অভিষেক-কন্যাকে বিকৃত হুমকির জের, মিনাখাঁ থেকে গ্রেপ্তার এক যুবক

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে করা বিকৃত হুমকির বিরুদ্ধে এবার কড়া হলো পুলিশ-প্রশাসন। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ন’বছরের শিশুকন্যাকে কেউ ধর্ষণ করলে তাকে ১০ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল এক যুবককে। এমন বিকৃত হুমকি দেওয়ার জেরে উত্তর ২৪ পরগনার এক যুবককে এবার গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। এই বিষয়ে সোমবারই পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেছিল রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল কমিশনের তরফে।

এমনকি পুলিশের কাছে তাঁদের গ্রেফতারির দাবিও জানিয়েছিল কমিশন। রাজ্যের নানা থানায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের তরফে অভিযোগ দায়েরও শুরু হয় এদিন। ওই মন্তব্যের অভিযোগে মাসাদুল মোল্লা নামক মিনাখাঁর মঠবাড়ি এলাকার বাসিন্দা এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে দাবি, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া থেকে ঘটকপুকুর পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়ে মাসাদুল ওই মন্তব্য করেছিলেন। যদিও আইএসএফ-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘দলগত ভাবে আমরা এই ধরনের মন্তব্য সমর্থন করি না। যিনি এই মন্তব্য করেছেন, দায় তাঁর।’

কমিশন এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ভিডিওতে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করলে ১০ কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছিল একজনকে। এই প্রেক্ষিতে কমিশনের বক্তব্য, গোটা রাজ্যে একটি মর্মান্তিক ধর্ষণ ও খুনের আবহে আর একটি ধর্ষণের ডাক দেওয়ার মধ্যে সমাজের জন্য মারাত্মক বিপদ সঙ্কেত রয়েছে। এই ধরনের ভিডিওর কথাগুলি অন্য নাবালিকাদের জন্যও বিপজ্জনক। সেই সঙ্গে পকসো আইন, জুভেনাইল জাস্টিস আইন এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু অধিকার সংক্রান্ত চুক্তির ভিত্তিতে কমিশন এখনই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।


ওই মন্তব্য ‘উস্কানিমূলক’, দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সমাজমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে পূর্বেই লিখেছিলেন, ‘আপনাদের নোংরা কৌশলের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করুন। এবার আপনারা সব সীমা অতিক্রম করে ফেললেন। শিশুদের ভয় দেখানো বন্ধ করুন।’ এবার মুখ খুললেন রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘ভয়ঙ্কর ও চূড়ান্ত এক বিকৃত মানসকিতার প্রমাণ এটা। বিরোধীরা চুপ কেন? যেই বলে থাকুক, সে সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে।’