ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে বিপুল সংখ্যক বোমা উদ্ধার

শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর, ৪ মে— তৃতীয় দফায় ৭ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন৷ জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি এদিন ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনও হবে৷ বিধায়ক ইদ্রিশ আলির মৃতু্যতে এখানে উপনির্বাচন হচ্ছে৷ নির্বাচনের প্রায় ৭২ ঘণ্টা আগে দফায় দফায় উদ্ধার হল তাজা বোমা, যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর৷ শনিবার ডোমকল বিধানসভা কেন্দ্রের তিনটি জায়গা থেকে উদ্ধার হয় বিপুল সংখ্যক বোমা৷ এদিন রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খিদিরপাড়া গ্রামে জমির মধ্যে দু’ব্যাগ ভর্তি বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে খবর দেন থানায়৷ এই ঘটনার রেশ না কাটতেই এই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই শ্মশানঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার হয় ব্যাগ বোঝাই বোমা৷ এদিন রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি ঘোড়ামারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকেও উদ্ধার হয় তাজা বোমা৷ একই দিনে একই থানা এলাকার তিনটি জায়গা থেকে এত সংখ্যক বোমা উদ্ধারের ঘটনায় একদিকে চাঞ্চল্য এবং অন্যদিকে উত্তেজনা ছড়ায়৷ স্থানীয় মানুষদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে আতঙ্ক৷ খবর পাওয়া মাত্র তিনটি জায়গাতেই পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ৷ কে বা কারা বোমাগুলি রেখে গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ ডোমকল থানা এলাকার তিনটি জায়গা ছাড়াও জলঙ্গি থানা এলাকা থেকেও এদিন একইভাবে উদ্ধার করা হয় বোমা৷

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর৷ মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের জোটপ্রার্থী তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এত সংখ্যক তাজা বোমা উদ্ধারের পরে আমরা পুলিশ অবজারভারকে বলেছি, ডোমকল থানার আইসি নিজে এলাকার দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছে৷ আর আমাদের লোকজনর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে৷ আমরা চাই এলাকায় যাতে শান্তিতে ভোট হয়৷ সেজন্য যত বেআইনি বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, আমরা তা উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি৷’
এদিন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুর কেন্দ্রের জোট প্রার্তী অধীর চৌধুরিও৷ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে, তাদের সরিয়ে দিয়ে কেউ বুথ দখল করতে পারবে না৷ এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন৷ তাই বুথে যাতে মানুষ যেতে না পারে, বিরোধী দলের যে সমস্ত ভোটার তৃণমূল দলের কাছে, পুলিশের কাছে চিহ্নিত, তারা যাতে বুথ পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে, সেই বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে৷ আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করার জন্যই বোমা, পিস্তল, গুলি এখন থেকেই ব্যবহার করা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ তারই কিছু কিছু প্রকাশ পাচ্ছে৷’


এদিকে বিরোধী কংগ্রেস এবং সিপিএমের দাবি উড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার পাল্টা বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক৷ ফলে এই কেন্দ্রটির নির্বাচন নিয়ে আমরাও আতঙ্কিত৷ বিগত নির্বাচনগুলিতে এই কেন্দ্রের ডোমকল বিধানসভা সহ বিভিন্ন জায়গায় সিপিএমের হাতে বহু দক্ষিণপন্থী নেতা ও কর্মী খুন হয়েছেন৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণ হবে কিনা আমি জানি না৷ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের কাছে এই নির্দেশ ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে, তাঁরা যেন কোনওভাবেই কোনও প্ররোচনায় পা না দেন৷’