এপিটাফে লিখে রাখেন অমরত্বের গান

মোস্তাক আহমেদ

চারদিকে অবরুদ্ধ বাতাস, মৃত যৌনতার জোনাকি মরিচিকা। শীতল শ্যাওলা-জন্ম। ঘর খোঁজে প্রবেশের পথ। পথ বলে চিহ্ন রেখে কী লাভ! নিয়মের হাতুড়ি গর্জায়, রোমান্টিকতা ভেঙে চুর চুর। কমল চক্রবর্তী তখন বারোজের ‘কাটআপ মেথড’, জলজ কোলাজ। দিশাহীন আলোহীন এ জোনাকিযাপন। সকল প্রচলকে তুড়ি মারার দুঃসাহস তাঁর সহজাত। সেখানে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্রাট। শব্দ তাঁর খ্যাপামোর দোসর, আদরের দুলাল। বাক্য যেখানে খুশি থেমে যেতে পারে। যেখানে থামার নয়! বিষয়হীন বিষয় তুলে আনেন অনায়াস অববোধে। ব্যাকরণ তিনি নির্মাণ করেন। না-ব্যাকরণের পথ বেয়ে সেখানে তাঁর সিদ্ধি। মূর্ত-বিমূর্ত ভাবনা একাকার হয়। গভীর অন্ধকার থেকে তুলে আনেন একমুঠো সাদা রোদ— উজ্জ্বল, মেদহীন। সোঁদা মাটিতে ছড়িয়ে দেন প্রিয়জনের গন্ধ। প্রকৃতি, মানুষ মেতে ওঠে সম্পর্কের প্রগাঢ়তায়। খুলে যায় সব চেনা প্রতিরোধ। খোলা মাঠ, জলছবি চেয়ে থাকে ঘুমের ভেতর। ক্যাকটাস থেকে ঝরে পড়ে জল। অবিরাম। চারদিকে সবুজের অকৃত্রিম হাতছানি। চরাচর জুড়ে স্বাভাবিক বিশুদ্ধির অতল সুর। এক একটি লেখার আশ্চর্য জন্ম ঘটে। বিস্মিত পাঠক মৌন আবেশে ডুবে যায়। চেটেপুটে নেয় অনন্তের স্বাদ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে যখন আমরা জানতে শুরু করি, তখন অনেক স্তরগত ভাবনা পরম্পরার মধ্যে একটা বিষয়ে বেশ বিস্ময় জন্মায় যে, চেনা ভূগোলের সীমাকে তিনি কী অনায়াসে অতিক্রম করে যাচ্ছেন! এই অতিক্রমের আবহে তিনি ইতিহাসকে ব্যবহার করেছেন। কমল চক্রবর্তীকে পড়তে পড়তে বারবার সেই অনুভূতিরই অনুরণন তৈরি হয় ভেতরে ভেতরে। অথচ তাঁর লেখালেখির ভূগোল তো চেনা সীমানার বাইরে খুব একটা বেরোয়নি। তাহলে এরকম মনে হওয়ার কারণ কী? আসলে লেখালেখির প্রেক্ষাপট চেনা হলেও ভাবনায় আছে আন্তর্জাতিক স্বর, আলবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি, শিকড় চেনা হলেও তাঁর জীবন দেখার অভিজ্ঞতা ভিন্নতর ও কোনোরকম গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়। ‘চার নম্বর ফার্নেস চার্জড’ থেকে ‘কমলের মৃত্যু’ কিংবা ‘আমার পাপ’ থেকে ‘কমল চক্কোত্তির শাদ্ধের পুন্ন পতিবেদন’ এবং আরও অনেক অনেক লেখা আমাদের সেসব অনুভূতিতেই জারিত করবে। আবহে জেগে থাকবে পুরাণ, মিথ, আঞ্চলিকতা, প্রকৃতি আর অনন্য বলার ঢং।


