ নেওয়ার ইঙ্গিত বার্তালাপেই 

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: একের পর এক হাইভোল্টেজ বক্তৃতা রেখে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ মাতিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি থেকে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রমুখ। তবে মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এদিনের সভার মূল আকর্ষণ ছিলেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। এদিন একুশে

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: একের পর এক হাইভোল্টেজ বক্তৃতা রেখে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ মাতিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি থেকে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রমুখ। তবে মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এদিনের সভার মূল আকর্ষণ ছিলেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। এদিন একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চে কেবল তিনি উপস্থিত ছিলেন তা নয়, পাশাপাশি বক্তৃতাও রেখেছেন তিনি। এছাড়াও ক্যামেরা বন্দী হয়েছে অভিষেক ও অখিলেশের সৌজন্য বিনিময়ের মুহূর্ত।

প্রসঙ্গত, রবিবার এয়ারপোর্টে নেমেই সমাজবাদী পার্টির প্রধান পৌঁছে যান কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে। এরপর একসঙ্গেই মমতা ও অখিলেশ পৌঁছান ২১শে জুলাইয়ের শহীদ মঞ্চে। মমতার সঙ্গেই সভাস্থলে প্রবেশ করেছিলেন অখিলেশ যাদব। জয়ধ্বনি দিয়ে তাঁদের অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল মঞ্চে। পাশাপাশি, অখিলেশকে সংবর্ধনা জানাতে এগিয়ে এসেছিলেন অভিষেক।

এদিনের সভা শেষেও অভিষেক ও অখিলেশ বেশ কিছুক্ষন আলাপচারিতা করেন। সেই ছবিই সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস তার অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছে, “আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব শহীদ দিবসের ঐতিহাসিক মঞ্চে একসাথে দাঁড়িয়েছেন। অত্যাচারী শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করায় বাংলা থেকে উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত, এই দুই যুব আইকনের কণ্ঠ মানুষের হৃদয় দখল করেছে এবং তাঁরা গণতন্ত্রের আদর্শের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।”

সভামঞ্চ থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতৃত্ব এবং দলীয় কর্মীগণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন অখিলেশ। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক লড়াইকে জানিয়েছেন কুর্নিশ, এমনকি বিজেপি বিরোধিতায় সমাজবাদী পার্টি ও তৃণমূলের একজোট হয়ে লড়াই করার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে দেশ জুড়ে বিজেপির পশ্চাদগামীতার পেছনে বাংলা এবং উত্তরপ্রদেশ, এই দুই রাজ্যকেই ফ্যাক্টর হিসেবে দেখেছেন যাদব। বৃহৎ আসন সংখ্যা বিশিষ্ট দুই রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবি হওয়ার কারণেই বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। তাই স্বাভাবিক ভাবে এই দুই রাজনৈতিক দলের সহাবস্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং নজরকাড়া।

অন্যদিকে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বক্তব্য রেখে অভিষেক বলেন, “এই জয়ের মূল কারিগর তৃণমূল সমর্থকদের পাশাপাশি সমস্ত দেশ জুড়ে এক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই, অখিলেশ যাদব।” সুতরাং, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিও যে বিজেপি বধের অন্যতম হাতিয়ার, তাও স্বীকার করেছেন অভিষেক। সভা শেষে অখিলেশ এবং অভিষেকের সৌজন্য বিনিময় এক্ষেত্রে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আগামীদিনে সংসদে সরকারের বিতর্কিত কার্যের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আওয়াজ তুলবে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র এই দুই শরিক দল।  ক্রমেই বাড়ছে তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টির পরস্পরের প্রতি সৌভাতৃত্বমূলক আচরণ। উভয়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইতিবাচক প্রতিফলন হবে সংসদে, ধারণা রাজনৈতিক মহলের।

উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচন মিটতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পরামর্শে দিল্লিতে অখিলেশ যাদবের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের সাথে ছিলেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। অখিলেশের বাড়িতে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ‘ইন্ডিয়া’র দুই অন্যতম প্রধান শরিক দলের শীর্ষনেতার বৈঠক চলেছিল। তাতেই তাঁদের সম্পর্কের ভীত আরও মজবুত হয়েছিল। এবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে তৃণমূলের সাথে দেখা গেলো সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতাকে। অখিলেশের মমতার সাথে মঞ্চ-ভাগ এবং অভিষেকের সাথে বিশেষ সৌজন্য বিনিময় সংসদে তুলতে পারে এনডিএ বিরোধী শক্তিশালী আওয়াজ, এমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল।