দিল্লি, ১১ জুন– গত ৯ জুন রবিবার তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে শপথ নিয়েছেন মোদির নতুন মন্ত্রিসভার সমস্ত সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পূর্ণমন্ত্রী, স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এমনকি প্রতিমন্ত্রীরাও। মন্ত্রিসভা গঠন ও বিভিন্ন দফতর বন্টনের সিংহভাগ কাজ হয়ে গেলেও বাকি রয়েছে আরও বেশ কিছু সাংবিধানিক পদক্ষেপ। কারণ, এখনও বাকি সাংসদদের শপথ গ্রহণ এবং স্পিকার নির্বাচনের কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। সেজন্য আগামী ২৪ জুন শুরু হতে চলেছে অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন। শেষ হবে ৩ জুলাই। অষ্টাদশ লোকসভার ৮ দিনের বিশেষ অধিবেশনে এই কাজগুলি সম্পন্ন হবে বলে সূত্রের মারফত জানা গিয়েছে।
তবে মোদী সরকারের পক্ষে এই পর্যায়টিতে এখনও যথেষ্ট কাঁটা বিছানো রয়েছে। কারণ ১৬ সাংসদের শরিক দল টিডিপি একাধিক দফতর পেলেও খুশি নন দলের প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু। তিনি স্পিকার পদটি তাঁর দলকে ছাড়ার জন্য মোদীর কাছে জেদ ধরে বসে আছেন। এমনকি তাঁর দলের নেতা কে রামমোহন নাইডুকে বিমান মন্ত্রকের দায়িত্ব দিলেও স্পিকার পদের দাবি থেকে সরানো যাচ্ছে না চন্দ্রবাবুকে। এই সমস্যার সমাধানে একটি বিশেষ কৌশল নিয়েছে বিজেপি। তাঁর শ্যালিকা ডি পুরন্দেশ্বরীকে স্পিকার করার জল্পনা উস্কে দিয়েছে। চন্দ্রবাবুকে এই শ্যালিকা অস্ত্রে বধ করতে চাইছে গেরুয়া বাহিনী।
যদিও ডি পুরন্দেশ্বরী টিডিপি করেন না। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ বিজেপি-র রাজ্য সভানেত্রী। তবুও শ্যালিকাকে স্পিকার করলে জামাইবাবু চন্দ্রবাবুকে শান্ত করা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। এদিকে কংগ্রেস চন্দ্রবাবুকে পাল্টা টোপ দিয়ে রেখেছে। হাত শিবির জানিয়েছে, চন্দ্রবাবুর দল টিডিপি স্পিকার পদে প্রার্থী দিলে তাঁকে সমর্থন দেবে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, ২৪ জুন অষ্টাদশ লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ২৬ জুন স্পিকার নির্বাচন করা হবে।
এদিকে এই পদটির দিকে নজর রয়েছে আর এক শরিক জেডিইউ প্রধান নীতীশকুমারেরও। ফলে অধিবেশন শুরুর প্রথম ও দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৪ ও ২৫ জুন শপথ গ্রহণের পর তৃতীয় মোদি সরকারের এনডিএ শরিক নির্ভর জোট রাজনীতির জল কোনদিকে গড়ায়, তার দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশবাসী। কারণ, এবারের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দেশের একক বৃহত্তম দল হলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। মাত্র ২৪০ আসনে থেমে গিয়েছে বিজেপি-র বিজয় রথ। আর এনডিএ-এর ঝুলিতে রয়েছে এই মুহূর্তে ২৯২টি আসন। তার মধ্যে প্রধান দুই শরিক দল টিডিপি ও জেডিইউ পেয়েছে যথাক্রমে ১২ ও ১৬টি আসন। অর্থাৎ এই দুই দলের ২৮টি আসনের সমর্থন এনডিএ থেকে বেরিয়ে গেলে তৃতীয় মোদী সরকারের পতন অনিবার্য।