নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মঙ্গলবার সংসদে পেশ হওয়া ২০২৪-২৫ বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পাশাপাশি তাঁর বার্তা, উত্তরবঙ্গ যেন এই বাজেটকে মনে রাখে৷ নির্বাচনী প্রচারের সময় বিজেপি অনেক কথা বললেও বাজেটে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনা করা হয়েছে, মঙ্গলবার বাজেট পেশের পর এই অভিযোগই করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার কেন্দ্রের বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য ঢালাও প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছে৷
এনিয়েও এদিন কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এছাড়াও ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়েও বাজেটে কোনও দিশা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন মমতা৷ কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা পায় রাজ্য৷ তা সত্ত্বেও বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে৷ এনিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি৷ এই বাজেটে চাকরির কোনও সংস্থান না থাকায় কটাক্ষ করেছেন মমতা৷ বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাতে বঞ্চিত করা হয়েছে৷ বাংলা কারও দয়া চায় না৷ কিন্ত্ত বাংলার সম্মান বিঘ্নিত হলে মানুষ কিন্ত্ত গর্জন করবে, ছেড়ে কথা বলবে না৷ ’
এবারের বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য ব্যাপক বরাদ্দ হবে বলে আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল৷ উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি৷ তাই কেন্দ্রে সরকার গড়তে বিজেপিকে সাহায্য করেছিল এই দুই রাজ্যের শাসকদল ৷
স্পিকার পদ বা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব কিছুই পায়নি বিহারের নীতীশ কুমারের জেডিইউ কিংবা অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)৷ তাই বাজেটে তাঁদের দুহাত ভরে দেবে কেন্দ্র- এই আশা আগে থেকেই ছিল৷ এপ্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘আমি এরকম কখনও দেখিনি, একটা সরকার শেয়ারের টাকা দিয়ে, শেয়ার স্ক্যাম করে আর আর্থিক প্যাকেজ করে, কেবল অর্থ দিয়ে, মন্ত্রক না দিয়ে, স্পিকারপদ না দিয়ে, বৈষম্য তৈরি করছে৷ অন্ধ্র, বিহারকে টাকা দিয়েছে, ঠিক আছে৷ কিন্ত্ত বৈষম্য তৈরি করা ঠিক নয়৷’
উত্তরবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে এদিন মমতা বলেন, ‘ভোটের সময়ে ওরা বড় বড় কথা বলেছিল৷ ভোটের পর দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াংকে ভুলে যায়৷ এটাই ওদের ধরন৷ দার্জিলিং যেন এই বাজেটকে মনে রাখে৷ সিকিম পাক, কিন্ত্ত দার্জিলিংকে কেন বঞ্চনা?’
এছাড়াও মমতা, ‘১০০ দিনের কাজের টাকার কোনও হদিশ নেই বাজেটে৷ বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ৷ সেই দেশের প্রায় সমান ভোটার কিন্ত্ত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে৷ এই রাজ্যকে তা-ও বঞ্চনা করা হচ্ছে৷’
মঙ্গলবারের বাজেটে সোনা, রুপো এবং প্ল্যাটিনামের মতো ধাতুর কর হ্রাস করা হয়েছে৷ এপ্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘মেয়েরা সোনা-রুপো পরুক৷ কিন্ত্ত সাধারণ ঘরের মেয়েদের জন্য তো এটা নয়৷ খাদ্যের উপর কোনও ভর্তুকি নেই কেন? আগের বারও জিরের উপর কর ছিল, হিরের উপর ছিল না৷ আসলে এই বাজেট গরিবের দিকে ফিরে না তাকানোর বাজেট৷ যাদের অনেক আছে তাঁরা এই বাজেটের মাধ্যমে আরও পাবে৷ কিন্ত্ত যাদের নেই তাঁরা কিছুই পাবে না৷ এটি দিশাহীন, জনগণবিরোধী বাজেট৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করাই এই বাজেটের একমাত্র উদ্দেশ্য৷ এটি অন্ধকার বাজেট৷’