সন্দেশখালিতে তিন বিজেপি কর্মীর দোকানে আগুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, বসিরহাট: বাংলা নববর্ষের দিনেই সন্দেশখালিতে ফের উত্তেজনা। গতকাল গভীর রাতে  ভান্ডারখালি বাজারে তিনটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডে। তিন দোকানের মালিকই বিজেপি কর্মী। ফলে এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বিজেপি-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাতের অন্ধকারে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই তিন দোকানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র। যদিও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।

প্রসঙ্গত গত প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্য জুড়ে চলছে বিতর্ক। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেপ্তারের পর উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্র ধরে শেখ শাহজাহানের নাম উঠে আসে। চাল চুরি নিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই রেশন দুর্নীতির তদন্তে গত ৫ জানুয়ারি প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। কিন্তু শেখ শাহজাহানের অনুগামী গ্রামবাসীরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্মীদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করে। জনরোষে ফেটে পড়ে গোটা এলাকা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ওপর হামলা চালায় কয়েকজন বিক্ষুব্ধ জনতা। আহত হন বেশ কয়েকজন ইডি আধিকারিক। তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও আক্রান্ত হন।

এরপর সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান ও তার শাগরেদদের অত্যাচারের অভিযোগে সরব হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। একের পর এক শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন তাঁরা। সেই জল অনেক দূর গড়ায়। অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয় শেখ শাহজাহান ও তার ঘনিষ্ঠ নেতাদের। এমনকি দুর্নীতির অভিযোগে শেখ শাহজাহানের ভাইকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় বর্তমানে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআই।


এরই মধ্যে ঘোষণা হয়েছে লোকসভা ভোট। সেই ভোট প্রচারের আবহের মধ্যেই এবার সন্দেশখালির ভাণ্ডারখালি বাজারে তিন বিজেপি কর্মীর দোকানে আগুনের ঘটনায় রাজনৈতিক বিতর্কের পারদ যথেষ্ট ঊর্ধ্বমুখী।