• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বেলাগাম ওষুধের দাম! দায়ী ইলেক্টোরাল বন্ড

নিজস্ব প্রতিনিধি – পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের সাথেই তাল মিলিয়ে বাড়ছে ওষুধপত্রের দাম৷ প্যারাসিটামল থেকে ফেনোবার্বিটন সব ওষুধেরই চড়া দাম চিন্তা বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের৷ তবে কেন বাড়ছে এই দাম? উত্তর একটাই, ইলেক্টোরাল বন্ড৷ নির্বাচন দোরগোড়ায়৷ এরই মধ্যে ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে তৈরী হয়েছে নতুন জল্পনা৷ ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে যে টাকা রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে

নিজস্ব প্রতিনিধি – পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের সাথেই তাল মিলিয়ে বাড়ছে ওষুধপত্রের দাম৷ প্যারাসিটামল থেকে ফেনোবার্বিটন সব ওষুধেরই চড়া দাম চিন্তা বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের৷ তবে কেন বাড়ছে এই দাম? উত্তর একটাই, ইলেক্টোরাল বন্ড৷ নির্বাচন দোরগোড়ায়৷ এরই মধ্যে ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে তৈরী হয়েছে নতুন জল্পনা৷ ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে যে টাকা রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে যেসব সংস্থা ২০ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে, তাদের নামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ সেই তালিকায় রয়েছে এক নয়, দুই নয়, ৩৫ টি ফার্মা সংস্থার নাম৷ ওষুধ কোম্পানির মধ্যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ডক্টর রেড্ডিজ, দ্বিতীয় স্থানে টরেন্ট ফার্মা এবং তিনে ন্যাটকো ফার্মা৷ এছাড়াও রয়েছে সানফার্মা থেকে সিপলা, ম্যানকাইন্ড থেকে অরবিন্দ ফার্মা– বাদ নেই কোনো বৃহৎ কোম্পানিই৷ এরমধ্যে ডক্টর রেড্ডিস এবং টরেন্ট ফার্মা প্রায় ৮০ কোটির কাছাকাছি দামের বন্ড কিনেছে৷ এ বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নকল্পে যত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, এই নির্বাচনী চাঁদার পরিমাণ তার অর্ধেকের বেশি৷

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ওষুধের দাম বাড়ানোর ছাড়পত্র পাওয়া এই সংস্থাগুলোর কাছে জরুরি৷ ২০১৩ সালের ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার অনুসারে, গত অর্থবর্ষের পাইকারি মূল্যসূচকের স্ফীতি বা হ্রাসের উপর নির্ভর করে শিডিউলড বা তফসিলভুক্ত ওষুধের দাম বাডে়-কমে৷ সাধারণ দোকান থেকে যাঁদেরই নিয়মিত ওষুধ কিনতে হয়, তাঁরা জানেন সাম্প্রতিক কালে বহু জীবনদায়ী ওষুধের দাম ব্যাপক হরে বেড়েছে৷ চলতি বছরে ২৬ শে মার্চ ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি বা এনপিপিএ -র তরফে ওষুধের দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়৷ বলা হয়, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাইকারি মূল্য সূচকের সঙ্গে সংযুক্ত ন্যাশনাল লিস্ট অফ এসেনশিয়্যাল ড্রাগস বা অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় থাকা ওষুধের দামও বাড়বে৷ সহজ ভাষায়, ২০২২-২৩ আর্থিক বর্ষে ওষুধের দাম বেড়েছিল ১০ শতাংশ এবং ২০২৩-২৪ সালে ওষুধের দাম বৃদ্ধির হার ছিল ১২ শতাংশ৷ আর এই বাড়তি বোঝা বহন করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই৷

একদিকে ইলেক্টোরাল বন্ড, অন্যদিকে ফার্মা কোম্পানিগুলির ডাক্তারদের পোষণ আর এসবের মাসুল গুনতে হয় সাধারণ মানুষকে৷ ওষুধ যে মানুষের জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ প্যারাসিটামল, ডায়াবেটিসের ওষুধ, হৃদরোগের ওষুধ, একাধিক এন্টিবায়োটিক থেকে সাধারণ উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, গ্যাসট্রিক ইত্যাদির ওষুধেরও দাম বেড়েছে৷ চলতি মাসের ১ তারিখ থেকেই দাম বেড়েছে ৮০০ টি জরুরি ওষুধের৷ ইলেক্টোরাল বন্ডের এই কুপ্রভাব গ্রামবাংলার মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ উচ্চবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত মানুষেরাই কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন ফার্মেসিতে গিয়ে, সেক্ষেত্রে নিম্নবিত্ত মানুষ রইলেন বাদের খাতায়৷ তবে কবে কমবে এই ওষুধের দাম? নির্বাচনের পর? তা নিয়ে এখনও রয়েছে ধোঁয়াশা৷ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে বারংবার সরব হয়েছে, এর কুপ্রভাবকে তুলে ধরেছে, এমনকি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানিয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী অর্থনীতিবিদ পরকালা প্রভাকর বলেছেন, “এটি (ইলেক্টোরাল বন্ড) কেবল ভারতের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি৷ ” যদিও এ প্রসঙ্গে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই বঙ্গীয় বিজেপি৷ বঙ্গীয় গেরুয়া শিবিরের দিকে বারংবার এ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হলেও তারা উত্তর দিতে নারাজ৷ কবে সাধারণ মানুষ ন্যায্য মূল্যে ওষুধপত্র কিনতে পারবেন তার উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়৷