আরজিকর-এ ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার ২৫

১৪ অগস্ট বুধের মধ্যরাতে ‘মেয়েদের রাত দখল’-এর মাঝেই আরজিকর হাসপাতালে চালানো হয়েছিল তান্ডব। সেই অপকর্মে ছিল অগণিত দুষ্কৃতী। এই ভাঙচুরের ঘটনায় ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় পরে আরও ৬ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ফলে মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ জন।

প্রসঙ্গত শুক্রবার সকালে কলকাতা পুলিশের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করা হয়। ওই পোস্টে লালবাজারের তরফে জানানো হয়, এই ভাঙচুরের ঘটনায় ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ১৯ জনের মধ্যে পাঁচজন হামলাকারীকে সমাজমাধ্যমের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা একেবারে অক্ষরে অক্ষরে পালন করল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু কিভাবে? আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে বুধবার মধ্যরাতে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিলেন অভিষেক। তিনি বুধের রাতেই দাবি করেছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপরাধীদের খুঁজে বার করতে হবে পুলিশকে। বুধের রাতে অভিষেক তড়িঘড়ি কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে কথা বলেন। সেই সময়ই কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে অভিষেক জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক রং না দেখে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দ্রুত দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে। সেই মতোই কাজ করেছে কলকাতা পুলিশ। অভিষেক-বার্তাকে মান্যতা দিয়েই তৎপর হয়েছিলেন বিনীত গোয়েল।

উল্লেখ্য, বুধের মধ্যরাতে আরজিকর-এ হঠাৎই হামলা এবং ভাঙচুর চালানো হয়। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের একটি সূত্র মারফত জানা যায়, কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল নিজেই জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁদের। লালবাজারের তরফে তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রুজু করা হয়। আরজিকর হাসপাতালে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েকজনের ছবি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার সকালে ‘সন্ধান চাই’ বিজ্ঞপ্তি দেয় কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের সমাজমাধ্যমের পাতায় ওই অশান্তির ঘটনার ৫০টিরও বেশি ছবি প্রকাশ করা হয়। তাতে বেশ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলাকে লাল রঙের গোলাকার দাগে চিহ্নিত করে তাঁদের সন্ধান চায় পুলিশ। শুক্রবারও কয়েকজনের ছবি পোস্ট করে কলকাতা পুলিশের এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে লেখা হয়েছে, “১৯ জন দুষ্কৃতীদের ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। যদি আপনারা আমাদের আগের পোস্ট থেকে কোনও অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে পারেন, তবে দয়া করে আমাদের জানান।”


অন্যদিকে, বুধে ‘রাত দখলের’ কর্মসূচির মধ্যেই আরজিকর-এর ঘটনায় কলকাতা জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। খবর পেতেই তৎপর হন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতেই তিনি ফোন করেন বিনীত গোয়েলকে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে এক্স হ্যান্ডেলে অভিষেক ওই রাতেই লেখেন, “আরজিকর-এ যে গুন্ডামি হল, তা সব মাত্রা ছাড়িয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়, সেই আর্জি জানিয়েছি। তাদের রাজনৈতিক যোগ যা-ই হোক না কেন। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি ন্যায্য। সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাওয়া তাঁদের ন্যূনতম দাবি। এটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।” এরপর অভিষেকের বার্তা পেতেই আরও তৎপর হয় কর্তব্যরত কলকাতা পুলিশ।

উল্লেখ্য, পূর্বেই কোনও রাজনীতির রঙ না দেখে আরজিকর কাণ্ডে অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি দেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন অভিষেক। এবারও নিজ অবস্থানে অটল থেকে সেই বার্তাই দিলেন।