যে-কোনো ধরনের রেনেসাঁর একটা বড়ো বিশেষত্ব হল মুক্ত ভাবনার প্রকাশ। রেনেসাঁ সব সময় খুব বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে আসে এমনটা মনে হয় না। ব্যক্তি মানুষ ছোটো ছোটো পদক্ষেপেও রেনেসাঁ নিয়ে আসেন। নিজে বিবর্তিত হন। বিবর্তনের আলো ছড়ান চারপাশে। কমল রেনেসাঁর বাহক, রেনেসাঁর সমর্থক। এ তাঁর ভেতরের জারণ। খুব সহজেই তাই তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে নিজের মত প্রকাশ করেন, করতে পারেন। বহুভাবে জীবনকে ছেনে দেখার অভিজ্ঞতা তাঁর সম্পদ। ভানুমতির খেল্‌ সেই অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকেই নির্মিত হয়। তাঁর লেখা তাই ভীষণ বিশ্বাসযোগ্য। বানানো নয়, নির্মাণ। সমস্ত ‘ভার্চুয়াল’ বলেছে ভেঙে ফেলো— ভেঙে ফেলো যা কিছু বানানো— বানানো, কেননা সে জন্মায়নি। নীল সাগরের জলে উথাল-পাথাল ঢেউ। পদ্ম দুলে চলেছে তবু নির্ভয়। যতই জড়াও তাকে বিষ আলিঙ্গনে, জলে ধুয়ে যায় অকারণ সঞ্চয়।

আপাতভাবে তাঁর লেখা শৃঙ্খলাহীন মনে হলেও আদপে সেগুলি সুস্পষ্ট অভিপ্রেত ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ফসল। তাঁর লেখা পড়তে গেলে তাই পাঠককে একটা প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সীমাহীন সুতো পাঠককে বেঁধে রাখে অতঃপর। এক ধরনের নাটকীয়তা আছে তাঁর বলবার ঢঙে, যা পাঠককে হঠাৎ ঝাঁকুনি দেয়। ভাষার সংকেতময় ও সচেতন ব্যবহারে সে ঝাঁকুনি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে, স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে প্রতিষ্ঠিত। কমলের ব্যক্তিগত দর্শনচেতনা, স্বপ্ন-অভিপ্রায়ের বীজ লুকিয়ে আছে লেখার ভাঁজে ভাঁজে। কখনো কখনো দু-একটা আঁচড়ে তা চরমকে ছুঁয়েছে। তাঁর লেখায় পড়াশুনোর পরিধিও টের পাওয়া যায়, সেখানে তিনি ঈর্ষণীয়।

কমল চক্রবর্তী একাধারে সাহিত্যিক, সম্পাদক, সমাজসেবক। ‘ভালোপাহাড়’-এ তিনি বিঘের পর বিঘে জমিতে লাগিয়েছেন কয়েক লক্ষ গাছ। পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে তৈরি করেছেন স্কুল। তাদের পড়াশুনোর সমস্ত ব্যবস্থা করেছেন বিনামূল্যে। পাশে থেকেছেন দৈনন্দিন যাপনে— কখনো খাদ্য, কখনো পোশাক-আশাক, কখনো বা ঔষধপত্র পৌঁছে দিয়ে। ‘ভালোপাহাড়’-এই একটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। পাশাপাশি পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময় ধরে প্রকাশ করেছেন ‘কৌরব’ পত্রিকা। বাংলা লিটল মাগ্যাজিনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। এতকিছুর মাঝেও লেখালেখিকে কখনো দূরে সরিয়ে রাখেননি। বরং তাঁর গদ্য চিনিয়ে দেয় তাঁর স্বাতন্ত্র্য। বিদ্যাসাগরের মতো তাঁর লেখাও মূলত কর্মজীবনের প্রক্ষেপ। তাঁর সঙ্গত কারণও আছে। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন, তাঁর জীবনে দু-জন ঈশ্বর— বৃক্ষ আর বিদ্যাসাগর। এই দুই ঈশ্বরকে ঘিরে তাঁর নানা আয়োজন ও সাহসী পথ চলা।

৩০ ডিসেম্বর ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে কবি কমল চক্রবর্তীর জন্ম। মামাবাড়িতে। অধুনা বাংলাদেশের বিক্রমপুরের কাটিয়াপাড়ায়। নিজেদের বাড়ি ছিল বিক্রমপুরের কামারগাঁও। জন্মের সময় সমস্ত বাংলা ছিল দুর্ভিক্ষ পীড়িত। আত্মীয়স্বজনেরা কমল চক্রবর্তীকে বলতেন ‘দুর্ভিক্ষের ছেলে’। ডাকনাম ছিল উজ্জ্বল, খোকন। লেখার ক্ষেত্রে অনেক সময় ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন— কখনো নিতাই ধর, কখনো মানিক দাশগুপ্ত বা অরিন্দম দাশগুপ্ত কিংবা ঈষৎ মুখোপাধ্যায়। স্কুলে ভর্তির সময় মাস্টারমশাইয়ের বদান্যতায় নতুন জন্মতারিখ হয় ৭ জানুয়ারি ১৯৪৬। বাবা জিতেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্তী ছিলেন টাটা স্টিল ট্র্যান্সপোর্টের ফোরম্যান। মা মায়া রাণী দেবী। ঠাকুরদা গিরিশচন্দ্র চক্রবর্তী। দাদু অমূল্যচন্দ্র চক্রবর্তী। কবিরা তিন ভাই, চার বোন। সকলের বড়ো কমল চক্রবর্তী।

১৯৬৮-তে টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি লিমিটেড, জামশেদপুরে ইনস্পেক্টর পদে যোগ দেন। এ বছর অক্টোবরে গড়ে ওঠে ‘কবিগোষ্ঠী কৌরব’। ১৯৬৯ সালের ১২ জানুয়ারি কমল চক্রবর্তীর লেখা ‘সূর্যের বুকে ফসিলের নীড়’ নাটকটি অভিনীত হয়। এই প্রেক্ষিতে একটা মুখপত্র বার করার সিদ্ধান্ত হয়, যার নাম হয় ‘কৌরব’। ১৯৭০-এর মে মাসে প্রকাশ পায় কৌরব প্রকাশনীর প্রথম কবিতার বই। সবুজ মলাটে। সঙ্গে নিমাই দত্তের কালো নামাঙ্কন ‘কৌরব’। কবিতার সংকলন। সম্পাদক: সুভাষ ভট্টাচার্য, বারীন ঘোষাল, কমল চক্রবর্তী ও অরুণ আইন। দাম: দু-টাকা। সংকলনের কবিরা হলেন স্বদেশ সেন, নিমাই দত্ত, সমীর মজুমদার, ভূষণ গোপ, দেবজ্যোতি দত্ত, সুভাষ ভট্টাচার্য, বারীন ঘোষাল, বাসুদেব নন্দী, কমল চক্রবর্তী, শক্তিপদ হালদার ও অরুণ আইন।
১৯৭১-এর জুলাই মাসে বের হয় কমল চক্রবর্তীর প্রথম কবিতার বই ‘চার নম্বর ফার্নেস চার্জড’। সেপ্টেম্বরে ‘মহিষ’ নামে পত্রিকা প্রকাশ পায় ‘কৌরব’ তত্ত্বাবধানে। সম্পাদক এবং প্রকাশক: সুভাষ ভট্টাচার্য। কমল চক্রবর্তীর কবিতা ও গদ্য ছাপা হয়। ডিসেম্বরে প্রকাশ পায় দ্বিতীয় সংখ্যা ‘যীশু ফিরে আসছেন রাত ১২টা’। এই সংখ্যায় কমল চক্রবর্তীর গদ্য প্রকাশ পায়। মার্চে ‘প্রতিবিম্বের কাছে কৈফিয়ৎ’ নামে পত্রিকার তৃতীয় সংখ্যা বের হয়। ‘চার নম্বর ফার্নেস চার্জড’-এর পাণ্ডুলিপি থেকে চারটি কবিতা ছাপা হয়। জুলাই-এ ‘গুড বাই মিলি’ নামে পত্রিকার চতুর্থ সংখ্যা প্রকাশ পায়। দ্বিতীয় বর্ষ শারদ সংখ্যা ১৩৭৯/সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৭২ সংখ্যা থেকে পত্রিকার নাম হয় ‘কৌরব’।

১৯৭৮ সালে রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাইভেটে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে ‘বিভাব’ পত্রিকার পক্ষ থেকে ‘কৌরব’ পত্রিকাকে শ্রেষ্ঠ লিটল ম্যাগাজিন হিসাবে ডি কে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। পুরস্কার তুলে দেন অন্নদাশঙ্কর রায়। ১৯৯৬-এ ভালোপাহাড়ের জন্য প্রথম জমি কেনা হয়। ভালোপাহাড়ের জন্মদিন পালন শুরু হয়

১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭-এ। প্রতি বছর আয়োজিত হতে থাকে ফুটবল টুর্নামেন্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চালু ছিল ২০০৪ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৭ সালেই ‘ব্রহ্মভার্গব পুরাণ’ উপন্যাসের জন্য ‘ঋত্বিক’ পুরস্কার পান। আর ১৯৯৮ সালে গদ্যের জন্য ‘সাহিত্য সেতু’ পুরস্কার। এ বছরই শুরু হয় ভুবনমেলা। ৩০, ৩১ ডিসেম্বর ও পরের নতুন বছরের ১ জানুয়ারি। চালু ছিল ২০০৩ সাল পর্যন্ত।

১৯৯৯ সালে ছোটোগল্পের জন্য ‘মহাপৃথিবী’ পুরস্কার পান। টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি লিমিটেড, জামশেদপুরের প্ল্যানিং ডিপার্টমেন্ট থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন ২০০০ সালে। ভালোপাহাড়ে মাছচাষ শুরু করেন। ২০০২ সালে কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র ‘কৌরব’ পত্রিকাকে শ্রেষ্ঠ লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার প্রদান করে। ২০০৩-এ শুরু হয় পলাশমেলা। দোলের সপ্তাহে শনি ও রবিবার। ২০০৪ সালে ভালোপাহাড় স্কুল শুরু হয়। পশুপালন কেন্দ্রের উদ্বোধন হয় ২০০৬-এ। ২০০৭-এ ভালোপাহাড় স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হয়। ২০০৮ সালে ‘দি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকা ভালোপাহাড় স্কুলকে ‘বেস্ট কেয়ারিং স্কুল’ পুরস্কার প্রদান করে। এইসময় ভূগোলের মাস্টারমশাই সৌম্যজিৎ বসুর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে মাওবাদী সন্দেহে পুলিশি হেনস্থার শিকার হন।
২০১২ সালে ‘ব্রহ্মভার্গব পুরাণ’ উপন্যাসের জন্য ‘বঙ্কিম’ পুরস্কার পান। শুরু হয় ঈশ্বরমেলা। ২৬ সেপ্টেম্বরকে ঘিরে চলে ২-৩ দিন। ২০১৩ সালে মতি নন্দী স্মৃতিরক্ষা কমিটি ‘মতি নন্দী’ পুরস্কার প্রদান করে। ২০১৭ সালে সুথল কোম্পানি সামাজিক সামগ্রিক অবদানের জন্য ‘পথিকৃৎ’ পুরস্কার দেয়, ভালোপাহাড়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘প্রজ্যাবরণ’ পুরস্কার অর্পণ করে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোম সায়েন্স বিভাগ দেয় ‘প্রকৃতি’ পুরস্কার।

এ হেন বর্ণময় চরিত্র কমল চক্রবর্তী। তাঁর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা তেরো, প্রকাশিত-অপ্রকাশিত নাটকের সংখ্যা কুড়ি। উপন্যাস ও নভেলেট লেখেছেন ত্রিশটিরও বেশি। ছোটোগল্প লিখেছেন প্রায় দেড়শোটি। এক ডজনের উপর গদ্যগ্রন্থ। পনেরোটির কাছাকাছি সম্পাদনা করেছেন নানা আঙ্গিকের বই। আর আছে ‘কৌরব’সহ নানা পত্রিকা সম্পাদনার অভিজ্ঞতা। তাঁর লেখায় আমরা মুগ্ধ। তাঁর ব্যক্তিত্বে আমরা আবেশিত। তাঁকে কেন্দ্র করে আমাদের কত উত্তেজনা, আবেগ— পৃথিবী জয় করবার দুর্জয় সাহস! সত্যিই কি তিনি চলে গেলেন! এমনটা কি হতে পারে!

তাঁর লেখার সংগ্রহ কত খণ্ডে শেষ হবে জানি না। আশি বছর বয়সেও তিনি ছিলেন তরুণ তুর্কী। নতুন নতুন লেখার স্বাদে আমরা প্রতিনিয়ত আহ্লাদে মেতে উঠতাম। ভালোপাহাড়ের টেবিলে এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে বইপত্র, কাগজ, অসম্পূর্ণ পাণ্ডুলিপি। রেডিওটা পড়ে আছে ছদ্ম অভিমানে। ওরা এখনও বিশ্বাস করে কমল চক্রবর্তী ফিরে এসে বসবেন যে-কোনো সময়। গাছগুলো ভাবে এই বুঝি আদরের বুড়ো এল— জড়িয়ে ধরবে চোখের জল আর আত্মিক অহংকারে। আর আমরা! কান্না লুকিয়ে তখন ছোট্ট পুকুরের পাশে গিয়ে বসব নীরব অভিসারে। ওখানেই তুমি সেরা লেখাটা লিখবে বলে বিছিয়ে দিয়েছ ক্যানভাস। ক্যানভাসে অমরত্বের রং— উজ্জ্বল, গাঢ়, বর্ণিল।